somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শুধু বাসে গণসম্ভ্রমহরণের বিষয় দেখলেই হবেনা ভাবতে হবে গণমানসে গণসম্ভ্রমহরণের গণঅর্ন্তভূক্তির সব বিষয়ও।

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতিবেশী দেশটিতে তোলপাড় হচ্ছে। একের পর এক তুলকালাম প্রতিবাদী কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন। পার্লামেন্টে হয়েছে উত্তপ্ত বিতর্ক। দিল্লির রাজপথে হয়েছে উত্তাল জনতার উন্মত্ত প্রতিবাদ। পুলিশকে ব্যবহার করতে হয়েছে কাদানে গ্যাস, পানি কামান। সব কিছুর মূলে হচ্ছে দিল্লির এক চলন্ত বাসে এক তরুণীর উপর গণসম্ভ্রমহরণের ঘটনা।
জানা গেছে, রোববার রাতে দিল্লির বসন্ত বিহার এলাকায় একটি হোয়াইট লাইন বাসে ২৩ বছরের এক তরুণীর সম্ভ্রমহরণ করে পাঁচ যুবক। তারপর ধর্ষিতা ও তার পুরুষ বন্ধুকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় একটি ওভারব্রিজের ওপর ফেলে দেয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে ভর্তি হয় ওই তরুণী। সে দক্ষিণ দিল্লির পালম এলাকার বাসিন্দা।
ধর্ষিতার এক আত্মীয়ের কথা অনুযায়ী, গত রোববার রাত ১১টা নাগাদ ওই তরুণী ও তার পুরুষ বন্ধু দক্ষিণ দিল্লির মুনিরকা একটি হোয়াইট লাইন বাসে উঠে। তারা বাসে ওঠার ১০ মিনিটের মাথায় পাঁচজন যুবক তরুণীকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। পুরষ বন্ধুটি বাধা দিলে তাকে মারধর করতে শুরু করে দুষ্কৃতিরা। ধর্ষিতার আত্মীয় জানিয়েছে, দুষ্কৃতিরা একটি লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করে যুবকটিকে। তারপর চলন্ত বাসের মধ্যেই তরুণীকে জোর করে বাসের কেবিনে টেনে নিয়ে গিয়ে সেখানেই পাঁচজনে মিলে সম্ভ্রমহরণ করে তাকে। দুষ্কর্মের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য দুজনেরই শরীর থেকে বেশির ভাগ জামাকাপড় খুলে নিয়ে দক্ষিণ দিল্লির মহিপালপুর ওভারব্রিজের উপর ছুঁড়ে ফেলে দেয় দুষ্কৃতীরা।
এ ঘটনায় নারী অধিকারবিষয়ক সংস্থাগুলো প্রতিবাদে রাজপথ উত্তপ্ত করে তুলেছে। মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ খুলেছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।
পরিস্থিতি দেখে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী নাখোশ। সে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল সিন্ধে ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতাকে কড়া ভাষায় চিঠি লিখেছে। তাতে এ ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছে। বলেছে, এ বিষয়ে ত্বরিত পদক্ষেপ নিতে। ওদিকে অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক ওমেন্স এসোসিয়েশন নয়া দিল্লিতে বিক্ষোভ করেছে। প্রতিবাদ হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরে ও বহুল আলোচিত যন্তরমন্তরে।
সোনিয়া গান্ধীর চিঠি পেয়ে গতকালই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল সিন্ধে ও দিল্লির পুলিশ কমিশনার নীরাজ কুমার বৈঠক করেছে। তারা বৈঠকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- সব বাস থেকে রঙিন গ্লাস সরিয়ে ফেলা হবে। পর্দাও সরিয়ে ফেলা হবে। সব বাসে এখন থেকে চালকদের মোবাইল ফোন নম্বর ও লাইসেন্স নম্বর মোটা হরফে লেখা থাকবে।
প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, প্রতিবেশী দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এহেন সিদ্ধান্তেই খুশি হবার কোনো কারণ নেই। কারণ দিল্লিতে চলন্ত বাসে এক যুবতীকে গণসম্ভ্রমহরণের পর ভারতে যখন ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে ঠিক তখনই প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছে উত্তর প্রদেশে। সেখানে মাও জেলায় একটি বাসস্ট্যান্ডে ৩৮ বছর বয়সী এক নারীর সম্ভ্রমহরণ করেছে তিন নরপিশাচ। মিডিয়ায় লেখালেখির কারণে দিল্লির ঘটনায় পুলিশ ত্বরিত পদক্ষেপ নিলেও উত্তর প্রদেশের ঘটনায় পুলিশ সম্ভ্রমহরণের মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। উল্টো তারা একটি যৌন নির্যাতন, নারী টিজিং ও চুরির অভিযোগ নিবন্ধিত করেছে।
দেখা যাচ্ছে, গণসম্ভ্রমলুটেরারা শুধু দিল্লিতে নয়, রয়েছে মাও প্রদেশেও। মূলত: প্রতিবেশী দেশটির সব প্রদেশেই। তাই এর মর্মমূলে ভাবতে হবে। শুধু আইন করে, ব্যবস্থা নিয়ে সাময়িক প্রতিকার পাওয়া যায়। কিন্তু যেখানে আইনের ফোকর থাকে অথবা ভিকটিম দুর্বল অবস্থায় থাকে অথবা মিডিয়ার সরব পদচারণা না থাকে সেখানে গণসম্ভ্রম লুটেরারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে যায়। ‘মাও’ প্রদেশে গণসম্ভ্রম লুটেরাদের বহাল-তবিয়ত তারই প্রমাণ।
প্রসঙ্গত, আমরা মনে করি, প্রতিবেশী দেশটির সংস্কৃতি চর্চার মধ্যেই রয়েছে মারাত্মক গলদ। কারণ তাদের সিনেমা-মুভি-নাট্যকলা তথা গোটা সংস্কৃতি চর্চাই মারাত্মক অশ্লীলতার উপর ভিত্তি করে চলছে। ওই দেশটিতে কত হাজার যে নায়ক-নায়িকা? তার কোন ইয়াত্তা নেই। এসবের কারণ হচ্ছে প্রতিবেশী দেশটি রাষ্ট্রীয়ভাবেই এই অশ্লীল সংস্কৃতির ব্যাপক পৃষ্ঠপোষকতা করে এবং এই অশ্লীলতা নির্ভর চলচ্চিত্র তারা সউদী আরব, কাতার, দুবাই, কুয়েত, আরব-আমিরাত সহ খোদ পাকিস্তান এমনকি আমাদের বাংলাদেশেও রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা কামাই করে। অর্থাৎ প্রতিবেশী দেশটির অর্থনীতি দেহ-বাণিজ্য নির্ভর বললেও অত্যুক্তি হয়না। কিন্তু “পরের জন্য কুয়া খুঁড়লে তাতে নিজেরই পড়তে হয়।” প্রবাদ বাক্যের মতো অবস্থা হয়েছে প্রতিবেশী দেশটির। উন্নত দেশ, প্রযুক্তির ব্যবহার, নারী অধিকার বাস্তবায়নের দেশ ইত্যাদি দাবি করলেও চলন্ত বাসে পর্যন্ত নারীর সম্ভ্রমহরণের উদাহরণ তারা তৈরি করলো। এতে প্রতিভাত হয় আসলে প্রতিবেশী দেশটির গণমানসে, নারীর সম্ভ্রম লুণ্ঠনের প্রবৃত্তি ঢুকে পড়েছে। এটা হয়েছে মূলত: তাদের অশ্লীল সংস্কৃতি চর্চার জন্যই।
বলাবাহুল্য, মানুষ স্পর্শকাতর জীব। সিনেমা, টিভি-মুভিতে মানুষ যে অশ্লীল সিনেমা দেখে তা তার মানসে গভীর প্রভাব ফেলে। মনস্তাত্ত্বিকভাবে সে দৃশ্যমান প্রতিটি নারী দেহকে ধর্ষণ করে। (নাঊযুবিল্লাহ) আর সুযোগ পেলেই নারীর উপর হামলে পড়ে। দিল্লির বাস ঘটনায় মূলত: এরই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এ থেকে উত্তরণ পেতে হলে মানুষের সৃষ্টিকর্তা খালিক্ব মালিক রব তায়ালা তিনি যে পর্দার হুকুম মুবারক করেছেন তা পালনের কোনো বিকল্প নেই। কেবলমাত্র পর্দা প্রথার প্রচলন ঘটলেই নারীর নিরাপত্তা বলয় রচিত হবে। নারী অধিকার নিশ্চিত হবে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতিবেশী দেশটির এই ন্যক্কারজনক ঘটনা হতে নছীহত লাভের অবকাশ রয়েছে আমাদের দেশেরও। কারণ আকাশ সংস্কৃতির নামে প্রতিবেশী দেশটির অশ্লীলতা ঢুকে পড়েছে আমাদের দেশেও। এতে প্রতিবেশী দেশটিতে যেমন হায়েনার চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে আমাদের দেশেও তার প্রতিফলন ঘটার যথেষ্ট বৈরী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কাজেই সময় থাকতেই সাবধান হতে হবে। প্রতিবেশী দেশটির আকাশ সংস্কৃতি এদেশে সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম- উনার দৃষ্টিতে হারাম টিভি-সিনেমা-ছবি এগুলো সঙ্গতকারণেই নির্মূল করতে হবে।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×