ক্যাম্পাসের কৃষ্ণচূড়ার নীচে হটাৎ দেখা,
জানতাম হবে একদিন।
তবে এখানেই যে, সেটা ভাবিনি কখনোই।
একসময় তাকে অনেক দেখেছি
খোলা চুল আর সাদা রঙের জামায়
কাঠগোলাপের মায়ায় মায়াবিনী।
আজ পড়েছ নীল শাড়ি
খোপায় নিয়েছে বেলীফুলের মালা
হাতে কাচের চুরি
আর সেই উদাস চোখের চাহনি।
মনে হলে গভীর এক একাকিত্ব ছড়িয়ে রেখেছে নিজের চারিদিকে,
যে একাকিত্ব নীড় হারা পাখির চোখে, স্মৃতি হারা পথিকের হৃদয়ে।
থমকে গেল আমার সাড়া দুনিয়া;
বনলতাকে দেখলাম উদ্যানলতার সাজে।
হটাৎ নীরবতা ভেঙ্গে আমাকে ডাকলে কাছে
করলে কুশল বিনিময়।
এত বছরের জমে থাকা বরফ গেল গলে, কথা হলো শুরু_ _ বললাম, "অনেক সুন্দর লাগছে তোমায়।"
সে রইলো আমার চোখের পানে চেয়ে,
সেই চিরচেনা উৎসুক চাহনিতে।
দিলে এক বিদ্রুপাত্মক হাসি,
মুখে কিছুই বললে না।
বুঝিয়ে দিলে দৃষ্টির নীরবতায়_ _
কেন এ-সব কথা
এর থেকে অনেক ভালো না-ই হতো দেখা।
আমি ছিলাম রাস্তায় দাঁড়িয়ে
ওরই পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে।
একসময়ে মাথা নেড়ে বললে পাশে বসতে।
মনে হলো কম সাহস তো নয়;
তাও বসলাম দুজনে একসাথে।
এত কোলাহলের আড়ালে
বললে মৃদুস্বরে,
"কিছু মনে করোনা,
আর সুযোগ কোথায় সুযোগ নষ্ট করার।
আমাকে ফিরতে হবে একটু পরেই;
হারিয়ে যাবে তুমি,
হয়তো দেখা পাব না আর কোনদিনই।
তাই যে প্রশ্নের উত্তরটা এত দিন ধরে খুজছি,
আজ শুনবো তোমার থেকে।
সত্যি করে বলবে তো?"
আমি বললাম,"বলো।"
রোদের আলোয় চোখ দুটো বন্ধ করেই বললো ,
"নিজেকে সড়িয়ে নিয়েছিলে যে দিন, নিতেই কি হতো?
আর কিছুই কি ছিল না করার?"
কিছুক্ষণ রইলাম চুপ করে;
তারপর বললাম,
"রাতের তারাকে তো নিভে যেতেই হয়,
দিনের আলোর আগমনে।"
খটকা লাগলো, কি জানি মিথা বললাম না তো।
ও বললো, " থাক, বাদ দাও, উঠি আজকে।"
সবাই চলে গেল খানিক বাদেই;
বসে রইলাম একা।