somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা শহর আইশা আমার আশা ফুরাইলো........................ঘটনা -২

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৩:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেই ছোটবেলা থেকে, আমি যা অপছন্দ করি তা আমার কপালে এসে জুটে। এই যেমন, খাবারে এলাচি, দারুচিনি, লং আমার একদমই পছন্দ না। কিন্ত, দেখা যাবে, সবার জন্য প্লেটে খাবার বাড়লে আমার প্লেটেই সবচেয়ে বেশী এলাচি, দারুচিনি, লং উঠবে। ঠিক তেমনি, আমি সবসময় ঢাকা শহরকে খুব অপছন্দ করতাম। কারন, এই শহরটাকে আমার বড় বেশী যান্ত্রিক মনে হতো এবং এখনো মনে হয়।তাই, যখনি কোন কাজে ঢাকা শহরে আসতাম, কাজ শেষ করেই ঐ দিনই ফিরে যেতাম। আর, আজ সেই ঢাকা শহরেই আমি থাকছি প্রায় দেড় বছরের মত।
আজ আরেকটি ঘটনা লিখবো। আমি প্রথম যে বাসাটাতে উঠছিলাম, সেইটা ছিলো একটা সরকারী কোয়ার্টার। একটু পুরনো ছিলো।তাও আমি একজন মানুষ ছিলাম, খারাপ কাটছিলো না। কিন্তু, মানুষ এমন একটা প্রাণী যার, যে একা থাকতে পারে না। তাই, প্রথম ২-৩ দিন খুব খারাপ যাচ্ছিলো। প্রথমত, জীবনে কখনো আমার মা-বাব, ভাই-বোন ছাড়া একা থাকি নি। দ্বিতীয়ত, এই শহরে আমার পরিচিত একজন ফ্রেন্ড ছাড়া কেউ ছিলো না।ঠিক ৩ দিন পর, আমার খুবই ক্লোজ একজন ফ্রেন্ড এর জব হয় ঢাকাতে। আর সেই ফ্রেন্ড আমার সাথেই উঠলো ওই বাসাতে। মনটা কিছুটা ভালো হল। আমরা দুই ফ্রেন্ড ভালোই কাটাচ্ছিলাম দিন।
আগেই বলেছি, আমি প্রথম যে বাসাটাতে উঠছিলাম,একটু পুরনো ছিলো। এইজন্য আমার ঠিক ভালো লাগছিলো না। তাই,নতুন একটা বাসা খুজছিলাম। কিন্তু, পছন্দের মত কোন বাসা পাচ্ছিলাম না। অনেক খুজাখুজির পর একটা বাসা পাই। ওইটা ছিলো একটা সাবলেট। মানে, একটা ফ্যামিলি তাদের ৩ টা রুমের একটা আমাদেরকে ভাড়া দিয়েছিলো। সেই বাসাতে উঠে পড়লাম চরম বিপদে। বাসায় উঠার পর বুঝতে পারলাম, আমরা যে সাবলেট হিসেবে আছি তা কাউকে বলা যাবে না। এমনকি বাসার চাবি ও আমাদের কে দেওয়া হবে না। তাও মেনে নিলাম। একদিন বাসায় ফিরে দেখি উনারা নাই। তাই, দরজার বাইরে দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তাও মেনে নিচ্ছিলাম আর নতুন বাসা খুঁজছিলাম। এর কিছুদিন পর যা ঘটছে, তা আমার সারাজীবন মনে থাকবে। আমরা যে রুমটাতে উঠছিলাম, তার পাশের রুমেই ৩ টা ছেলে ভাড়া থাকতো। ছেলেগুলো ভালই ছিলো। কিন্তু, সবাই স্টুডেন্ট ছিলো। তাই, টাকাপয়সা সময়মত দিতে পারতো না। এইজন্য, উনারা ওদেরকে ভালো চোখে দেখতো না। আমরা সাবলেট এ শুধু থাকতামা, খেতাম বাইরে। কিন্তু ওই ছেলেগুলো ওদের সাথেই খেতো। এর জন্য ওদেরকে এক্সট্রা টাকা দিতে হতো। একদিন দেখলাম,ওই ফ্যামিলির কর্তার সাথে ওই ছেলেদের কি নিয়ে গণ্ডগোল হচ্ছে। যাই হোক, বুঝলাম টাকাপয়সা নিয়ে। এরপর ওই ছেলেদের উপর শুরু হয় ওই ফ্যামিলির রুঢ় আচরণ। প্রায় সময় ওই ছেলেদের রুম থেকে টাকা চুরি করত ওই ফ্যামিলির কর্তী। আমার খুব খারাপ লাগতো। কিন্তু এর ২ -৩ দিন পর ঘটলো সেই ঘটনা। ওই ফ্যামিলি কুকুর পালতো। বিলাতী কুকুর। খুব যত্ন করে খাওয়াত কুকুরটাকে। একদিন ওই ছেলেগুলো বাসায় নাই। তাই, ওদের দুপুরের খাবার এর প্লেটটা ওদের রুমের বাইরে রেখে গিয়েছিলো যাতে কর্তী তাদের খাবারগুলো ওই প্লেটগুলোতে সংরক্ষন করে রাখতে পারেন। ওই মহিলা কি করলো, ওই প্লেটে তার প্রিয় কুকুরটাকে খাওয়ালো। তারপ্র, প্লেট না ধুয়ে ওই প্লেটে ওই ছেলেদের খাবার সংরক্ষন করে রাখলো। আর,ওই ছেলেরা দুপুরে ফিরে ওই খাবার খেলো। এটা দেখে আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। আমি ভাবতে থাকলাম, আমি কি মানুষের মাঝে আছি নাকি পশুদের মাঝে আছি? সামান্য কিছু টাকাপয়সার জন্য এমন আচরণ, ভাবতেই আমার বারবার কান্না পাচ্ছিলো।
ঢাকা শহরে এসে এই যে ঘটনা দেখলাম, তা আমাকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছিলো, "ইহার নাম ঢাকা শহর।যেখানে নেই মানবতার কোন ঠাই।"
..........................................................................
ঢাকা শহর আইশা আমার আশা ফুরাইলো........................ঘটনা -১
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×