(ছবি নেট থেকে) অরিজিনাল মুক্তিযোদ্ধা যাদের চাওয়া ছিল শুধুই বৈষম্যহীন একটি বাংলাদেশ।
পাকিস্তান আমলে সামরিক বাহিনীতে ৯৫% বরাদ্দ ছিল পাকিদের জন্য আর বাঙ্গালীদের তথা পূর্বপাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫% অথচ তখন পূর্বপাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল ৫৬% এবং পশ্চিম পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল ৪৪%। এরকম হাজারো বৈষম্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে বাংলাদেশের আবাল বৃদ্ধ বনিতা শুধুমাত্র কতিপয় স্বাধীনতা বিরোধী বাদে। কেউ প্রত্যক্ষভাবে কেউ পরোক্ষভাবে। উদ্দেশ্য ছিল কি? উদ্দেশ্য ছিল একটাই তাহলো বৈষম্যহীন একটি রাষ্ট্র এবং বাঙালিদের সম অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা কি তা পেয়েছি? না পাইনি। কারণ আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনীতি!
এরশাদের পিরিয়ডে অর্থাৎ ১৯৮৬-৮৭ সালের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তালিকা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২ হাজার ৪৫৮ জন। তারপর আওয়ামী লীগের ১৯৯৭-২০০১ পিরিয়ডে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৭৯০ জন! আবারো বিএনপির ২০০১-২০০৬ পিরিয়ডে তা আবারো বেড়ে দাঁড়ায় ২ লক্ষ ১০ হাজার ৪৮১ জন! এবার বোঝেন সঠিক মুক্তিযোদ্ধার কি অবস্থা! বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারে সময়ে নাকি আরো হাজার দরখাস্ত পড়েছে তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য এবং সেগুলো নাকি যাচাই-বাছাই হচ্ছে। এই হচ্ছে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার বেহাল দশা।
এরাব আসেন হিসেবে : ২০১৬ সালের হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৩০ লক্ষ এবং তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা ২ লক্ষ ১০ হাজার ৪৮১ জন তাহলে শতকরা হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা হয় ০.১২৯% যা ১ পার্সেন্টও না। ধরে নিলাম ১% তাহলে এই ১% বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্য ৩০% কোটা রাখাটা কতটা যৌক্তিক!? আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধরা কি চেয়েছিলেন এই কোটা তথা বৈষম্য। তারাতো এই বৈষম্যের জন্যই জীবন বাজিরেখে যুদ্ধ করেছিলেন যাতে একটি বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠে এবং সকলের সম অধিকার নিশ্চিত হয়। তারা তাদের সন্তান, নাতিপুতি এবং বংশপরমপরায় সুবিধা ভোগের জন্য আত্নত্যাগ করেননি।
কোটার পক্ষে লাফায় ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা আর চেতনা ব্যবসায়ীরা যারা কোটা সুবিধা নিয়ে জাতির মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছে। সুতরাং এদেরকে অবশ্যই রুখতে হবে নচেৎ সরকার যে সম্মানী বীর মুক্তিযোদ্ধাাদের দেন তার সিংহ ভাগ এদের পেটে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:২৭