মুম্বাই। ভারতের প্রাণস্বরূপ এই নগরী বিশ্বের অন্যতম জনবহুল এবং বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মহানগরী। যুগের পর যুগ ধরে অজস্র মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে এই মুম্বাই, যুগিয়েছে অন্ন। আজও প্রতিদিন অসংখ্য জীবিকান্বেষী মানুষকে সাদর অভ্যর্থনা জানায় প্রায় ২.৫ কোটি অধিবাসীর শহর মুম্বাই। কিন্তু প্রায় সকল মহানগরীর মতই মুম্বাইয়েরও আছে এক অন্ধকার জগৎ, এ হল মুম্বাইয়ের সেই ভয়ংকর অপরাধ জগৎ যা কেবল তার শান্তিপ্রিয় বাসিন্দাদেরই নয় বরং ভারতসহ ভারতের বাইরেও বহু মানুষের ঘুম কেড়েছে। হাজী মাস্তান, মুদালিয়ার থেকে দাঊদ ইব্রাহীম, ছোটা শাকিল -মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রকরা এই স্বপ্নের নগরীর ইতিহাসকে রক্তে রঞ্জিত করতে কখনই কুণ্ঠিত হয় নি। তাদের লিপ্সা-হিংসা ছবির মত মুম্বাইয়ে বহু রক্ত ঝরিয়েছে আর আজও ঝরিয়ে যাচ্ছে। মুম্বাইয়ের সেই লোমহর্ষক অপরাধ জগৎ নিয়েই কিছু না বলা কথা, কিছু গুঞ্জন ধারাবাহিক পর্বে তুলে ধরার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।
প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
পর্ব ৩: ভরদরাজনের দখলদারী
৬০ এর দশকে মুম্বাই রেলস্টেশনের কুলি হিসেবে আবির্ভাব ঘটে ভরদ ভাই নামে পরিচিত ভরদরাজন মুদালিয়ারের। পরে মদের কারবার শুরু করে মুদালিয়ার। তৎকালীন প্রভাবশালী ডন হাজী মাস্তান এর সুনজরে পড়ার পর অতি অল্পদিনেই নিজেকে গ্যাংস্টারের আসনে নিয়ে যায় ভরদ। ৮০ এর দশক পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ বছর হাজী মাস্তান আর করিম লালার পাশাপাশি মুম্বাইয়ে দাপটের সাথে রাজত্ব করেছে ভরদ। মূলত তার হাত ধরেই মুম্বাইয়ে গুম, খুন, ভূমি দখল এর সূচনা। এর আগে মুম্বাইয়ের মাফিয়া গ্যাংগুলোর প্রধান আকর্ষণ ছিল চোরাকারবার। ৬০ এর দশকে ভরদ হাজী মাস্তানের অধীনে প্রথমে চোরাকারবারি শুরু করলেও ৭০ এর দশকে সে নিজেই নিজের হুকুমদাতা হয়ে ওঠে। করিম লালা তখন দক্ষিণ ও কেন্দ্রীয় মুম্বাইয়ের চোরাকারবার নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত। এ সুযোগে উত্তর আর পূর্ব মুম্বাইয়ের চোরাকারবার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি খুন আর ভূমি দখলে মেতে উঠে ভরদরাজন। অবশেষে মুম্বাই পুলিশের ইন্সপেক্টর পাওয়ারের প্রচেষ্টায় শেষ পর্যন্ত ৮০ এর দশকে মুম্বাই ছেড়ে চেন্নাই পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় ভরদরাজন। মুম্বাই জীবনের শুরুতে ভরদ নিয়মিত বিসমিল্লাহ দরগায় গরীবদের খাবার দিত নিজের সাধ্যমত। অন্ধকার জগতে নিজের ভাগ্য গড়ার পরেও তার এই উদ্যোগ অব্যাহত ছিল। গণেশ চতুর্থীতে মাতুঙ্গা স্টেশনে ভরদের আয়োজিত কাঙালি ভোজ বেশ সুনাম কুড়িয়েছিল। সেসময়ের অনেক তারকাও এই কাঙালি ভোজ পরিদর্শনে যেতেন। উল্লেখ্য, মুম্বাইয়ের আরেক ডন ও তার গুরু হাজী মাস্তানের মত ভরদও তার কালো টাকা বিপুল পরিমাণে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে বিনিয়োগ করে যার ফলে অনেক তারকার সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। ১৯৮৮ সালে চেন্নাইয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায় ভরদ।
চতুর্থ পর্ব
পঞ্চম পর্ব
ষষ্ঠ পর্ব
সপ্তম পর্ব
শেষ পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৪১