somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ: কী ঘটছে ইরাকে?

২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই পোষ্টের কোন লেখাই আমার না। শুধু কপি পেষ্ট করেছি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ: কী ঘটছে ইরাকে?
June 21, 2014 at 11:25am

পূর্বাভাস

গত ৯ জুন ২০১৪-তে ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুলের নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহীদের হাতে যাওয়ার পর বিশ্বমিডিয়ায় ইরাক আবারও ব্যাপক আলোচনায় উঠে আসে। এর আগ পর্যন্ত ইরাক বিশ্বমিডিয়া থেকে প্রায় হারিয়েই যেতে বসেছিল। তাই মসুলের পতনের পর আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে এমনকি বিদ্রোহী গ্রুপটির নাম নিয়েও বিভ্রান্তি দেখা গেছে। আইএসআইএস নাকি আইএসআইএল - এটাও ঠিক করতে পারছিল না প্রভাবশালী মিডিয়াগুলো!

তবে বিশ্বমিডিয়ায় অব্যাহতভাবে আসতে থাকে আইএসআইএস/আইএসআইএল মসুলের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক থেকে কত মিলিয়ন ডলার নিয়ে গেল, বাগদাদের পথে কতটা এগিয়ে গেল, কী হতে পারে ইরাকের ভবিষ্যৎ ইত্যাদি আলোচনা।

বাংলাদেশের মিডিয়ায় আন্তর্জাতিক বিভাগটি থাকে সবচেয়ে অবহেলিত। তাই আর দশটি আন্তর্জাতিক ইস্যুর মতো ইরাক বিষয়েও বাংলাদেশের মিডিয়ায় অতি সংক্ষিপ্ত, বিলম্বিত, ভাসা ভাসা ও পরস্পরবিরোধী বিবরণ প্রকাশিত হতে দেখা যায়।

আইএসআইএস/আইএসআইএল কী?

আল কায়েদা নেতা, জর্ডানি নাগরিক আবু মুসাব আল জারকাওয়ী [মূল নাম: আহমাদ ফাদিল আল নাযাল, জন্ম: ৩০ অক্টোবর ১৯৬৬, জর্ডানের জারকা শহরে] ২০০৩ সালের পর ইরাকে মার্কিনবিরোধী প্রতিরোধ যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় আলোচনায় আসেন। ১৯৮০-এর দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েতবিরোধী যুদ্ধে অংশ নিতে গিয়ে তিনি ওসামা বিন লাদেনের সাথে পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ হন।

জারকাওয়ী ২০০০ সালের দিকে জামাতুল তাওহীদ ওয়াল জিহাদ নামে একটি সশস্ত্র সংগঠন গড়ে তোলেন। ২০০৪ সালের অক্টোবরে জারকাওয়ী আল কায়েদার তত্কালীন শীর্ষনেতা ওসামা বিন লাদেনের বাইয়াত [আনুগত্যের শপথ] নেন। তখন জারকাওয়ী তাঁর সংগঠনের নাম বদলে রাখেন তানজিম কায়দাতুল জিহাদ ফী বিলাদুল রাফিদায়িন [The Organization of Jihad's Base in the Country of the Two Rivers] - যেটি মূলত আল কায়েদা ইন ইরাক নামেই পরিচিত হয়ে ওঠে।

জারকাওয়ীর সংগঠন ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে জাইশুল তাইফা আল মানসুরা, কাতবিয়ান আনসারুল তাওহীদ ওয়াল সুন্নাহ, সারায়-উল-জিহাদ, আল গুরাবা ব্রিগেড ও আল আহওয়াল ব্রিগেড নামের আরো পাঁচটি সশস্ত্র সংগঠনের সাথে একীভূত হয়ে গঠন করে মজলিশ আল শুরা আল মুজাহিদীন ফিল ইরাক।

ওই বছরের ৭ জুন এক মার্কিন বিমান হামলায় জারকাওয়ী ইরাকে নিহত হন। তাঁর মৃত্যুর পর ২০০৬ সালের ১২ অক্টোবরে মজলিশ আল শুরা আল মুজাহিদীন ফিল ইরাক আরো চারটি সশস্ত্র সংগঠনের কাছ থেকে বাইয়াত [আনুগত্যের শপথ] গ্রহণ করে। বেশ কিছু ইরাকি গোত্রনেতাও সেখানে বাইয়াত দেন। পরদিন ১৩ অক্টোবর ২০০৬ তারিখে ঘোষিত হয় "দাউলাতুল ইসলামিয়া ফিল ইরাক" [Islamic State in Iraq]। আল কায়েদা নেতা আবু উমর আল বাগদাদীকে আমির হিসেবে ঘোষণা করে সেদিন একটি সরকার গঠিত হয়।

তবে অন্যান্য জিহাদিস্ট গ্রুপ, বিশেষত আল কায়েদার বিশ্বনেতৃত্ব এই কথিত "রাষ্ট্র" বা "সরকার" গঠনকে স্বীকৃতি দেননি। "দাউলাতুল ইসলামিয়া ফিল ইরাক" [Islamic State in Iraq - সংক্ষেপে ISI] শুরুতে ইরাকের খুব ছোট ভূ-খণ্ডে শরীয়াহ আইনের ভিত্তিতে নিজস্ব সরকার পরিচালনা শুরু করে। প্রশাসন, আদালত, পুলিশ/সেনাবাহিনী সবই ছোট আকারে গঠিত হয়।

২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল ISI-প্রধান আবু উমর ইরাকের তিকরিতে এক মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হন। এর পর আবু বকর আল বাগদাদী [মূল নাম (অনিশ্চিত): ইবরাহীম আওয়াদ ইবরাহীম আলী আল বাদরী, জন্ম: ১৯৭১, ইরাকের সামারা শহরে] নিযুক্ত হন ISI-এর প্রধান।

২০১১ সালে সিরিয়ায় গণঅসন্তোষ সৃষ্টি হলে ISI সিরিয়ায় বাশার সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। সিরিয়ার কিছু এলাকা ISI-এর নিয়ন্ত্রণে এলে ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল আবু বকর আল বাগদাদী ঘোষণা দেন যে, ISI-এর নাম এখন থেকে "দাউলাতুল ইসলামিয়া ফিল ইরাক ওয়াল শাম" [Islamic State in Iraq & Sham - সংক্ষেপে ISIS] হবে।

আরবিতে "শাম" বলতে প্রাচীন বৃহত্তর সিরিয়াকে বোঝায়। বর্তমান সিরিয়া, জর্ডান, সাইপ্রাস, ইসরাইল, ফিলিস্তিন, লেবানন ও দক্ষিণ তুরস্ক মিলে সেই "শাম" অঞ্চল। বৃহত্তর সিরিয়া অঞ্চলকে অর্থাৎ "শাম" অঞ্চলকে ইংরেজিতে বলে "Levant" [ভারতকে India বলার মতো]। ফলে "দাউলাতুল ইসলামিয়া ফিল ইরাক ওয়াল শাম"-এর প্রকৃত ইংরেজি হবে Islamic State in Iraq & the Levant, সংক্ষেপে ISIL। এ-কারণেই আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে ISIS ও ISIL দুটোই উল্লেখিত হচ্ছে।

আল কায়েদার সাথে ISIS-এর দ্বন্দ্ব

আবু বকর আল বাগদাদী ২০১৩ সালের এপ্রিলে ISIS ঘোষণা করে বলেন যে, সিরিয়ায় বাশার সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত "জাবহাত আল নুসরাহ" [Al-Nusrah Front] এখন থেকে বিলুপ্ত হলো ও ISIS-এর সাথে একীভূত হলো।

কিন্তু "জাবহাত আল নুসরাহ"-র নেতা আবু মুহাম্মদ আল-যাওলানি এই ঘোষণা মানেননি এবং তিনি আল কায়েদার বিশ্বনেতা আয়মান আল জাওয়াহিরির কাছে এ-বিষয়ে প্রতিকার চান। জাওয়াহিরি এ-সময় আবু বকর আল বাগদাদীকে নির্দেশ দেন ISIS -কে ইরাকেই সীমাবদ্ধ রাখতে এবং নুসরাহ ফ্রন্টকে আলাদাভাবে সিরিয়ায় কাজ করতে দিতে।

কিন্তু জাওয়াহিরির এই নির্দেশ আবু বকর আল বাগদাদী মেনে নেননি।
http://tinyurl.com/k3h8zbj

ফলে সিরিয়ায় ISIS ও নুসরাহ ফ্রন্টের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। গত জানুয়ারিতে সিরিয়ার রাকা ও দাইর আজ্জর শহরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শত শত সদস্য নিহত হয় ও বহু বেসামরিক লোক গৃহহারা হয়।

আল কায়েদার বিশ্বনেতৃত্ব আবু মুসাব আল জারকাওয়ীর আমল থেকেই শিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও জিহাদি অপারেশনের রক্তক্ষয়ী দৃশ্যগুলো অনলাইনে পোস্ট করে জনমনে জিহাদের নেগেটিভ ইমেজ সৃষ্টির বিষয় নিয়ে ইরাকি সশস্ত্র গ্রুপগুলোর ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। তার ওপর এই ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধের প্রেক্ষিতে শেষমেষ গত ফেব্রুয়ারিতে ISIS-এর সাথে আল কায়েদা তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করে।
Click This Link

ISIS-এর মদদদাতা কারা ও উদ্দেশ্য কী?

আল কায়েদার সাথে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন ওঠে, ISIS তাহলে কাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত?

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি বরাবরই অভিযোগ করে এসেছেন, ISIS চলছে সৌদি আরব ও কাতারের মদদে।
http://tinyurl.com/lp5gu6l

গ্লোবাল রিসার্চের সম্পাদক, আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশিষ্ট বিশ্লেষক প্রফেসর Michel Chossudovsky-এর মতে, সৌদি ও কাতারের মাধ্যমে আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই ISIS-কে দিয়ে খেলাচ্ছে:

"The ISIS is not an independent entity. It is a creation of US intelligence. It is a US intelligence asset, an instrument of non-conventional warfare."
http://tinyurl.com/lpczgac

এই মতের সমর্থক বিশ্লেষকেরা মনে করেন, মার্কিনীরা যুগোস্লাভিয়াকে ভেঙে যেভাবে ছোট ছোট জাতি-রাষ্ট্র তৈরি করেছে, সেভাবেই ইরাক ও সিরিয়াকে ভেঙে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্র বানানোর জন্য ISIS-কে ব্যবহার করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
Click This Link

ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল মালিকি ISIS-এর বিরুদ্ধে মার্কিন সাহায্য চাইলে বারাক ওবামা জানিয়েছেন, "যখন প্রয়োজন হবে তখনই ‘সুনির্দিষ্ট বিমান হামলা’ শুরু করতে প্রস্তুত ওয়াশিংটন। তবে স্থলবাহিনী পাঠিয়ে ইরাকে নতুন করে কোনো যুদ্ধে না জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র।"

ISIS-কে তথাকথিত "সুন্নি বিদ্রোহী" আখ্যা দিয়ে পশ্চিমা রাষ্ট্র ও মিডিয়া খুব সফলভাবেই মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে মুসলিমদের লড়াইটিকে ভিন্ন পথে ঠেলে দিতে পারছে। ISIS-এর মাধ্যমে কথিত শিয়া-সুন্নি বিভেদটি উস্কে দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিমদের মধ্যে বিভক্তি আরো গভীর করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকেরা আরো মনে করেন, কিছু এলাকায় ISIS-এর শাসন টিকেয়ে ISIS-এর মাধ্যমে একটি কথিত "খিলাফত" ঘোষণা করিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ সারা পৃথিবীর মুসলিমদের মনে খিলাফতের একটি নৃশংস, নিষ্ঠুর নেগেটিভ ইমেজ তৈরিতেও তত্পর মার্কিনীরা। আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকেও এভাবেই পাকিস্তানের মাধ্যমে পরোক্ষ ইন্ধনে ক্ষমতায় বসিয়ে মার্কিনীরা দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলামী রাষ্ট্রের ব্যাপারে "তালিবান হরর" তৈরিতে সফল হয়েছিল। একই প্রজেক্ট ভিন্ন আঙ্গিকে মধ্যপ্রাচ্যে বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সিআইএ - এমনটাই বিশ্লেষণ কিছু বিশ্লেষকের।

সম্ভাব্য পরিস্থিতি

ইরাককে শিয়া, সুন্নি ও কুর্দিদের মধ্যে তিনটি আলাদা রাষ্ট্রে বিভক্ত করার পরিকল্পনা মার্কিনীদের অনেক পুরনো।

ISIS নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো সেই "সুন্নি রাষ্ট্র" হতে চলেছে - নাম হিসেবে "খিলাফত" শব্দটি এনে খিলাফত আদায়ের রাজনৈতিক সংগ্রামটিকে বেকায়দায় ফেলার সুযোগ বোধ হয় হাতছাড়া করা হবে না।

নুরি আল মালিকিরা বাগদাদসহ শিয়া অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে "শিয়া ইরাক" সরকার চালাবেন।

কুর্দিরা চলতি মাসে কিরকুক দখল করে নিয়েছে। একটি "কুর্দি ইরাক"ও সেক্ষেত্রে বাদ যাবে কেন?
http://tinyurl.com/ppvtr9x

অর্থাৎ ইরাক খুব শিগগিরই তিনটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হতে পারে এবং এর মধ্যে একটি হতে পারে "সুন্নি খিলাফত"!

আল্লাহ সর্বজ্ঞ।
**** **** ****
২১ জুন ২০১৪

[বি.দ্র: লেখকের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মতাদর্শ বা ভাবাবেগ দ্বারা রাজনৈতিক বিশ্লেষণ প্রভাবিত নয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ হলো রাজনৈতিক কাঠামো, ব্যবস্থা, দল ও অন্যান্য ফ্যাক্টরগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে একটি সম্ভাব্য আগাম ভাষ্য।

Click This Link

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ কোনো জ্যোতিষশাস্ত্রের অবৈজ্ঞানিক ভেলকি নয় কিংবা এর প্রেডিকশনগুলো রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলাফলের মতো অভ্রান্তও নয়।

আল্লাহই ভবিষ্যতের একমাত্র নিয়ন্ত্রণকারী।


******************************************

দ্বিতীয় পর্যালোচনা

The Imploding of America's Iraq
June 16, 2014 at 5:21pm

[এটি সম্প্রতি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আদনান খানের আর্টিকেল "the Imploding of America's Iraq" থেকে বাংলা করা হয়েছে। অভিজ্ঞতার অভাব, স্বল্পজ্ঞানে, এবং দ্রুততার কারনে আগেই ক্ষমা প্রার্থি। যেকেউ এর কোনরূপ ভুল সংশোধনের জন্যে বিনা সংকোচে জানাতে পারেন। সংশোধনযোগ্য]

ইরাকী প্রেসিডেন্ট নুরি আল মালিকি ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া কর্তৃক ইরাকের বড় শহরগুলো দখলের প্রেক্ষিতে গত ১০ জুন সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেন এবং পার্লামেন্টে জরুরি অবস্থা জারির আহবান জানান। বিশ্বমিডিয়া গুলোও ক্রমাগতভাবে আইএসআইএস(ISIS) কর্তৃক মসুলের চমকপ্রদ দখলের খবর গলদকরণ করিয়ে যাচ্ছে। ISIS এর মসুল এবং পরবর্তীতে তিকরিত দখলের ঘটনা অনেককেই স্তম্ভিত করে দিয়েছে। যেহেতু আইএসআইএস(ISIS) এর সহস্রাধিকের কিছু বেশী যোদ্ধা ইরাকী নিরাপত্তা বাহিনীর ১০০০০ সদস্যকে তাড়িয়ে দিয়েছে[১]। এক বর্ননাকারী এভাবে অবস্থার বর্ণনা দিচ্ছিলেনঃ “ISIS, আল-কায়দা থেকে বিশ্বের সবচাইতে ক্ষমতাশালি ও কার্যকর জিহাদি গ্রুপের কর্তৃত্ব নিয়ে নিয়েছে। এটা এখন মুক্ত ও স্বাধীনভাবে ইরাকের পশ্চিমাঞ্চল ও সিরিয়ার পূর্বাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করতে সক্ষম এবং এটাকে সামরিকভাবে সফল জিহাদি আন্দোলনে পরিণত করেছে [২]। what is taking place in Iraq is the unraveling of the American constructed political architecture and this can be seen from a number of perspectives.

যেখানে পশ্চিমারা মাত্র ইরাকের গোলযোগের ব্যাপারে সজাগ, সেখানে বেশকিছু বছর আগ থেকেই অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছিলো এবং বর্তমানে ইরাকের কেন্দ্রিয় ও উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ অংশ হারিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ফাল্লুজা ও আনবারের প্রদেশ ছিল আমেরিকার বিরুদ্ধে জেহাদের প্রাণ কেন্দ্র। ইরাকি সরকার সুন্নিদের মূল ক্ষমতা থেকে সরিয়ে রেখেছিল। এটাই সুন্নি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে বিগত দিনের প্রতিবাদ ও সরকারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আরো উত্তেজনা বাড়িয়ে দিয়েছিল। নুরি আল মালেকি ডিসেম্বর ২০১৩ সালে দক্ষিণাঞ্চল থেকে নিয়ে আসা সামরিক বাহিনীকে আনবার প্রদেশে অভিযানের আদেশ দেন। যার দরুণ সেখানে শত শত বেসামরিক নাগরিক মারা যায়। আড়াই বছর আগে আমেরিকার ইরাক ত্যাগের সময়, মালেকি ক্ষমতাকে তার নিজের পরিমন্ডলের মধ্যে কেন্দ্রিভূত করেন। সুন্নিদের রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেন, ব্যাপক ধর-পাকড় ও নির্যাতন শুরু করেন। বস্তুত মালিকীর সমর্থনের ভিত্তি ছিল দশকের পর দশক ধরে অত্যাচারীত ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলের শীয়া গোত্রসমূহ, যারা সংখ্যালঘু সুন্নিদের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখে।

অনেক সুন্নি গোত্রসমুহ ২০০৮ সালে ইরাকি সরকার ও আমেরিকার সাথে মিলে আল-কায়দার বিরুদ্ধে লড়াই করে। ওসামা আল-নুযাইফা যিনি ইরাকের পার্লামেন্টের স্পিকার এবং প্রভাবশালী সুন্নি রাজনৈতিক নেতা, তিনি বলেন, “আল-কায়দার বিরুদ্ধে জয়ের পর ঐ সমস্ত গোত্র নেতাদের ভাগ্যে উপহার হিসেবে জুটেছিল বেতনকর্তন,গুপ্তহত্যা এবং বদলি”[৩]।

তিনি আরো বলেন, “তাদের সফলতার পর সুন্নি যোদ্ধাদের রাজপথে আল-কায়দার প্রতিহিংসার মুখে ছেড়ে দেয়া হয়েছিল এবং সরকারের তরফ থেকে অবহেলা করা হত” [৪]।

ঘটনা উত্তরোত্তর আরো বৃদ্ধি পাচ্ছিলো যখন আমেরিকা তাদের সৈন্যসংখ্যা কয়েক হাজারে নামিয়ে এনেছিল। আমেরিকার প্রস্থানের পর, মালেকি চুক্তিভঙ্গ করে সাহওয়া (Sahwa) মিলিশিয়া বাহিনীকে ভেঙ্গে দিয়ে তাদের অনেককে নিয়মিত সেনাবাহিনীতে একিভূত করেন। তিনি সরকারকে সুন্নিমুক্ত করা শুরু করেন এবং ২০১৩ সালে রামাদি ও ফাল্লুজাতে সুন্নিদের শান্তিপুর্ন প্রতিবাদকে গুড়িয়ে দেন। অনেক প্রাক্তন সাহওয়া(Sahwa) ব্যক্তি হতাশাগ্রস্থ হয়ে ISIS-এ যোগ দেন। বিগত ৬ মাস পূর্বে ISIS বাগদাদ থেকে একঘন্টার পথ দূরে ফাল্লুজা দখল করে, রামাদি’র অংশবিশেষ এবং আনবার প্রদেশের রাজধানীও তাদের আয়ত্তে নিয়ে নেয় এবং তারা সামারা’র জন্য লড়াই করছে।

যখন মাসুলের পতন ঘটে ততদিনে আনবার প্রদেশের নিরবিচ্ছিন্ন নিয়ন্ত্রন ISIS নিয়ে নেয়। ISIS এরি মধ্যে তাদের প্রভাব ও শক্তি পার্শ্ববর্তী নিনেভি(Nineveh) প্রদেশে বিস্তার করে নেয়, যার রাজধানী হচ্ছে মাসুল। যখন ISIS শহর ও এর চারপাশের গ্রাম হঠাৎ দখল করে নেয়, তখন ইরাকী নিরাপত্তা ফোর্স রাজধানী বাগদাদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। Iraqi security forces in mosul comprised a full Iraqi Army division supplemented by a federal police motorized division. ঐ সৈন্যরা তাদের অস্ত্র ফেলে দিয়ে সাধারন নাগরিকের পোশাকে পালিয়ে যাওয়া জনসাধারনের সাথে মিশে যায়[৫] ।

অল্প কিছু যোদ্ধার কাছে হেরে যাবার সংবাদ দ্রুত অন্যান্য ইউনিটে ছড়িয়ে পড়ে এবং নিনেভাহ্‌'র প্রায় সমস্ত composition এবং ট্রাইগ্রিস অপারেশনাল কমান্ড পুরোদমে পশ্চাদপসরণ শুরু করে। এটা ISIS এর সাথে নাক্সবন্দি আর্মি, জামাত আনসার আল-ইসলাম এবং জইশ আল-মুহাজিরীনদের দ্রুত দক্ষিণ ও পূর্বে কোনরূপ বড়-সড় প্রতিরোধ ছাড়াই বিস্তারে সহায়তা করে। ISIS ইরাক জুড়ে সফল হয়,যেহেতু তারা তাদের গেরিলা আক্রমণের সঠিক ব্যবহার করে, ইরাকি নিরাপত্তা বাহিনীকে ক্রমাগত চাপে রাখে এবং ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তারা তাদের পরিকল্পনায় কৌশলী ছিল, নিরাপত্তা বাহিনী যেখানে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল সেখান থেকে চলে গিয়ে তারা অপেক্ষাকৃত দূর্বল জায়গা বেছে নিত। এছাড়া তারা সিরিয়া সীমান্তের সুবিধাও গ্রহণ করেছিল, যেখানে মুক্তভাবে তারা সৈন্য ও রশদ বহন করতো। It took the coalition troops many years, with significant tribal support to drive out the resistance from the Anbar province and Iraq’s northern areas. However in the matter of a few months, 5000 fighters or so have undone all that work. এর কারন ছিল কেন্দ্রিয় সরকার এবং তাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে জনগন তাদের শত্রু এবং ISIS কে মুক্তিদাতা হিসেবে দেখে। মসুলের অনেকেই বলেন তারা ISIS এর চাইতে সরকারকেই বেশী ভয় করে।[৬]

যদি ISIS টিকে যেতে পারে এবং স্থানীয় গোত্র ও জনগনকে পাশে রাখতে পারে তাহলে তারা তাদের অবস্থান সুপ্রতিষ্ঠিত করতে পারবে এবং বাগদাদ ও দামেস্কে আক্রমণের ক্ষেত্রে এটাকে Launch Pad হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।

[1] Click This Link

[2] Click This Link

[3] Click This Link

[4] Click This Link

[5] Click This Link

[6] Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১৪ রাত ৯:১৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×