বিশ্বে সবচেয়ে সুখী হিসেবে ধরা হয় বাংলাদেশিদের।
এর গোড়ায় আছে কতোগুলো অবিশ্বাস্য ও মজাদার কারণ।
কারণগুলো আপনি জেনে যারপরনাই অবাক হবেন।
জাতীয় জীবনে হাজার সমস্যা থাকার পরও সহজ-সুন্দর ও সাধারণ জীবন যাপন বাংলাদেশিদেরকে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে সুখী জাতি হিসেবে পরিণত করেছে।
অনেক গবেষণা (!) করে বাংলাদেশিদের সহজ-সুন্দর, হাসি-খুশী জীবনের ২০টি কারণ তুলে ধরা হল।
১। ছাদে সন্ধ্যাবিলাস :
বাড়ির একটা ছাদ থাকলে বিকেল কাটানোর জন্য কোনো নামিদামি লাউঞ্জ বা ক্লাবের দরকার হয়না। ছাদেই কেটে যাবে আপনার সুন্দর বিকেল আর বিষন্ন সন্ধ্যা।
২। ‘টং –এর দোকান’
রাস্তার পাশের টং দোকানে কী নেই? চা, সিগারেট, পানি, কলা বিস্কুট, বনরুটি তো আছেই, সাথে আছে সময় কাটানোর রঙ্গিন টিভি!
৩। ‘মাথা বানানো’
সারা দুনিয়ায় কম খরচে বা বিনা খরচে ‘মাথা বানানো’ বাংলাদেশেই পাওয়া যায়। এর জন্যে এক্সট্রা টাকা খরচ করতে হয় না। পাড়ার সেলুনে চুল কাটালে ঘাড়, শরীর, মাথা সব ‘বানিয়ে’ দেবে নাপিত ‘মহোদয়’!
৪। সবকিছুই মেরামতযোগ্য :
সারাবিশ্ব যেখানে ‘ওয়ান টাইম ইউজ’-এর দিকে ঝুঁকছে, সেখানে বাংলাদেশে যেকোনো কিছু রিপেয়ার করা যায়। সুতরাং ফেলে দিয়ে লাভ নেই। মেরামত করুন, টাকা বাঁচান। তারপর দিন সংসারের কাজে লাগিয়ে।
৫। রিক্সা :
গ্রীষ্ম-বর্ষা-শীতের বালাই নেই, সপ্তাহের ৭ দিন ২৪ ঘণ্টাই রিক্সা বাংলাদেশিদের প্রিয় বাহন। ছোটো-বড়ো সবার প্রিয় এই ঐতিহ্যবাহী বাহন জীবনকে করে তুলেছে আরো সুন্দর ও ছন্দময় !
৬। বৃষ্টিতে ভেজা :
হাজার টাকা খরচ করে সুইমিং পুল বা ঝর্ণায় ভিজা যায়
কিন্তু বিনে খরচায় গ্রীষ্মের গরমে বৃষ্টিতে ভেজার আনন্দ- বাংলাদেশেই পাওয়া যায়।
৭। ফুটপাতের খাবার :
জিভে জল আনা হাজারো খাবারের দোকান পাওয়া যায় ফুটপাতে। অল্প দামে অতুলনীয় খাবারের স্বাদ কেবল এই ফুটপাতেই সম্ভব।
৮। দামদরের স্বাধীনতা :
‘ফিক্সড প্রাইস’-এর যুগে দামদর বাংলাদেশে একটা আর্ট। যা বিশ্বের আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। এখানে সুঁই থেকে শুরু করে গরু, জুয়েলারি সব কিছু কিনতেই দাম নিয়ে ‘ক্যাচাল’ করা যায়!
৯। বাস্তব গেম :
বাংলাদেশে যে খেলাধুলাগুলো দেখতে পাওয়া যায়- সে ব্যাপারে একবাক্যে বলা যায়, এক্সবক্স বা পিএসথ্রী থেকে তা অনেক উত্তেজনাপূর্ণ ও আনন্দদায়ক।
১০। আড্ডা :
আড্ডা এখানে জীবনেরই একটা অংশ। হেন কথা নেই যা আড্ডাতে উঠে আসবে না। পাশের বাড়ির ষোড়শী থেকে রাজনীতির হাতি-ঘোড়া সব মারা পড়ে এই আড্ডাতে!
১১। ক্রিকেট :
ক্রিকেট বাঙ্গালীদের রক্তে মিশে আছে। জাতীয় ক্রিকেট দলের কোনো একটি জয় যেভাবে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এক করে দেয় তা আর কোনো কিছুর মাধ্যমে সম্ভব কিনা সন্দেহ আছে। জন্মগতভাবেই বাংলাদেশিরা জাতীয় ক্রিকেট দলের ফ্যান!
১২। হোম ডেলিভারি :
উন্নত বিশ্বে অনলাইনে কেনাকাটার সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশিদের আছে ‘হকার’ সুবিধা। দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহার্য প্রায় সবকিছুই তারা পৌঁছে দেবে একেবারে বাসার দোরগোড়ায়।
১৩। গাড়িতে আরোহণ :
ঘুরতে যাওয়ার জন্য দলবেঁধে গাড়িতে বা রিক্সায় উঠতে যে আনন্দ বাংলাদেশিরা পায় তা বিএমডব্লিউ বা মার্সিডিজে পাওয়া সম্ভব না।
১৪। হাত দিয়ে ভাত :
ভাতের সাথে ডাল মাখিয়ে হাত দিয়ে মুখে পুরার যে আনন্দ তা কি চামচ বা কাঠিতে পাওয়া যাবে? ১০০% গ্যারান্টি!
১৫। বাংলা সিনেমা :
ব্লকবাস্টার বাংলা সিনেমার সাথে আর কিছুর তুলনা চলে না। আপনি যদি সিনেমা নাও দেখেন, সিনেমার নামই আপনার দিনটাকে আনন্দময় করার জন্য যথেষ্ট!
১৬। ধূমপানে বন্ধুত্ব !
ধূমপায়ীরা বাংলাদেশে কখনোই নিঃসঙ্গ নয়। রিক্সাওয়ালা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে চড়া ‘সাহেব’ও এই একটি ক্ষেত্রে মিলেমিশে একাকার। সিগারেটের আগুন চাইতে গিয়ে কতো যে বন্ধুত্ব হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই!
১৭। চিন্তামুক্ত ঘুম :
‘যেখানে রাইত, সেখানেই কাইত’–বাংলাদেশিদের জন্য ধ্রুবসত্য। ছবিতে দেখুন, এমন চিন্তামুক্ত ঘুম পৃথিবীর আর কোথায় আছে?
১৮। উপলক্ষ উদযাপন :
সাংস্কৃতিক, জাতীয় কিংবা ধর্মীয়, যেকোনো উৎসবেই বাঙ্গালিকে পাবেন প্রাণবন্ত ফুরফুরে মেজাজে। জীবনের যেকোনো দুঃখবোধ এখানে অসহায়।
১৯। একান্নবর্তী পরিবার :
পরিবার, আত্মীয়-স্বজনের মাঝে এমন পারিবারিক বন্ধন শুধু বাংলাদেশেই পাবেন। সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে ঘরে ফিরেই পরিবারের হাসি দূর করে দেয় সমস্ত ক্লান্তি। জীবনটাকে করে তোলে ‘বিউটিফুল’।
২০। জাতীয় পতাকা :
সবকিছুর উপরে জাতীয় পতাকা। দেশের পতাকায় একবারের দৃষ্টি বাংলাদেশিদের হৃদয়কে ভরিয়ে তোলে গভীর দেশপ্রেমে।
কৃতঙ্ঘতায়