ঠিক মনে নেই সময়টা ২০০৬ বা ২০০৭ সাল হবে আমার খুব কাছের এক বন্ধু পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল সামুর সাথে। তখন টি এন টির ডায়াল আপ লাইন দিয়ে শামুকের গতিতে ব্রাউজ করতাম। মাউস ব্যবহার করে অনেক কষ্ট করে দুই বা তিনটা শব্দ লিখে জানাতাম মন্তব্য। কোন পোষ্ট করার সাহসই ছিল না। মাঝখনে দূরে ছিলাম অনেকদিন ব্যবহার না করার কারনে নীজের নামে খোলা সেই নিকটির অস্তিত্ব হারিয়ে যায় একসময়।
এখনও যারা সেই পুরোনো ব্লগার আছেন আরা কি বলবেন গত কয়েক বছরে আমাদের সামু পরিবারের মান কি বেড়েছে, না কমেছে? একটা জিনিস মনে পড়ে তখন কিন্তু কেউ কাউকে অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করে পারসোনাল এ্যাটাক করত না। এখন দেখলে মনে হয় এটাই মনে হয় আমাদের বৈশিষ্ট্য।
অনেক কিছু শিখেছি এখান থেকে, অনেকর জীবনের অনেক মধুর স্মৃতি গুলো আমাদেরকে নিয়ে যেত আমাদের নীজেদের ফেলে আসা অতীতে। (অনেকে অবস্য এখনও সেরকম লেখা দিচ্ছেন। তাদের প্রতি রইলো আরো এমন লেখা দেওয়ার অনুরোধ। আর শুভ কামনা)
আবার অনেকর কিছু অভিজ্ঞতা পড়তে পড়তে দম ফাটানো হাসিতে চমকে উঠত আশেপাশের সবাই।
আর আজকে যখন এখানে আসি তখন খুব কমই হাসতে পারি, মনটা যেন আরও খারাপ হয়ে যায়। বিরক্ত হই লজ্জিত হই নীজেরই করা অনেক কমেন্টের কথা মনে হলে।
আমরা যারা এখানে আসি ব্লগার বা ভিজিটর, সবারই আছে ডিফারেন্ট ব্যাকগ্রউন্ড, ডিফারেন্ট আইডেনটিটি আমরা কেউই মানুষ হিসেবে তুচ্ছ না। (আসলে কোন ও মানুষ ই তুচ্ছ না) সবাই কিন্তু সবার নীজের ব্যাক্তিত্ব কে প্রকাশ করি নিসংকোচে নীজস্ব ভংগীমায়।
সবাই আমরা চিন্তা করি এই দেশ, মানুষ বা সমগ্র বিশ্ব কে নিয়ে। আমাদের সবারই আছে কিছু চিন্তা কিছু মতবাদ। সবাই মনে হয় বিশ্বাস করি এই চিন্তা বা মতবাদ দিয়ে আমরা আমাদের সমাজের নোংরা ময়লা গুলো দূর করে দিতে পারব।
চিন্তা করে দেখুন আমাদের সবারই ইন্টেনশন হল ভাল কিছু করা। এই ভাল কিছু করতে গিয়েই কিন্তু আমরা চেষ্টা করি নীজের মতবাদ কে প্রতিষ্ঠা করার। কিন্তু সমস্যাটা শুরু হয়, যখনই আমার এই আদর্শ বা মতবাদ (যা কিনা সব কিছু ঠিক করে দিবে) যখন আমারই সতীর্থ কোন ব্লগার মানতে চান না। আবেগের প্রচন্ডতা আমাদের এই সুন্দর মনের মানুষ গুলোর ভিতরে লুকিয়ে থাকা হিংস্র পশুটাকে বের করে নিয়ে আসে। তখন আমাদের লেখনীতে আর কল্যান আর শান্তির আহবান বের হয় না, বরং বের হয় ধংস্ব কামনা। শুরু করি সীমা লংঘন করা, নীজের ব্যাক্তিত্ব আর মানবকতাকে নীজেই করি লাঞ্চীত।
সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে জন্ম দেই সমস্যার। আর সমাধন লজ্জা পেয়ে এই ব্লগ ছেড়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যায।
এই ব্লগে যারা আওআমীলীগের সমার্থক আছেন তাদের বলছি; একটু চিন্তা করুন দিন বদলাতে গিয়ে আপনারা নীজের মানবিকতা কে বদলে দিচ্ছেন নাতো, দেশকে বদলাতে গিয়ে মানচিত্রটা বদলে যাচ্ছে না তো?
যারা বি এন পি করছেন তারা ভাবুনতো একটা ব্যাক্তি আর একটা বাড়ি বাচলেই কি দেশ আর মানুষ বেচে যাবে। তেল গ্যাস বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হবে? দেশটা কি মুক্ত থাকরে পরাশক্তী গূলোর অধীনতা থেকে?
আমার যারা ইসলামের কথা বলি, মনে করি ইসলামই সমাধান। এবার তাদের প্রসঙ্গে আসি। আমরা জামাত, হিযবুত তাহরীর, বা অন্য যে কোন ও পন্থাই (অবস্যই বোমাবাজী না) অবলম্বন করি না কেন, আল্লাহ এবং তার রাসূল (স) কি আমাদের শিষ্ঠ্যাচার, সবর, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, অন্যায়েরর সাথে আপোষ না করা নীজের চরিত্রকে সুন্দর করার শিক্ষা দেন নি? তবে আমরা কোন স্রোতের সাথে গা ভাসাচ্ছি, কেন কেউ গালি দিলে, গালি দিয়েই তার জবাব দিচ্ছি। কোন ব্লগে কিছু কমেন্ট করে বা পোষ্ট দিয়ে ভাবছি ইসলামের জন্য অনেক কিছু করে ফেলেছি। নাকি আমরাদের কাছে ওহি এসে গেছে যে আমরা সবাই জান্নাতি। আল্লাহ কিন্তু হিসাব নেবেন।
আর নাস্তিক ভাইয়েরা আপনারা না যুক্তিবাদী, আপনারা মানবতা আর সাম্যের কথা বলেন। আপনাদের কাছ থেকে কেন যুক্তি র বদলে অন্য কোনও কিছু বের হয়। আপনাদের সততা কই গেল?
যাই হোক যদি কাউকে অজ্ঞতা বসত আক্রমন করে থাকি তাহলে মাফ করে দেওয়ার অনূরোধ করছি। এই লেখাটা লিখেছি কারন গত কয়েকদিন ধরেই আমাদের এখানে ষাঠোর্ধ্য দু জন মহিলাকে নিয়ে আমরা যা লিখছি, তাতে আমাদের মানসিক অসুস্হতা প্রকাশ পাচ্ছে। বার বার মনে হচ্ছে আমরা কি ঠিক করছি? ধরেই নিলাম তারা দু জনেই খুব খারাপ তারা সমালোচলার যোগ্য, কিন্তু সমালোচনার ভাষা নিশ্চই এগুলো নয়। তাহলে তাদের সাথে আমাদের পার্থক্য থাকল কই। আর কেনই বা আমারা খারপ হওয়া সত্বেও বাব বার তাদের ক্ষমতার মসনদে বসাচ্ছি। দোষতো আমাদের ও কিছু কম না।
এই পোষ্টের কমেন্টগূলোর উপর একটু চোখ বুলান
কোন আমরা আমাদের নীজের দের মধ্যকার পারষ্পারিক সম্পর্ককে নষ্ট করছি। নীজেরা এক হওয়ার বদলে হচ্ছি বিভাজিত। কেন কাদের স্বার্থে??
আসুন আর একটু সহনশীল হই
আত্মপ্রবঞ্চক
আত্ম প্রবঞ্চক- ২