সেদিন হঠাৎ,এক অজানা পাখির দেখা মিললো আমার বারান্দায়
দেখে মনে হলো ঝড়ে পথ হারিয়ে এখানে এসে বসেছে।
ওকে দেখেই বোঝা যায়, সে খাঁচায় পোষমানা পাখি নয়
ঐ নীল আকাশে ডানা মেলে
বাতাসে উন্মাদনা সৃষ্টিকারী দের একজন।
পাখিটা একটু মাথা বাকা করে এই অপরিচিত স্থূলকায় মানুষটাকে দেখতে থাকলো,
জবাবে আমিও তাকিয়ে রইলাম ওর চোখের পানে।
এতদিন মনে হতো ফুল-ই জগতে সবচেয়ে সুন্দর
কিন্তু যুগ-যুগ ধরে চলে আসা ধারণা কিভাবে এক মুহূর্তে বদলে যায়
আজ ওকে দেখে তার অনুভূতি হলো।
চোখে চোখ রেখে একে অন্যকে বোঝার চেষ্টা চলছে,
কিন্তু মজার বিষয় কেউ কারো ভাষা জানে না!!!
আমার মনে হলো ওর হয়তো খিদে লেগেছে,
তাই একমুঠো চাল নিয়ে হাতটা এগিয়ে দিলাম
এই যা! হাত বাড়াতেই উড়ে গেল!!
বুঝলাম ভুল আমারই
যে চোখের ভাষা বুঝে না, সে কি আর হাতের ব্যঞ্জনা বুঝবে!!
সেদিন আর কোন ঝড় হলো না
ঝরের আগে মন পাগল করা কোন শীতল বাতাসের ছোয়াও মিললো না
কিন্তু যা পাবার, পেলাম পরের দিন
যখন ওকে আবার দেখলাম, আমার বারান্দায়।
আজ একটু অবাক না হয়ে উপায় ছিল না-
চোখের ভাষা বুঝে না যে পাখি, সে মনের ভাব কি করে পড়লো!!
কিভাবে জানলো সে? আমি যে এই অলস বিকেলে তারই অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছি।
আজ তাই লোভ জাগলো , মনে হলো আজ শিকলে বাধি ওর দুটো পা
যেন পালিয়ে না যায়
কিন্তু বিবেক যে বলে অন্য কথা,
পাখির স্থান ঐ বিশাল আকাশে
যেখানে নেই কোন বাধা, নেই কোথাও আটকা পরার ভয়
আছে শুধু অসীম স্বাধীনতা
কিন্তু তাকে একবার পোষ মানালে
সে যে ডানা মেলতেই ভুলে যাবে
ঊড়তে চাওয়াটা তখন হয়ে দাড়াবে বিলাসিতা
মুছে যাবে তার স্বাতন্ত্র্য।
তাই চাইলাম সে শুধু নীড় বাধুক আমার বারান্দায় ,
দিনের কোলাহল শেষে গোধূলি লগ্ন-তে যেন আবার কোন দিন আমাদের দেখা হয়।
এমনি সব উল্টো পালটা ভেবে চলেছি যখন
তখনই আবার ডানা মেলার শব্দ,
হয়তো আজ সে ফিরে যাচ্ছে তার আপন ঠিকানায়
শুধু ক্ষণিকের এই পরিচয়ে
আমাকে ফেলে গেল এক না বলা মায়ায়।।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২১