এই ব্লগ টির আগের পর্বের পাঠক দের কাছে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি ২য় পর্বের দেরীর কারনে। এবার ও ছোট মুখে কিছু বড় কথাবলতে হবে।আগের মতই দেশের সফ্টওয়ার শিল্পের সমস্যা ,সম্ভবনা,বাধাঁ,বিপত্তি নিয়ে আমার নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করব সবার সাথে।
আশাকরি এই ব্লগ টিকেও ক্ষমা সুন্দর চোখ এ নেবেন।
১। 'ERP ' ম্যানিয়া :
১ থেকে ৩ মাসের মধ্যে ইআরপি বানিয়ে দিতে হবে, ঢুকেই এমন বিব্রতকর অবস্থা পড়তে হয় প্রোগ্রামার কে ।এই আকাশ কুসুম চিন্তা কেমন করে আসে এটা একটা গবেষণার দাবি রাখে!এই তথাকথিত ইআরপি প্রোজেক্ট গুলর পরিনতি খুবিই করুন হয়ে থাকে এবং পর্বতের সব সময় মূষিক প্রসবই হয়ে থাকে।
১০ থেকে ১২ টা মডুল এর আবদার দিয়ে শুরু হওয়া ৩ মাসের প্রজেক্ট ৩ বছরেও শেষ হয় না। নষ্ট হয় মুল্যবান সময়, শ্রম ও মেধা।এ এক অশুভ চক্র।
২। প্রজেক্ট না প্রডাক্ট ?
দেশি সফটওয়্যার কোম্পানি গুলার আরেকটি ব্যারাম হল প্রজেক্টবেজ কাজ করা। এরা ১০ প্রজেক্টের জন্য ১০ টা HRM System বানাবে তবু একটা জেনেরিক প্রোডাক্ট বানাবে না।সময়,অর্থ এবং মেধার কি অপচয়!
এই জেনেরিক প্রোডাক্ট না বানিয়ে প্রোজেক্টএর পেছনে লাফানর একটা কারন আছে তাহল কাঁচা টাকা পাওয়া যায় প্রজেক্ট করে আর সরকারি কাজ হলে ত কথায় নেই। ধুনফুন করে কয়েকটা পেজ বানিয়ে কিছু একটা দেখিয়ে বিল তুলে খেয়ে ফেল্লেই হল। কে মাথা ঘামায় কেউ এটা ব্যবহার করছে কি করছে না তা নিয়ে।
এতে করে দেশি কম্পানিগুলো সম্পর্কে সাধারন ক্লায়েন্ট দের যে বাজে ধারনা তৈরি হচ্ছে তারই পরিণতি হল দেশি কোম্পানি গুলার বদলে বাইরের কোম্পানি গুলার একটা একটা করে সরকারি প্রজেক্ট হাতিয়ে নেবার ঘটনা।
৩) ৩ কেজি ওজনের টেন্ডার ডকুমেন্ট দিয়ে যাত্রা শুরু!
প্রায় প্রতিটি সফটওয়্যার টেন্ডার পর ৩ থেকে ৫ কেজি ওজনের টেন্ডার ডকুমেন্ট সাবমিট করা হয়।যার মধ্যে ‘সার’ বস্তু পাওয়া খুব দুষ্কর।বলাই বাহুল্য যে,এই টেন্ডার ডকুমেন্ট তৈরি হয়ে হয় কাট পেস্টের কুটির শিল্প মধ্যে দিয়ে! আদও কেউ পড়ে দেখে এই বস্তা বস্তা ভুয়া তথাকথিত ডকুমেন্টস?
৪) হায় SRS ! বিকৃত Use Case!
ভক্তভোগী প্রোগ্রামার মাত্র জানে মান্ধাতা আমলের SRS (Software Requirement Specification) ডকুমেন্ট এর যন্ত্রণা। এটাও কেজি সাইজের হয়ে থাকে। কয়েক কেজি ওজনের SRS সুন্দর করে বাধিয়ে ক্লায়েন্ট দের হাতে ধরিয়ে বিলের পয়সা হজম প্রক্রিয়া শুরু হয়।
তথাকথিত ৬ মাসের ERP প্রজেক্ট এর ৪ মাস যায় কেজি কেজি SRS নামক আবর্জনা তৈরির মধ্য দিয়ে।এটার সাথে থাকে সাইড আইটেম বিকৃত USE CASE . জিলিপির প্যাচের মত এই সব USE CASE যখন কোনরকম alternate flow অথবা exception flow ছাড়াই নবীন প্রোগ্রামারদের হাতে তুলে দেয়া হয় তখন শুরু হয় তুর্কী নাচন।
সময়ের সাথে সাথে এই সব বস্তা বস্তা ডকুমেন্টর কবর রচনা হয়। থেকে যায় ক্লায়েন্ট দের চাওয়া আমের বদলে কাঠাল!
আপডেটঃ
আগের পর্বের লিংক দিয়ে দিলাম।
পর্ব-১
[ চলবে ]