মুম্বাই। ভারতের প্রাণস্বরূপ এই নগরী বিশ্বের অন্যতম জনবহুল এবং বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মহানগরী। যুগের পর যুগ ধরে অজস্র মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে এই মুম্বাই, যুগিয়েছে অন্ন। আজও প্রতিদিন অসংখ্য জীবিকান্বেষী মানুষকে সাদর অভ্যর্থনা জানায় প্রায় ২.৫ কোটি অধিবাসীর শহর মুম্বাই। কিন্তু প্রায় সকল মহানগরীর মতই মুম্বাইয়েরও আছে এক অন্ধকার জগৎ, এ হল মুম্বাইয়ের সেই ভয়ংকর অপরাধ জগৎ যা কেবল তার শান্তিপ্রিয় বাসিন্দাদেরই নয় বরং ভারতসহ ভারতের বাইরেও বহু মানুষের ঘুম কেড়েছে। হাজী মাস্তান, মুদালিয়ার থেকে দাঊদ ইব্রাহীম, ছোটা শাকিল -মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রকরা এই স্বপ্নের নগরীর ইতিহাসকে রক্তে রঞ্জিত করতে কখনই কুণ্ঠিত হয় নি। তাদের লিপ্সা-হিংসা ছবির মত মুম্বাইয়ে বহু রক্ত ঝরিয়েছে আর আজও ঝরিয়ে যাচ্ছে। মুম্বাইয়ের সেই লোমহর্ষক অপরাধ জগৎ নিয়েই কিছু না বলা কথা, কিছু গুঞ্জন ধারাবাহিক পর্বে তুলে ধরার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।
প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
চতুর্থ পর্ব
পঞ্চম পর্ব
ষষ্ঠ পর্ব
সপ্তম পর্ব
শেষ পর্ব: আজকের মুম্বাই
দাঊদ মুম্বাইয়ে জেঁকে বসলেও তার একার রাজত্ব মুম্বাইয়ে বেশিদিন ছিল না। ১৯৯০ সালের পর দাঊদ আর রাজনের সম্পর্কে চিড় ধরে। দাঊদের অপর এক সহযোগীর হাতে রাজনের এক ঘনিষ্ঠ সন্ত্রাসী নিহত হলে রাজন দাঊদের কাছে বিচার দাবী করে। কিন্তু দাঊদ কেবল ওই সহযোগীকে চড় মেরে ছেড়ে দিলে ক্ষুব্ধ হয় রাজন। একসময় দাঊদের গ্যাং ছেড়ে নিজের গ্যাং বানায় রাজন। বর্তমানে রাজন দাঊদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। একসময়ের ঘনিষ্ঠ এই দুইজনের গ্যাঙয়ের মধ্যে গ্যাং ওয়ারের ঘটনাও ঘটেছে। দাঊদ করাচী থেকে ছোটা শাকিল এবং আরও এক সহযোগীর মাধ্যমে মুম্বাই নিয়ন্ত্রণ করে আর ছোটা রাজন নিজেই সক্রিয়ভাবে নিজের গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে। মুম্বাই পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করেন নাকি ঘুষ খান তা তারাই ভাল বলতে পারেন। বহু অপরাধী যেমন ধরা পড়েছে তেমনি জন্মেছে আরও অনেক নতুন অপরাধী। অতি সম্প্রতি একের পর এক ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষণের নগরী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে মুম্বাই। ব্রিটিশ ভারতে লোক দেখানো পুলিশ বাহিনী অপরাধকে প্রশ্রয় দিয়েছিল ব্যাপকভাবে। অত্যাচারী ব্রিটিশরা সাধারণের নিরাপত্তার কথা কখনও চিন্তাও করে নি। একসময়ের শান্ত মুম্বাই জনপদ আজ কেবল অসংখ্য নবীনের স্বপ্নের শহর নয়, সাধারণ মানুষের আতংকের শহরও বটে। ভয়ংকর সব অপরাধী আর বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলা শহরটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটি হর-হামেশাই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। ১৯৮২ সালে প্রথম এনকাউন্টারের পর আজ পর্যন্ত প্রায় ৯০০ এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটেছে মুম্বাইয়ে যাতে নিহত হয়েছে ১৩৫০ জনেরও বেশী। এর মধ্যে ১৯৯১ সালের ১৬ নভেম্বর লোখান্ডওয়ালা কমপ্লেক্সে পুলিশের এনকাউন্টারে ভয়ংকর গ্যাংস্টার মায়া আর তার সহযোগী আরও ছয়জন গ্যাংস্টারের মৃত্যু উল্লেখযোগ্য। শোনা যায়, দাঊদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়া আর ছোটা রাজনের প্রতি আনুগত্যের কারণে দাঊদের লোকজন পুলিশকে মায়ার অবস্থান জানিয়ে দেয় যার ফলে পুলিশের মুখোমুখি হয় মায়া। প্রতিদিন কতজন সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন আর কতজন বরণ করেন মৃত্যু তার কোন নির্ভরযোগ্য হিসাব সম্ভবত কেউ দিতে পারবেন না। এতসব কাহিনী যাদের নিয়ে, সেই ডনদের সাথে এই পর্যায়ে পরিচিত হওয়া যাক।
হাজী মাস্তান
ভরদরাজন মুদালিয়ার
শাবির ইব্রাহীম
মান্য সুরভে
দাঊদ ইব্রাহীম
ছোটা রাজন
ছোটা শাকিল
সদ্য বিবাহিত দাঊদ ইব্রাহীমের মেয়ে ও জাভেদ মিয়াঁদাদের ছেলে
সমাপ্ত.........
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:২০