“ইয়েলো জার্নালিজম” অনুবাদান্তে “হলুদ সাংবাদিকতা” একটা কলঙ্কের নাম জার্নালিজম তথা সাংবাদিকতার মত মহান পেশায়। জনৈক প্রথিতযশা স্থপতি একবার বলেছিলেন, “Yellow Journalism is Yellower then shit”
তাঁর কথার সাথে সহমত প্রকাশ কিংবা দ্বিমত প্রকাশ প্রসঙ্গে যাবার প্রয়োজনবোধ করছিনা, বরং ইয়েলো জার্নালিজম তথা হলুদ সাংবাদিকতা কি এবং যুগে যুগে বিভিন্ন দেশ কালের অববাহিকায় আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশে এর কি প্রভাব এবং হাল-হকিকত তা নিয়ে সামান্য আলোকপাতই গুরুত্ব পূর্ণ মনে করছি।
হলুদ সাংবাদিকতা বলতে বোঝায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভিত্তিহীন রোমাঞ্চকর সংবাদ পরিবেশন বা উপস্থাপনকে। এ ধরনের সাংবাতিকতায় ভালমত গবেষণা বা খোঁজ-খবর না করেই দৃষ্টিগ্রাহী ও নজরকাড়া শিরোনাম দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়। হলুদ সাংবাদিকতার মূল উদ্দেশ্য হল সাংবাদিকতার রীতিনীতি না মেনে। যেভাবেই হোক পত্রিকার কাটতি বাড়ানো বা টেলিভিশন চ্যানেলের দর্শকসংখ্যা বাড়ানো। অর্থাৎ হলুদ সাংবাদিকতা মানেই ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন, দৃষ্টি আকৰ্ষণকারী শিরোনাম ব্যবহার করা, সাধারণ ঘটনাকে একটি সাংঘাতিক ঘটনা বলে প্ৰতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা, কেলেংকারির খবর গুরুত্ব সহকারে প্ৰচার করা, অহেতুক চমক সৃষ্টি ইত্যাদি।
ফ্র্যাঙ্ক লুথার মট হলুদ সাংবাদিকতার পাঁচটি বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেছেনঃ-
• সাধারণ ঘটনাকে কয়েকটি কলাম জুড়ে বড় আকারের ভয়ানক একটি শিরোনাম করা।
• ছবি আর কাল্পনিক নক্সার অপরিমিত ব্যবহার।
• ভুয়া সাক্ষাৎকার, ভুল ধারণার জন্ম দিতে পারে এমন শিরোনাম, ভুয়া বিজ্ঞানমূলক রচনা আর তথাকথিত বিশেষজ্ঞ কর্তৃক ভুল শিক্ষামূলক রচনার ব্যবহার।
• সম্পূৰ্ণ রঙিন রবিবাসরীয় সাময়িকী প্রকাশ, যার সাথে সাধারণত কমিক্স সংযুক্ত করা হয়।
• স্রোতের বিপরীতে সাঁতরানো পরাজিত নায়কদের প্ৰতি নাটকীয় সহানুভূতি।
তাঁর "an enumeration. . . of something grotesque and vicious" শীর্ষক লেখায় ফ্র্যাঙ্ক লুথার মট বলেন,
"the familiar aspects of sensationalism - crime news, scandal and gossip, divorces and sex, and stress upon the reporting of disasters and sports." But the genre was more complex than merely sensational; its "distinguishing techniques"
•
• included the use or appearance of:
•
prominent headlines that "screamed excitement, often about comparatively unimportant news."
• "lavish use of pictures, many of them without significance."
• "impostors and frauds of various kinds," including "faked's interviews and stories."
• a Sunday supplement and color comics.
• "more or less ostentatious sympathy with the underdog,'s with campaigns against abuses suffered by the common people."
**সংক্ষিপ্ত ইতিহাসঃ-
হলুদ সাংবাদিকতার সুচনা সেই আদি আঠারশো শতকের(১৭০০) একেবারেই প্রথমভাগটায়। জন পিটার জিঞ্জার নামক আমেরিকান সাংবাদিক এবং প্রকাশকের যিনি একটা ল্যান্ডমার্ক কেসের ইস্যু তে ডিফেন্ডেন্ট হিসেবে নিউ ইয়র্কে প্রথম প্রেসে খবর তৈরি করেন। নিউ ইয়র্কের তৎকালীন গভর্নর উইলিয়াম কসবাই(William Cosby) এর প্রণীত নতুন সব পলিসির বিরুদ্ধে তিনি একটা নিউজপেপার এবং একটা সাপ্তাহিক ক্রোড়পত্রিকা প্রকাশ করেন। যার সুচনা হয় কাউন্সিলের সাথে গভর্নরের নিজস্ব বেতনাদি সংক্রান্ত গোপন আরগুমেন্ট দিয়ে। তাকে এরেস্ট করা হয় এবং ট্রায়ালে তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনা হয়। তবে পরবর্তীতে তাঁর পাশে থেকে পক্ষে লড়েন এন্ড্রু হেমিলটন( Andrew Hamilton) নামক আমেরিকান ভদ্রলোক যা পরবর্তীতে আমেরিকায় প্রেসের এবং সংবাদ পত্রের বাক স্বাধীনতায় ভূমিকা রাখে। আর জিঞ্জার হয়ে যান, ভবিষ্যৎ নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সির পাবলিক প্রকাশক।
এরো শতাব্ধি পরে, ১৮৯৫ থেকে ১৮৯৮ অবধি হলুদ সাংবাদিকতার সাড়া জাগানো বহিঃপ্রকাশ হয়েছিল সাংবাদিকতা জগতের অন্যতম দুই ব্যক্তিত্ব যুক্তরাষ্ট্রের জোসেফ পুলিৎজারআর উইলিয়াম রুডলফ হার্স্টের মধ্যে পেশাগত প্রতিযোগিতার ফল হিসেবে। এই দুই সম্পাদক তাদের নিজ নিজ পত্রিকার ব্যবসায়িক স্বার্থে একে অপরের অপেক্ষাকৃত যোগ্য সাংবাদিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত কর্মচারীদের অধিক বেতনে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছিলেন। এক পর্যায়ে ব্যক্তিগত কেলেংকারির চাঞ্চল্যকর খবর ছেপে তারা পত্রিকার কাটতি বাড়ানোর চেষ্টা করেন। পুলিৎজারের নিউ ইয়র্ক ওয়ার্ল্ড ও হার্স্টের নিউ ইয়র্ক জার্নালের মধ্যে পরস্পর প্রতিযোগিতা এমন এক অরুচিকর পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে, সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতার পরিবর্তে পত্রিকার বাহ্যিক চাকচিক্য আর পাঠকদের উত্তেজনা দানই তাদের নিকট মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়
বিস্তারিত ইতিহাস বর্ণনায় যাচ্ছিনা। সংবাদ পত্র এবং সংবাদ মাধ্যম এর জনমনে জনপ্রিয়তা এবং কার্যকারিতা ও উপযোগিতা উপোলব্ধির উত্তরোত্তর উন্নতির সাথে সাথে হলুদ সাংবাদিকতাও বিস্তার লাভ করে যুগে যুগে কালক্রমে জাতিগত এবং স্থানগত অবস্থাগত পার্থক্যভেদে।
এর ইতিহাস একেবারে কিন্তু সংক্ষিপ্ত নয়
কার্ল যে কোচ (Carl J Couch) তাঁর “Information Technologies & Social Orders” বইতে সোশাল রিলেশনশীপ, ইনফরমেশন টেকনোলজী তথা আইটি সেক্টর এবং সামগ্রিক মোড অফ এনালাইসিসের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন
**এবারে আসা যাক বাংলাদেশ প্রসংগেঃ-
আমাদের দেশে সেই ১৮০০ সালের মাঝামাঝি হতে সংবাদ পত্রের সূচনা হলেও হলুদ সাংবাদিকতার আত্ম প্রকাশ ঘটেছে বেশ পরেই বলতে গেলে। কিন্তু তা এমনই দ্রুত আর আশংকা জনক হারে মানব দেহে ক্যান্সার কোষের মত আমাদের দেশের মিডিয়া এবং সংবাদ মাধ্যম জগতে এবং তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বৃদ্ধি পাচ্ছে যে বিগত কয়েক বছরে সব রেকর্ড এর কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য
এই নীতিহীন এবং হায়াহীন ফেম সিকিং এবং হিট সিকিং সাংবাদিকতা সাংবাদিকতার মত মহান পেশাকে একদিকে যেমন করেছে কলুষিত তেমনি দেশ-জাতি-রাষ্ট্রের স্বার্থকে করেছে উপেক্ষিত বিবর্জিত এবং অবহেলিত
আমাদের দেশে এখন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহ এবং উপস্থাপন পরিবেশনের সুযোগটা শুধু অবহেলিত কিংবা কঠিনই নয় বরং হুমকির মুখে। সংবাদ পত্রের মুখ যখন চেপে ধরা হবে কোন দেশে কোন জাতিতে তখন অবশ্যই অবশ্যই একথা স্বীকার করে নিতে হবে যে সে জাতি সেই দেশের ভবিষ্যৎ ঘোর অমানিশায়। সে জাতি সে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সত্যিটা জানানো হবেনা! সে জাতি সে দেশের ভবিষ্যৎ রূপরেখা তৈরি হবে স্বেচ্ছাচার আর জুলুমের প্রাসাদ তথা শোষণ-বঞ্চনার সিংহাসন বিনির্মাণের মাধ্যমে! সে জাতি কিংবা সে দেশের হৃত গৌরব সকল সম্পদ সকল কোন মিথ্যা জামানতে মিথ্যা লোভে বন্ধক দেয়া হয়ে গেছে, হয়ে গেছে শ কষ্টার্জিত রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতার পরোক্ষ বলিদান হয়তো কোন আপেক্ষিক বন্ধুবেশি বৈরি শক্তির হাতে, হয়তো স্বার্থান্বেষী কোন বেনিয়া শাসন যন্ত্রের হাতে!
বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ যে সবসময় গ্ল্যামারাস কিংবা আই ক্যাচিং হবে না তাইকি স্বাভাবিক নয়?? বস্তুনিষ্ঠ এবং যৌক্তিক অর্থবহ সংবাদ যে সবসময় শাসকের পক্ষে কথা বলবেনা তাই কি স্বাভাবিক নয়?? বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ যে সবসময় জাতির তথা মানুষের এবং দেশের বৃহৎ স্বার্থে ক্ষুদ্র ব্যক্তি সার্থকে বিসর্জন দেবেনা তাই কি স্বাভাবিক নয়??
তবে কেনো বস্তুনিষ্ঠ এবং যৌক্তিক সংবাদ উপস্থাপনায় এতো অনিহা এতো বাধা-বিপত্তি এত কাদা ছোড়াছুড়ি, এতো এতো রোষানল!?!
আজকে আমাদের দেশে যে কয়টা সংবাদ পত্র চালু আছে এবং যে কয়টা অনলাইন মিডিয়া সংবাদ উপস্থাপনা করে যাচ্ছে, তার কয়টা বস্তুনিষ্ঠ এবং যৌক্তিক যথাযথ কার্যকর এবং নিখুঁত নির্ভেজাল সংবাদ উপস্থাপন করতে পারছে?? তার কয়টা স্বাধীন ভাবে মত প্রকাশ করতে পারছে?? কয়টা জনমনের সব ধরণের অভাব-অভিযোগ এবং সবধরনের অপ্রকাশিত সত্য কথা গুলো তুলে এনে প্রকাশ করছে বা করতে পারছে??
যদি শতভাগ সঠিক উত্তর কেউ আশা করেন এসব প্রশ্নের তবে কষ্ট সত্ত্বেও স্বীকার করে নিতে হবে “প্রায় একটাও না” !!
দেখুন কিছুটা বিস্তারিতভাবে প্রমাণ সহ আমাদের দেশের সংবাদ মাধ্যম তথা মিডিয়ার জনগনকে ঘোলাজল খাওয়ানোর সামান্য একটা প্রমাণ সাপেক্ষ আলোচনা এবং বর্তমানে সর্বাধিক প্রচারিত জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো নিয়ে সামান্য তথ্য নির্ভর আলোচনা...
ওয়ার্ড প্রেসে প্রকাশিত আরো কিছু সাময়িক খবরাখবর এখানটায় চোখ রাখুন...
সংবাদ পত্রের এহেন অপারগতা সংবাদ মাধ্যমের এহেন অনুপযোগিতা মিডিয়ার এহেন দালালীর পেছনটায় দায়ী কাদের করা উচিত??
এটা কি শুধুই সাংবাদিক কিংবা জার্নালিস্টদের কারসাজি? -মোটেও তা নয়!
এর আসল বহুবিধ কারণের মধ্যে প্রধান হিসেবে যেটাকে উল্লেখ করা যায় –তা হচ্ছে, বাক স্বাধীনতার উপর রাষ্ট্র যন্ত্রের হস্তক্ষেপ! স্বাধীন মত প্রকাশের উপর স্বার্থান্বেষী মহলের কালো হাত কালো থাবা এবং সময়ের বিবেচনায় বর্তমানের জন্য জঘন্য দমন মূলক আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা! এই আইসিটি আইনটি প্রথম প্রণীত হয় ২০০৬ সালের ৮ অক্টোবর।
এই সামারি নিয়ে,
“This law is related to the protection and legality of information & communication technology, Cyber Crimes and relevant issues therewith.”
২০০৬ সালের প্রণীত আইসিটির ৩৯ ধারায় প্রকাশিত ওই এক্টের বিস্তারিত পুরোটুকুই পিডিএফ আকারে এখানটায় পাবেন ...
২০০৯ সালের কেবিনেট ডিভিশনে প্রকাশিত এক্টের নথি এখানটায়...
২০০৬ এ প্রণীত আইসিটি এক্টের ক্রমান্বয়ে পরিমার্জনের চূড়ান্ত পর্যায়ে বিগত ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর প্রনয়ন করা হয় মুক্তবুদ্ধি-মুক্তচিন্তার দ্বার রুদ্ধকরণ মূলক এবং বাক স্বাধীনতার পায়ে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল পড়াতে চির দমন মূলক এবং অন্ধ কানা আইন ৫৭ ধারা।
এই ধারায় বলা ছিলো,
Punishment for publishing fake, obscene or defaming information in electronic form.--
(1) If any person deliberately publishes or transmits or causes to be published or transmitted in the
website or in electronic form any material which is fake and obscene or its effect is such as to tend to
deprave and corrupt persons who are likely, having regard to all relevant circumstances, to read, see or
hear the matter contained or embodied in it, or causes to deteriorate or creates possibility to deteriorate
law and order, prejudice the image of the State or person or causes to hurt or may hurt religious belief
or instigate against any person or organization, then this activity of his will be regarded as an offence.
(2) Whoever commits offence under sub-section (1) of this section he shall be punishable
with imprisonment for a term which may extend to ten years and with fine which may extend to Taka
one crore.
বিস্তারিত দেখুন,
অথচ মুক্তচিন্তা বিকাশে সোচ্চার এবং সচেতন জাগ্রত প্রতিটি সুশিক্ষিত বিবেকবান নাগরিকের বাক স্বাধীনতা হরণ মূলক এই আইনের প্রণয়ন কর্তারা কি ভাবেননি একটাবার ও যে এই একই শূলের কাঁটায় চড়তে হতে পারে নিজেদেরও, যখন প্রশাসন যন্ত্রের হয়তো হাত বদল হবে!
তারা কি ভুলে গেলেন??
From previous experiences, we have witnessed that more often than not, the government of Bangladesh, when trying to enact any new law or strengthen any existing law, does so with the intention to exploit it for partisan purposes. If the present government enacts the proposed act with its partisan abuse in mind, it shouldn’t forget that the law could be used against them when they would be in the opposition,
তারা কি ভুলে গেলেন আমেরিকার ১৬ তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের কালজয়ী উক্তি, ‘LET the people know the facts and the country will be safe,’
তারা কি ভুলে গেলেন??
The most important thing is freedom of expression in a democracy. Freedom of speech and access to information is meant for giving empowerment to people and help them gain control over their own lives. This empowerment supports participatory democracy by enabling citizens to engage in public debate and to hold the governments and others accountable. They ensure good governance, development, and peace rather serving the interests of any particular group or party.
Practically, any government can’t work much better without freedom of speech and functions of media as it is the fundamental need of citizens to know the functions of government.
তারা ভোলেননি বটে কিন্তু, মুক্তচিন্তা কিংবা সত্য বলার সাহস কিংবা মতান্তরে ধৃষ্টতা দেখানো মানুষগুলোর মুখ বন্ধ রাখতে পারাটা যে বিভিন্ন সময় জরুরী হয়ে দাঁড়ায় !
আর আজকে আমাদের মুক্তচিন্তার রুদ্ধ দুয়ারে রক্তক্ষরণের সাথে সাথে রক্তিম বুক পেতে দিয়ে বিবেক বিকিয়ে মানতে শুনতে হচ্ছে, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে মুক্তমত প্রকাশ সম্ভব নয়!
যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই, যেখানে নেই বাক্য স্বাধীনতা
এই আইন বলে আমার কথা আমাকে বলতে দেয়া হবেনা, আমার প্রতিটা শব্দ উচ্চারণ, প্রতিটা বর্ণ চয়নের পূর্বে চিন্তা, জরিপ, যাচাই-বাছাই এবং বিশ্লেষণ করতে হবে যে কোন বর্ণ কারো হেয় করছে বা কাউকে ইঙ্গিত করছে কিনা কিংবা কাউকে ইঙ্গিত কিংবা হেয় প্রতিপন্ন করছে বলে মনে হচ্ছে কিনা...!!
এই আইন শুধু রুদ্ধ দুয়ারে রক্তাক্ত বিবেকের আঘাতের শাপ নিয়েই ইতিহাসের একটা পাতা কালো করবে, করবে কলুষিত! এছাড়া কিছুই হবে না, হতে পারেনা !!
হ্যাঁ, অবশ্যই আমি অস্বীকার করছিনা, নিম্নোক্ত পয়েন্ট গুলোয় সাইবার ক্রাইম রোধে এবং নিরাপদ অনলাইন সেক্টর এবং তথ্য প্রযুক্তির বিকাশে এই আইনের আবশ্যকতা এবং সীমাহীন প্রয়োজনীয়তা।
>> 1. Culture, norms and practices that reinforce prejudice (সংস্কৃতি, আদর্শ এবং অভ্যাসগত রীতিনীতির প্রতি পক্ষপাত দুষ্টতা কিংবা মানহানি)
>> 2.Limiting mobility and privacy through surveillance
(প্রাইভেসি সংরক্ষণ এবং সন্দেহভাজনের উপর নজরদারী)
>> 3. Psychological and emotional harm (শারীরিক এবং মানষিক ক্ষতি)
>> 4. Re-victimisation(পূনঃ বলিকরন)
কিন্তু এর জন্য কি যথাযথ কয়েকটা বেবস্থা নেয়া যেতে পারেনা এমন কানা আইন বিন্যাস না করে...
অতএব, সরকারের জাতিগত এবং সচেতনতার এবং বিবেকের স্বার্থে উচিত এই আইনকে মডিফাই করে যথার্থ এবং উপযোগী ও কার্যকর করা...
নতুবা এভাবে দু চারজন কে মুক্তভাবে মত প্রকাশের অপরাধে ধরে বেক্তিগত ভাবে হয়রানি করা সম্ভব হবে কিন্তু একটা জাতির বিবেককে রুদ্ধ করা যাবেনা, কানা করা যাবেনা। বরং একসময় ওই কারেন্ট জালের স্বীকার তাদেরই হতে হতে পারে যারা কিনা মৎস্য স্বীকারেরে অর্থাৎ দিনের আলোতে ইলিশের জাটকা ধরার অভিপ্রায় কে বৈধতা দানের লক্ষ্যে এ জালের বুনন দিয়েছেন!
আমরা কি ভুলে গেছি ফ্রাঙ্কেস্টাইনের দৈত্যের কথা? সেই দৈত্য তাকে নিজ প্রয়োজনে ব্যাবহার করতে যে মালিক বানিয়েছিলেন সেই মালিকেই পরবর্তী তে হতে হয়েছে এর নির্মম শিকার!
অতএব, অবিলম্বে এই কানা আইন বন্ধ করে ক্রাইম রোধে, প্রাইভেসী রোধে মানবাধিকার রোধে এর যতাযথ মডারেশন মডিফাই করা হোক, এটাই কাম্য...
বিগত ২ মে ২০১৪ তারিখে ব্লগার নিশাত তাসনিম সামহোয়্যার ইনে একটি পোস্ট দেন,
আই সি টি এর ৫৭ ধারার কালো থাবায় আমাদের কন্ঠ রোধ করা যাবে না।আমরা হলুদ সাংবাদিক নই। আমরা ব্লগার
যাতে তিনি জাতীয় স্বার্থে গুরুত্ব পূর্ণ ছয়টি বিষয়ের দিকে বিশেষভাবে আলোকপাত করেন বিস্তারিতভাবে...
আমি এখানে সময় এবং বর্তমান অবস্থা সাপেক্ষে জাতীয় স্বার্থে অতীব গুরুত্বপূর্ণ ওই ছয়টি বিষয়ের সংক্ষিপ্ত জবাব উপস্থাপন করছি আমার নিজস্ব মতাদর্শ এবং সাম্প্রতিক দেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলির আলোকে...
>> ১// আমরা কি নিরাপত্তাহীনতার ঘেরাটোপে আটকে যাচ্ছি কিনা তা অবশ্যই একটা স্বাধীন এবং আপাত দৃষ্টিতে নিরাপদ দেশের জনগন হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তবে আমাদের সৌভাগ্যই বলতে হবে, যে জনগণের বেডরুমের নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপার সেপার নিয়া চিন্তাভাবনা করার মত সময় আমাদের বিজি সরকারের নাই এবং উহা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও অলিখিতভাবে সত্য! তারচেয়ে বরং ফিতা কর্তন এবং মোড়ক উন্মোচন গুরুত্ব পূর্ণ প্রোগ্রাম শিডিউল হতে পারে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের স্বামী এবি সিদ্দিককে কে/কারা উদ্ধার করলো? প্রশাসনের ভূমিকা কি? নাকি তাঁকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে এবং তাই তিনি ফিরে এসেছেন-মিডিয়ার এসব সংবাদ কে আপনি চিন্তাতীত বিভ্রান্তিকর বলছেন, কিন্তু আপনি ভেবে কি দেখননি যে প্রশাসন এবং হলুদ মিডিয়ার লেজ কোথায় কোথায় বাঁধা?
আপনি প্রশ্ন বলছেন কানা-খোঁড়া-বোবা-কালা প্রশাসন যন্ত্রের চাকা যেসব হাতে ঘুরছে সেসব হাতের কাছে জনগন আর কিবা আশা করতে পারে! এবং একটি সভ্যদেশে, গণতান্ত্রিক দেশে, স্বাধীন দেশে এভাবে গুম, হত্যা, অপহরণ আর অবিচার পাকা পোক্ত জায়গা করে নেবে-এই ঢের স্বাভাবিক!!
আপনিকি আদৌ মনেকরেন কানা-খোঁড়া-বোবা-কালা নাহোক, অন্তত হাপপেন্টুল ভোটারের ভোটের গনতন্ত্রে এর চাইতে বেশি কিছু আশা করাটা আমাদের জন্য সমীচীন?? আপনিকি মনে করেন মরচে পড়া ওই প্রশাসন যন্ত্রের চাকার বেয়রিং অদূর ভবিষ্যতে ঘোড়াটা সম্ভব কংক্রিট সম দৃঢ় বজ্র মুষ্টি তলে, ব্লগারের হাত ছোঁয়ানো রূপোর কাঠির বলে?
আপনি বলছেন, সিদ্দিক সাহেব ফিরে আসাতেই আমাদের যাবতীয় উৎকন্ঠা ফুরিয়ে যায় না, বরং আমাদের দায়িত্বশীলতা বোধ করি আরও বেড়ে যায়। আমরা, দেশের সর্বসাধারণ নিরাপদ জীবন-মৃত্যু'র নিশ্চয়তা চাই। মানবিকতায় বাসযোগ্য বিশ্বস্ততা চাই।
আপনিকি শোনেননি, তার বা তাদের জন্য সুশীল সমাজের আহাজারি, প্রেস কনফারেন্সে বিশিষ্ট নাগরিকেরা ব্যানারে উদ্বেগ প্রকাশ। আপনিকি শোনেননি, সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন অবস্থায় আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি...... আবেদন জানাচ্ছি, তারা যেন আমাদের বন্ধু আবু বকর সিদ্দিককে অক্ষত অবস্থায় নিরাপদভাবে ফিরিয়ে দেয়’ ......
অতএব, ওসব নিরাপদ জীবন-মৃত্যু'র নিশ্চয়তা কিংবা মানবিকতায় বাসযোগ্য বিশ্বস্ততা কার কাছে চাইছেন আপনি? বরং এভাবে বলুন, "অতঃপর হে সুশীল সমাজ ! হে উদ্বিগ্ন এরিস্ট্রোক্র্যাট চিন্তিত তাপস পাল ! হে উদ্বিগ্ন চিন্তামণি নাগরিকবৃন্দ ! হে প্রতিনিয়ত গনতন্ত্র পেয়ালায় গুলিয়ে খাওয়ানো মানবাধিকার চর্চাকারী ! হে দেশের ভন্ড কর্পোরেট দেশপ্রেম বিক্রেতা ! হে মানববন্ধনের নিরলস কারিগর !
প্রতিদিন গুম হয়ে যাওয়া ,অতঃপর কোনো নদীর পাড়ে বা মাঝনদীতে ভেসে ওঠা লাশ তোমাদের বন্ধুর নয় বলে তোমরা তাদের গুম-হত্যা হয়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তিত হওনা ? যারা গুম হয়ে যাচ্ছে , তাদের কি পরিবার নেই , তাদের কি চিৎকার করে কান্না করা স্ত্রী–সন্তান-বাবা-মা নেই ? তারা ক্ষমতাবান নয় ,তাদের তোমাদের মতন শক্তিশালী বন্ধু নেই , তারা ফজলুল হক আমীনি বা রিজওয়ানা হাসান নয় - তাই বলে কি তাদের বেঁচে থাকার , নিরাপদে ঘরে ফিরে আসার অধিকার নেই ? তোমার কন্ঠ কেন নির্জীব শোনায় সেই সব হারিয়ে যাওয়া মানুষের বেলায় ?
তবে শুনে রাখো হে সুশীল , যেহেতু তোমরা সাধারনের জন্য না – তোমাদের এই সিলেক্টিভ মানবাধিকার চর্চায় ধিক্কার জানাই ! এবং জেনে রাখো , শুধু আমি না , এইসব ভন্ডামি দেখে তোমরা বাদে বাংলাদেশের ভিক্টিম প্রতিটি পরিবার সেই একই কাজটা তোমাদের উপর করে । চোখ খুললে দেখতে পেতে , নাক থাকলে তোমাদের শরীরে সেই গন্ধটা টের পেতে ।"
>> ২// আপনি দেখাচ্ছেন, ২০১০ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে প্রায় ৩০০ ব্যক্তিকে হত্যা, গুম ও অপহরণ করা হয়েছে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলছেন " গুমের সংখ্যার আনুপাতিক হার নারায়ণগঞ্জে গত বছরের তুলনায় কম, গুম নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই।" প্রশ্ন তুলছেন, দিনে কমপক্ষে কত জন গুম হওয়ার পর খুন হলে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়েরা চিন্তিত হবেন? অথচ আমাদের সম্মানিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এব্যাপারে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করছেন এই বলে, "তবে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্বিগ্ন নয়"
আপনিকি জানেননা, গুম শিল্পের রাজনীতিতে বাৎসরিক "গুমের আনুপাতিক হার" এবং তদ সংলগ্ন স্ট্যাটিসটিক্স এবং খতিয়ানসমূহ গুরু তাৎপর্য বহ জিনিস এবং
একজন রিজওয়ানা হাসানের মত বন্ধুপ্রবরের প্রয়োজনীয়তা অসামান্য !!?
>>৩// মার্চ মাসে লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা গাওয়ার জন্য জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে ৮০ লাখ টাকা গ্রহণ করে সরকার । পরে তীব্র প্রতিবাদ, সমালোচনা ও নিন্দার মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে সে টাকা সরকার ফিরিয়ে দিলেও এপ্রিল মাসের শেষে এসে আবারো ইসলামী ব্যাংক এর টাকার টকা লোভে পড়ে সরকার। আর এখন আবার পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ২০০০ কোটি টাকা ইসলামী ব্যাংক থেকে নিচ্ছে সরকার। টকা দিলে রাজাকারকে মুক্তিযুদ্ধের সনদপত্র বিতরণ করা হয়। সে আর নতুন কি?
অতএব নগদ-নারায়ণ প্রদান করলে সরকার শুকরের গন্ধ যুক্ত মেষসাবকদের শুধু সাধারণ ক্ষমাই ঘোষনা করবেন না উপরন্তু লিঙ্গান্তর করে পুষ্প-পদ্ম মাল্য সহ দলেও ভেড়াবেন!
মাননীয় মন্ত্রীর কাছে আপনি সবিনয়ে জানতে চাচ্ছেন, জামাত নেতা দেওয়ার দেলোয়ার হোসেন সাইদীর ফাঁসি সহ অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি কি টাকার বিনিময়ে মওকুপ করে দিবেন ?
আপনিকি মনে করেন আপনার এই প্রশ্ন মন্ত্রিসাহেব আদতে কানে তুলবেন? যেখানে এখন শুকরবৎস কিংবা তার গন্ধযুক্ত মেষ সাবকে ভালো হালচাষ সম্ভব
**পদ্মা সেতু এবং ......
২৯০ কোটি ডলারে (২২০০০ কোটি টাকা) ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণে মূল অর্থ যোগানদাতা বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি)ও ছিল। যাদের সম্ভাব্য অনুদান এর পরিমাণ ছিল ছিল ১৪ কোটি ডলার। আইডিবির ১৪ কোটি ডলারের সঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের ১ হাজার কোটি টাকার কোনো সম্পর্ক আছে কি না- তা আপনি মন্ত্রীমহোদয়ের জবান থেকে শুনতে চান এরপরেও?
ভুলে গেছেন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক(এডিবি) র বক্তব্য?
“ADB and the WB follow similar policies, rules and procedures on governance and fiduciary oversight. However, given the importance of the project to the country and the region, ADB also deeply regretted that both parties were unable to reach a workable agreement to move the operation forward.”
"We urged the authorities of Bangladesh to investigate this matter fully and, where justified, prosecute those responsible for corruption. We did so because we hoped the government would give the matter the serious attention it warrants.
ভুলে গেছেন জুনে্র সোমবার প্রকাশিত জাপানি ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সি (জাইকা)র বক্তব্য...
“The situation is very much regrettable in spite of the efforts between the government of Bangladesh and the World Bank. We will consider our position to the project [Padma bridge] after consultation with the Japanese government, referring to the other co-financers positions,” the philanthropic arm of the Japanese government said in an email when contacted by The Independent.
ভুলে গেছেন আইডিবির ১৪০ মিলিয়ন বাতিলের বক্তব্য...
The ADB had pledged a $615-million loan for the construction of the bridge. JICA and Islamic Development Bank had also signed separate agreements with the government to lend $400 million and $140 million, respectively, for the project.All are canceled due to the govt's tolerance to it's minister's serious corruption upholding all signs with SNC-Lavalin"
ভুলে গেছেন গত জুন ২৫-২৬ এ ওয়াশিংটনের সব হেক্টিক মিটিং এর সিরিজ এর বক্তব্য সমূহ...
"The World Bank has credible evidence corroborated by a variety of sources which points to a high-level corruption conspiracy among Bangladeshi government officials, SNC-Lavalin executives and private individuals in connection with the Padma Multipurpose Bridge Project,"
কিংবা ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি ভাইস প্রেসিডেন্টের চোখে আঙ্গুল দেয়া গোপন নথির বক্তব্য?
"Because we recognise the importance of the bridge for the development of Bangladesh and the region, we nonetheless proposed to proceed with an alternative, turnkey-style implementation approach to the project provided the government took serious actions against the high-level corruption we had unearthed. It would be irresponsible of the WB not to press for action on these threats to good governance and development.
The report is believed to contain allegations by eleven confidential witnesses against the company.6 Abul Hossain has countered that these allegations were made up by companies angry that they had been rejected by the technical evaluation committee. He contends that there was no conflict of interest in the participation of SAHCO, as he had resigned as managing director of the company. In February 2012, Bangladesh’s Anti-Corruption Commission (ACC) completed its own investigation into the allegations and concluded that there had been no wrong doing"
ভুলে গেছেন, গত সেপ্টেম্বরের শেষে দুদকের নির্লজ্জ রিপোর্ট আর প্রশাসনের ইঙ্গিতপূর্ণ নির্লিপ্ততার পরে পদ্মা সেতু প্রকল্প নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের চূড়ান্ত বক্তব্য?
"In light of the inadequate response by the Government of Bangladesh, the WB has decided to cancel its $1.2 billion IDA credit in support of the Padma Multipurpose Bridge project, effective immediately,"
অথচ, আমরা এমন বিশ্লেষণাত্মক চাটুকারি লেখাও পড়বো
পদ্মা বহুমুখী সেতু বিকল্প অর্থায়ন কতটা গ্রহণযোগ্য ভেবে দেখা দরকার
না ভুলে থাকলে এটুকুও ভুলবেন না, আশা করি... "টাকা" যখন প্রশ্ন তখন রাজাকারের শিশ্ন-বীর্য মুখে তোলাও সরকারের গণতন্ত্র চর্চার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের একটা বিশেষ পর্যায়ের মধ্যেই পড়ে!
>> ৪// বলছেন, রানা প্লাজার মর্মান্তিক দুর্ঘটনার এক বছর পার হয়ে গেলো নিহত ও আহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের কি হবে তা বলা যাচ্ছেনা। এমনকি নির্ধারিত হয়নি ক্ষতিপূরণের পরিমাণও।
যদিও বলা হচ্ছে রানা প্লাজায় প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির জন্য ১৪ লাখ ৫১ হাজার ৩০০ টাকা পরিমাণের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে । কিন্তু তা আদৌ তারা পাবে কিনা বুঝতে পারছেননা আর এই সাড়ে ১৪ লক্ষ টাকা কি পর্যাপ্ত? একজন মৃত শ্রমিকের জীবনের মূল্য কি সাড়ে চৌদ্দ লক্ষ টাকা দিয়ে নির্ধারিত হয়?
আপনি ইউরোপউদ্ভূত "টর্ট" আইনে শ্রমিকদের ক্ষতিপূরন দাবী করেন? অবৈধ মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ নির্ণয়ের একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ আয়ের বর্তমান মূল্য (discounted value of future flow of earnings), যা সারা পৃথিবীতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে সেই সার্বজনীন পন্থার কথা বলেন ? কোনরকম নাম সাক্ষর দিতে জানা বকলম শ্রমিকের জন্য কি মালিক সমিতির মুখের বানীই আইন হিসেবে যথেষ্ঠ না!! তারা কি আদৌ ওই ফিউচার ফ্লো অফ আরনিং এর কথা জানবে??
শত অকাল প্রয়াত পঙ্গু-থ্যাতলানো শ্রমিকের অভিশাপ তুড়িতে উড়ায় দিয়া চারদিন আরামে নির্বিগ্নে পুলিশ হেফাজতে শুয়ে বসে কাটায়া যখন রানারা বেড়িয়ে আসে তখন আমি বা আমরা সুশীলেরা আর বিশেষ উদ্বিগ্ন হইনা! ট্রাজেডির ১ বছর পরেও যেখানে বিচারের সুরাহা হয়নি সেইখানে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক পরিবার তাদের ন্যায্য ক্ষতি পূরণ পাবে তার নিশ্চয়তা কি-এসব নিতান্তই ফালতু প্রশ্ন তারচেয়ে বরং আমরা ভুলে থাকাটাতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে শিখে গেছি শ্রেণী যুদ্ধের যে বধ্যভূমির কথা ভুলে থাকাই আরামদায়ক(!) সেগুলো।
বরং আসুননা কিবোর্ড বিপ্লবীদের এবং সুশীল এরিস্ট্রোক্রেইট-কসমোপলিটান সমাজের পক্ষ থেকে সুখী সুখী মে-দিবসের শুভেচ্ছা জানাই শ্রমিক দের । সেই শুভেচ্ছা একবেলা দশটাকায় ভাত কিনে খাওয়া শ্রমিকের কাছে পৌছুক কিংবা না পৌছুক, আমরা যে সুশীল মানবতাবাদী শ্রমিকের দাবীর পক্ষে সোচ্চার সেটুকুতো জাতি জানবে? ওই বা কম কিসে!! আর রানাপ্লাজা-স্পেকট্রাম-তাজরিনের কয়লা হওয়া অথবা থ্যাতলায়া যাওয়া লাশেরা নাহয় এইবেলা আরাম করুক , বিচার সে বহুদূরের কাল্পনিক ভবিষ্যৎ। ও নিয়ে কালক্ষেপণ অনর্থক ইমোক্ষয়েরই নামান্তর!
>>৫// আপনি তিস্তার ন্যায্য হিস্যার সুরাহা নিয়ে কথা বলেন?? সেগুলো নিতান্তই বেরসিক শোনায় না? ৬৫ হাজার হেক্টর জমি ফেটে চৌচির হইল,৪০ হাজার ৫০০ হেক্টরে সেচ দেয়া সম্ভব হইলো কিনা, নাকি ৮০ হাজার হেক্টরের কৃষি আবাদ অনাগত কালের জন্য অনিশ্চয়তার মুখ দেখলো নাকি তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার কৃষকের বুকফাটা মাতম হইলো তাতে কি যায় আসে!
কি যায় আসে তিস্তায় পানি কমতে কমতে ৭-৮ হাজার কিউসেক থেকে ৪-৫শ কিউসেকে ঠেকলে!
আমরা নিউজ হেডিং দেখবো, কলাম লেয়ার দেখবো...
তিস্তা ব্যারেজ এখন জীবন্ত লাশ
বাংলাদেশের দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশিত তিস্তা পানি চুক্তি না হওয়ায় এ অবস্থা বুকে নিয়েই সময় পার করছে ব্যারেজটি। আর এতে রংপুর বিভাগের ৩৫টি উপজেলার কয়েক লক্ষাধিক কৃষক চাষাবাদ নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন ....
এবং
১৯৭৯ সালের ১২ই ডিসেম্বর লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী এলাকায় তিস্তা নদীর উপরে ১৫শ কোটি টাকা ব্যয়ে সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৩৫টি উপজেলার প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমি ইরি এবং বোরো মৌসুমে সেচ সুবিধার আওতায় আনার র্পূণ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
কিন্তু তিস্তা ব্যারেজের মাত্র ৯০ কিলোমিটার উজানে ভারতের গজলডোবায় নদীতে একটি বাঁধ নির্মাণ করে সেখানে ভারতের সুবিধা মতো পানি আটকে দেওয়া হয়। এতে করে পানির অভাবে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বাধাগ্রস্থ হয়ে পড়ে। ওই পরিস্থিতিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড মাত্র ৬৫ হাজার হেক্টর জমি সেচ প্রকল্পের আওতায় এনে প্রাথমিকভাবে ১ম পর্যায়ে সেচ কার্যত্রম শুরু করে।
পরবর্তীতে ১ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমি সেচ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই তা বন্ধ হয়ে যায়
ফলে তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার হেক্টর জমি সেচের অভাবে ইরি, বোরো মৌসুমে পড়ে থাকে। বিষয় গুলো নিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কয়েকবার উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। সর্বশেষ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গেলে বিষয়টি আবারো আলোচনায় আসে কিন্তু সেই সফরেও তিস্তার পানি চুক্তির কোন শুভ সংবাদ আসে নাই। এতে উওরের প্রায় অর্ধ কোটি মানুষের আশার তরী ডুবে যায়।
বর্তমান সরকার ২য় বার ক্ষমতায় এসেও তিস্তার পানি চুক্তি না হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষজন অনেকটা ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন। সেই সঙ্গে চরমভাবে র্মমাহত হয়েছেন বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ......... ইত্যাদি ইত্যাদি .........!
কিন্তু তাতে আমাদের কিবা এসে যায়! আমরা নাহয় পানি নিয়ে ভেল্কিবাজিতে তিস্তা পাড়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি ইত্যাদি বিতর্কে নাই বা গেলাম ইমেজ নষ্ট করতে!
তারচেয়ে আমরা বরং নগরের পানি সমস্যায় কষ্ট পাওয়া পাখিগুলোর পানির নিশয়তা নিয়া কথা বলি। আমরা যে সুশীল।।
>> ৬// আপনি প্রশ্ন পত্র ফাঁস নিয়ে কথা বলতে চান? প্রশ্ন পত্র ফাঁস করা বন্ধ করতে বলেন? প্রশ্নপত্র ফাঁস করা মানে এদেশের মেধা গুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া বলেন? অথচ যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়াকে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান "সম্পূর্ণ গুজব" বলেছেন তা অস্বীকার করতে চান, মাননীয় মন্ত্রিমহোদয়ের বক্তব্যকে 'মিথ্যাচার' বলেন?? আপনা এতো বড় ধৃষ্টতা!!
একে-৫৭ চেনেন তো?? আইসিটি এক্টের মাখন ধারা ৫৭র কি স্বাদ টেস্ট করতে চান???
অথচ সম্মানিত ব্লগ পাঠক এবং ব্লগার ভাইয়েরা আমার বলুন তো এমনটি কি জবাব হওয়াটা উচিত ছিল?!? বরং আমাদেরও বলতে ইচ্ছে করে আমাদের প্রতিটা বাংলাদেশী নাগরিকের প্রাণের দাবীতে বলতে ইচ্ছে হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সম্মানিত প্রিয় মন্ত্রিমহোদয় সমীপে এই আমাদের সবিনয় নিবেদন, যে আমরা বাংলাদেশের নাগরিক যেহেতু আপনাদের নির্বাচিত করেছি অতএব আমরা অবশ্যই আপনাদের পাশেই আছি, থাকবো, আপনারা শুধু আমাদের দাবী, দেশের প্রতিটা সাধারণ মানুষের প্রাণের অধিকারের দাবী গুলো আর দেশের বৃহৎ স্বার্থগুলো পূর্ণ করুন...
**পরিশিষ্ট কিছু কথা এবং সাম্প্রতিক অনলাইন এক্টিভিজমঃ
অনলাইন যেমন আমাকে দিয়েছে অনেক, তেমনি কেড়ে নিয়েওছে অনেক! এই অনলাইনে আজকে আমি আমার কথা বলতে পারবোনা! এই অনলাইনে আজকে আমার মত প্রকাশের কোন দাম তো দূরের কথা সুযোগই থাকবেনা, যদি তা হয় সুচিন্তিত কিংবা সত্যের পক্ষে বাক স্বাধীনতার পক্ষে আমার কোন মুক্তচিন্তা কিংবা মুক্তমত! কারণ আজকে আমার চিন্তা আমার না আমার মত আমার না মাতৃভাষা নিয়ে লাখো শহীদের প্রাণ আর রক্ত বিন্দুর বিনিময়ে পাওয়া আমার মুখের বুলিটুকুও আর বুঝি আমার না!! বরং তা নিয়ন্ত্রণের দাবীদার সরকার, বরং তার কার্যকারণ এর দাবীদার আমার কর্তৃপক্ষ বরং তার অনুমোদন এবং প্রয়োগের ক্ষেত্র বিবেচনারও দাবীদার আমার কর্তৃপক্ষ(!)
আজকে প্রতিটা শব্দ চয়নের আগে, প্রতিটা বর্ণ বিন্যাস করবার আগে,প্রতিটা কথা বলার আগে, প্রতিটা ব্লগ লেখার আগে, প্রতিটা ফেসবুক স্ট্যাটাস লিখার আগে আমার চিন্তা চেতনা এবং মস্তিষ্ক প্রক্ষালন , যাচাই এবং ধোলাই পূর্বক পারমিশান দেবেন ওই কর্তৃপক্ষ এবং তদোপরী আমার প্রতিটা তেতো সত্যের জন্য প্রণীত আইসিটি এক্টের ৫৭ ধারার কানা কারেন্ট জাল ছোপ হবার মত বন্ড সই আগেই করে রাখতে হবে! একে-৫৭ নির্ধারণ করবে আমার মুখের বুলির গতিবিধি এবং কার্যকারণ!!
অথচ এতো ভয়াবহ সূক্ষ্ম ছিদ্র যুক্ত ধাড়ালো সাইবার আইন তৈরির পরেও সাইবার ক্রাইম রোধ কি সম্ভব হয়েছে!? তাতো হয় ই নি বরং যে অসৎ উদ্দেশ্য ছিলো সচেতন নাগরিকের কন্ঠোরোধ তাই শুধু সম্ভব হয়েছে। নতুবা আমাদের কেনো এখনো এরকম নিউজ দেখতে হয় ??
বন্ধ হচ্ছে না সাইবার ক্রাইম!!
আজ আর কিছু বলার নেই আসলে! এতো কিছুর পর আজ শুধু সুশীল সমাজের,সজাগ সচেতন চিন্তা-চেতনাধিকারিদের নির্বাক নিঃস্পৃহ রঙ্গিলা অনলাইন এক্টিভিজমের নমুনা তাকায় তাকায় দেখি! থার্ড ক্লাস কন্ট্রাক্ট রাইটারদেরও আজকাল খুব একটা দেখা মেলেনা।
লীগ-শাহবাগ বনাম বাম-শাহবাগ নাচন-কোদন, প্রথম রাষ্ট্রপতির দ্বিতীয় জীবন, দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতির প্রথম জীবন, এভারেস্টের মাথায় কার কার বান্দর-হনুমান মুখের চেহারা দেখা গেছে আর মুসা ইব্রাহীম মশলায় রাঁধা নয়া রেসিপিতে আম্লিগ-বিম্পির পরকালিন ফায়েদা এবং দেশের অদূর ভবিষ্যতের সুদূর ভাবমূর্তি, খেলার মাঠে এফডিসি কর্তার স্ত্রীর কুকুরের গায়ে দেশের ভাবমূর্তি এবং এবং চেতনার লেহেঙ্গা পরিহিতা কসমোপলিটান সমাজের কোন সদস্য নিজের উচ্ছাস দমাতে না পেরে স্টেডিয়ামে দেশের ভাবমূর্তি নিজের ভাবমূর্তি আর কুকুরের ভাবমূর্তি গুলিয়ে এক পতাকার নিচে নিয়ে আসলেন -উহাই এখন মুখ্য আলোচনার এবং ব্রেইন খাটানোর বিষয়-কারণ ইহাতে দেশ আর জাতির অদূর না হউক সুদূর কল্যাণ নিহিত রয়েছে বোধহয়! এগুলি এখন অনলাইন এক্টিভিজমের মুখ্য আলোচ্য বিষয় এবং সচেতন ব্রেইনের বায়াসড চিন্তাধারার ভিন্নরূপ বটে!
কিন্তু, তাহাদের কলম কথা বলেনা, সীমান্তে বারংবার লাশ পড়লে , ১৩০০ বাঙালীর মৃত আত্মার অভিশাপ বিএসএফ এর বেয়নেটে খোঁচা খেয়ে বাবংবার রক্তাক্ত হয়ে ফিরে এসে তাদের মুক্ত বিবেকের সদর দুয়ারে কড়া নাড়লেও তারা তা শুনতে পান না! আমরা, নিউজ পেপারের চিপাচাপায় মাসখানেক পর হয়তো দেখতে পাই , বিভ্রান্ত হয়ে গরুচোর,লাকড়ি চোর ভেবে কুপিয়ে খুন করা বাংলাদেশীর ক্ষত-বিক্ষত লাশের অবশিষ্টাংশ ফেরত দেবে বিএসএফ!
ওই দেশবোদ্ধাদের কলম কথা বলেনা, বাংলাদেশের বুকের উপর দিয়ে সাড়ে ৪ শ বিঘা জমি নষ্ট করে খুঁটি পুঁতে বাংলাদেশেরই প্রাপ্য নদীর পানি দিয়া উৎপন্ন দেড় লক্ষাধিক মেগাওয়াট ভারতীয় ইলেক্ট্রিসিটি ২০ বছরের জন্য ফ্রি পাওয়ার ট্রান্সমিশন করিডোর করিডোর করে নিয়ে যেতে দেয়া হলে !!
ফি বিহীন ট্রানজিট যখন দিলাম একে একে যখন দিলাম স্থল আর নৌ করিডোর, তখন আজকে পেট্রো ডলারে ভাসা মিডল ইস্টের মত বন্ধুরাষ্ট্ররে "হাইড্রো ডলারে" ভাসাতে ওই ১ লাখ ২৬ হাজার ৫৮৮ মেগাওয়াটের জন্য নিশ্চিত নিরাপদ রুট স্বরূপ বিদ্যুৎ-করিডোরও আজকে দেবো সহজাত মহানুভবতায়ই!
বিদ্যুৎ করিডোর দিয়ে বাংলাদেশের ভূমি ব্যাবহার করে বাংলাদেশের উপর দিয়ে ঝুকি চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া ভারতীয় বিদ্যুৎ থেকে আমাদের জাতির উপকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার মত সময় বা প্রয়োজন বোধকরি আসেনি! আর আসলেও তার উত্তর দেবার মত প্রয়োজন বোধ কেউ করছেন না-জাতির দুর্ভাগ্য এখানটাতেই!
বিদ্যুৎ করিডোর নিয়ে বিস্তারিত পাবেন এখানে
এখানে “দেশের স্বার্থ” ইত্যাদি ইত্যাদি প্রশ্ন তোলা যেমন নিতান্তই নির্বুদ্ধিতা তেমনি, দাদাদের সাথেও বেয়াদবিও বৈকি! আর এইসব তুচ্ছ জিনিস নিয়ে কলম চালানোর সময়টা কই, যেখানে বৃষ্টির কাছে কবিতা লেখা আর বাম-শাহবাগ নাচন-কোদনের মত বৃহৎ ইস্যু পড়ে রয়েছে!
ইন্টার-ন্যাশনাল রিভার্স এক্ট অমান্য করে একের পর এক মিথ্যা সান্তনা চুক্তির নামে বাংলাদেশের ন্যায্য পানি ব্যাবহার করে হিমালয় প্রবাহে বসানো নির্মাণ সম্পন্ন এবং নির্মাণাধীন ৪২৯ হাইড্রো পাওয়ার প্ল্যান্ট এর উৎপন্ন ওই ভারতীয় বিদ্যুৎ কেন ভারত স্বীয় ভূমির উপর দিয়া নিচ্ছেনা তা নিয়ে প্রশ্ন উথাপন হবেনা! ২০১০ এর ইন্টার ন্যাশনাল রিভার্স ইমপ্রোভমেন্ট এক্ট কি বলে দেখুন...
কেনো শিলিগুড়ির মত 'চিকেন-নেকে' তাদের পোষাচ্ছেনা কেনো ইলেকট্রিক রেডিয়েশানের ঝুঁকিতে বাংলাদেশকেই বেঁছে নেয়া হচ্ছে আর পানির অভাবে ৮০ হাজার হেক্টর জমির বোরো আবাদ নষ্টে কৃষকের মাতমের পরে, গজলডোবা ব্যারেজের সব গেট বন্ধ করে দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার অব্যাহতই রয়ে যাচ্ছে আর কেনো বাংলাদেশের মাটি স্পঞ্জের মত চুষে উৎপন্ন ইলেক্ট্রিসিটি বিনা শর্তে পশ্চিমবঙ্গে পাঠানোর চুক্তির হয়, খুঁটি গাড়তে উঠেপড়ে লেগে যায় আমাদের পাওয়ার গ্রিড কম্পানি(পিজিসিবি) আর তারপর প্রশ্ন উঠলে আমাদের বিদ্যুৎ সচিবেরা বলেন, "দেশের লাভক্ষতির হিসাব এখনই কষা হয়নি"! -এগুলো নেহাতই অপ্রীতিকর এবং অশোভন টপিক তাদের কলমে ওঠার মত!
ভারতের "মাউন্টেইন অব কনক্রিট : ড্যাম বিল্ডিং ইন দ্য হিমালয়াস" শীর্ষক গবেষণায় প্রকাশ হবে
"The dams’ reservoirs and transmission lines will destroy thousands of houses, towns, villages, fields, spiritual sites and even parts of the highest highway of the world, the Karakoram highway & the regions belonged to Bangladesh currently.
The abrupt rise of the Himalayan Mountains from less than 500 meters to more than 8,000 meters results in a diversity of ecosystems that range, in only a couple of hundred kilometers, from alluvial grasslands (among the tallest in the world) and
subtropical broadleaf forests along the foothills to temperate broadleaf forests in the mid hills, mixed conifer and conifer forests in the higher hills, and alpine meadows above the treeline."
"এ ধরনের বাঁধ নির্মিত হলে হিমালয় অঞ্চলের পরিবেশে মারাত্মক প্রভাব পড়বে যেমন, জীববৈচিত্র্যের প্রতি হুমকি,টেকটোনিক প্লেটের নিম্ন অবস্থান,ভূ-তাত্ত্বিক ফাটল,উজানে পলি জমা এবং বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ভূমি উর্বরতা হারানো,অতি বৃষ্টি ভূমিকম্পের সম্ভাবনা অতিমাত্রায় বৃদ্ধি এবং মাঝেমধ্যে বাঁধ ভেঙে বিশাল অঞ্চল প্লাবিত হবে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ এবং এর অধিভুক্ত এলাকাগুলো। এমনকি বাঁধের কারণে উষ্ণতা বেড়ে পৃথিবীর মিষ্টি পানির আধার হিসেবে পরিচিত হিমালয়ের বরফ গলে গোটা বাংলাদেশ অঞ্চল প্লাবিতও হতে পারে"
আর আমাদের বিদ্যুৎ বিভাগ জানাবে, সরকার তাদেরকে করিডোর দিতে সম্মত হয়েছেন এবং 'হাই ভোল্টেজ পাওয়ার ট্রান্সমিশন করিডর' নামের এ সঞ্চালন করিডরের রুট ঠিক করাসহ বিভিন্ন বিষয় চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে জেটিটি(জয়েন্ট টেকনিক্যাল টিম) আর সচিব বলবেন, "আসলে বিষয়টিতে এখনই দেশের কোন লাভ-লোকসানের হিসাব কষা হয়নি, যেহেতু মাল্টিপল লাইন হচ্ছে আমরা বিদ্যুৎ পাবো"!
বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইডিবিসহ দশোধিক বিশাল প্রতিষ্ঠানের ৯ হাজার ৬৫০ কোটি ডলারের মাল্টি টার্মিনাল বাইপোল ট্রান্সমিশান লাইনের লোহা লক্করের বোঝা বহনের জমি দিয়া, খুঁটি দিয়া শেষে অর্জন হবে কিনা শ-খানেক মেগাওয়াট বিদুত-যাও ওই সাব-স্টেশান গুলি থিকা কিনে নিতে হবে বাংলাদেশের! আর দুইদিন পরে যে ওই খুঁটি পাহাড়ার দাবীর নামে বন্ধুরাষ্ট্র স্বীয় রক্ষীবাহিনী মোতায়েন পূর্বক দেশের ভেতরে নিজের সমরাস্ত্র প্রদর্শনী করবেনা -তার নিশ্চয়তা কি বিদ্যুৎ বোর্ডের সচিব সাহেব দেবেন? না সম্মানিত সুশীল এক্টিভিস্ট এবং কন্ট্রাক্ট রাইটার থার্ড জেনারেশান সাইবার যোদ্ধারা কলমে তুলবেন!?
তিস্তার পানির দাবীতে লংমার্চ হবে , নিউজ হেডিং হবে বহিঃ ও আন্তঃদেশীয় অনাচারে ভরাট সুরমা কুশিয়ারাসহ বহু নদীর উৎসমুখ,বিলুপ্তির পথে ৬৬ নদী,
স্মরণকালের ভয়াবহ পানি সঙ্কটের কবলে তিস্তা
ইতিপূর্বে তিস্তায় শুষ্ক মৌসুমে সর্বনিম্ন পানির পরিমাণ ছিল ৮শ কিউসেক। আর সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তিস্তায় পানির প্রবাহ এখন ৫শ কিউসেকেরও নিচে-যা দেশের কৃষির জন্য অশনিসংকেত-আর আমাদের সুশীল সচেতন সমাজকে পাওয়া যাবে নদীর কাছে স্বীয় আকুলতা-প্রেম-সৃতি গুলিয়ে কবিতা লিখতে!
১০০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ধাপ্পাবাজি জনগনের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করতে হাতিরঝিলে আলোকউৎসব করে রেকর্ড করা হয়! রেকর্ড হয়না, ভারত থেকে ভাড়ায় আমদানির নামে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দের পরও বিদ্যুৎ নামক সোনার হরিণ রূপকথাই থেকে গেলেও!
দফায়দফায় বরাদ্দ দেয়া এই কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট গুলোর প্রায় কোনটাতেই সার্বজনীন কোন পন্থায় কিংবা টেন্ডারের মাধ্যমে চুক্তিতে যাওয়া হয়নি!-যেটা হয়েছে তা হইলো পছন্দমত আইন করে আইন ভাঙ্গার পাঁয়তারা! আর জনগন জানলো,বিরাজমান বিদ্যুৎ ঘাটতি এবং সম্ভাব্য চাহিতা মেটানোর জন্যই বিভিন্ন মেয়াদী এবং কার্যকর চুক্তিতে ভাড়া নেয়া হচ্ছে এসব কুইকরেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট!
এই মূলার নামে দফায় দফায় বিদ্যুৎ বিল বাড়ানো হয় অথচ আমরা খবরে পাই,
কুইক রেন্টালের ভর্তুকি যোগাতে দফায় দফায় মূল্য বৃদ্ধি: বিদ্যুৎ গ্রাহকদের ৪১ হাজার কোটি টাকা প্রাইভেট কোম্পানির পকেটে;সরকারি প্রতিষ্ঠান পিডিবি হয়ে পড়ছে ঠুটো জগন্নাথ
ভারত সরকারের সাথে আমাদের সরকার এপর্যন্ত যত চুক্তি করেছেন তার ইয়ত্তা নেই। সেসব বন্ধুত্ব পূর্ণ চুক্তির সামান্য কয়েকটার নমুনা দেখুন , অথচ কয়টা চুক্তি আজ পর্যন্ত আলো নিয়ে এসেছে দেশের মানুষের জন্য- তা প্রশ্নের দাবীদার বৈকি।।
যাহোক, আমরা সব চুক্তির বিচার বিশ্লেষনে যাচ্ছিনা, তার সময় ও নেই! শুধু দেখুন, এক বিদ্যুৎ নিয়ে যেসব চুক্তির আশা মানুষ পেয়েছে আর যতটুকুর আলো আমাদের চোখ পর্যন্ত পৌঁছেছে তার খানিকটা বিশ্লেষণ এবং এই বিদ্যুৎ করিডোর নিয়ে সামান্য আলোচনা। এই করিডোর কি ভারতীয় আধিপত্তের নয়া সংযোজন নয়??
স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের নামে বন্ধুরাষ্ট্রের সাথে ১৬২ ছিটমহল বিনিময়ের প্রটোকল সম্পাদনা হইলে সে চুক্তি "এক যুগান্তকারী অর্জন এবং দুই দেশের বন্ধুত্বের অমর স্মারক"-হিসেবে বারংবার মিডিয়া কাভারেজ পায় এবং কন্ট্রাক্ট রাইটার দের কলমে ওঠে! কিন্তু বন্ধুরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে অনুমোদনের জন্য পর্যন্ত উপস্থাপন পর্যন্ত না হইলেও তা নিয়া মিডিয়া কাভারেজ কিংবা সুশীল সমাজের কলম চলতে দেখি না!
বরং পরবর্তীতে জানা যায় তিস্তা ও স্থলসীমান্ত চুক্তি থেকে ইউটার্ন
ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ককে ভদ্রতা করে বলা হয় অসম বা একপক্ষীয় সম্পর্ক। আদতে এটি বন্ধুত্ব, নাকি নতজানুমূলক সম্পর্ক; তা নিয়েও প্রবল বিতর্ক আছে দেশে। আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে, এই একতরফা বা নতজানুমূলক সম্পর্ক নিয়েই বড়াই করে একে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে অর্জন হিসেবে অভিহিত করতেও পিছপা হন না সরকারের লোকজন- হায় সেলুকাস !!
ওই দেশবোদ্ধা-পরিবেশ বোদ্ধাদের হাপিত্যেশ ক্রন্দন আর অশ্রু বিসর্জনে অনলাইন ফুটপাত সিক্ত হবে সোহরাওয়ার্দী আর বিজয়নগরের গাছ কাটা পড়লে, কিন্তু সুন্দরবনের কাঠ লাকড়ি হইলে তাদের কলম কথা বলবেনা, তাদের কীবোর্ড হিট করবে না
ব্লগ কিংবা আর্টিকেল প্রকাশ হবে বটে "রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র, এর উপযোগিতা, ভয়াবহতা এবং নির্মম বাস্তবতা"
কিন্তু এরপরেও
সবরকমের জানা ক্ষয়ক্ষতি এবং পরিবেশবিদদের সতর্কবাণী সত্ত্বেও সুন্দরবন ধ্বংসের অগ্রিম হাতিয়ার স্বরূপ ভারতীয় এনটিপিসির সাথে সরকারের জোরপূর্বক রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ সর্বাধিক অগ্রাধিকার সহকারে এগিয়ে চললেও ! আমাদের সুশীল সমাজের কলমে আসবে সুন্দরী গাছের রং রুপ সৌন্দর্য কিন্তু আসবেনা মাত্র ওই বিশ্ব নন্দিত নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের আঁধারের ১৪ কিলো মাত্র দূরে পশুর নদীর তীরে ১৮৩৪ একরে দ্রুত বেগে গড়ে ওঠা ওই মৃত্যু প্রকল্প!
তারপরও আজ আমরাই নাকি সুশীল দেশপ্রেমিক, আমরাই নাকি দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা, আমরাই দেশবোদ্ধা এবং বুদ্ধিজীবী, আমাদের হাতের কলমেই নাকি দেশ কথা বলছে কথা বলছে মানুষ...!!
আজকে সত্যিই বড় অথর্ব মনে হয় নিজেকে, সত্যিই কিছু বলার নেই... ছাগ এবং ছাগুত্ব অনলাইনে প্রশ্রয় দেয়া যেমন আজন্ম ঘৃণা করি এবং করতাম তেমনি এখন এ মুহূর্তে নির্বিকার সুশীল সমাজের এহেন নির্বুদ্ধিতার আর আয়েশি অনলাইন এক্টিভিজম আমাকে আরেকটা বার শুধু স্মরণ করিয়ে দেয় দিচ্ছে যে খুব একটা কিছু বোধহয় আর চাইবার নেই, আশা করবার নেই পাবার নেই এই অনলাইন থেকে, আজ বুঝি সন্ধ্যাই ঘনিয়ে এসেছে, আজ বুঝি ছাগ আর মূর্খের ব্যক্তিত্তহীন বুলি-প্রতাপ আর তর্জন গর্জন সহ্য করে যাবারই সময় এসেছে! সুশীল সমাজের ব্রেইন ওয়াসড হয়ে বায়াসড লেখালেখি দেখবার সময় এসেছে! সময় এসেছে বুঝি বিদায়ের! আজ শুধু বলতে ইচ্ছা হয়...
ষোল কোটি সন্তানের হে গর্বিত জননী, রেখেছ 'সুশীল' করে, 'মানুষ' করোনি!!!
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১:১৬