আমার সাথে একটা মেয়ের ফেসবুকে ফ্রেন্ডশীপ হয়। মেয়ে দেখতে ভালোই। আমি তাকে বলেছিলাম, আমি ফেসবুকের প্রেম বিশ্বাসী না। প্রেম জাতীয় কোন কিছুতেই আমার আগ্রহ একদম নেই। হয়তো ভাললাগা থাকতে পারে, প্রেম/ভালবাশার শুরু বিয়ের পরে, আগে কখনোই নয়। যায় হোক, মেয়েটি আমার সাথে অনেক কিছু শেয়ার করতো। ভাল লাগা- মন্দ লাগা। আমাদের দুজনের মধ্যে পারস্পরিক ভাললাগা কাজ করতেছে দুইজনেই সেটা বুঝতে পারি।
ভাল-লাগা থেকে ভালবাসা হবে আর ভিলেনের আগমন হবে না তা কি হয়? সুতরাং যথারীতি ভিলেনের আগমন। মেয়েটি আমাকে আগে বলেছিল ছেলেটি জাস্ট তার বেস্ট ফ্রেন্ড। পরে বলল সে ছেলেটিকে ভালবাসে জীবনের চাইতেও, ছেলেটিকে যদিও দেখে নাই, ফেসবুকে পরিচয়। ছেলেটি লন্ডনে থাকতো ওখান থেকে পুলিশের দৌড়ানি খেয়ে জার্মানি আছে এখন। ছেলেটি মার্ডার/ না কি যেন করেছিল আমি সিউর না কিন্তু ছেলেটি ভাল বন্দুক চালাইতে পারে। (তথ্য সত্য)
যায় হোক, ছেলেটি মেয়েটিকে শাসায় যে আমাকে ছেড়ে দেবার জন্য, হেন তেন। আমি চুপ ছিলাম। কারন, কেউ আমাকে ভালো না বাসলে আমি তো আর জোর করে ভালবাসা আদায় করবো না!! এইটা পুরো আপেক্ষিক ব্যাপার।
তাছাড়া মেয়েটি ছেলেটির কথা শুনবে কেন? যদি ছেলেটির প্রতি মেয়েটি মেয়েটি দুর্বল না হত। মেয়েটি যখন বলল, সে ওই সন্ত্রাসীকে ভালবাসে তখন আমি মেয়েটিকে সিনেমার স্টাইলে বললাম, আমি তোমাকে সারাজীবন সুখী দেখতে চাই। ওই ছেলের সাথে তুমি যদি সুখী হও তাহলে তাকে নিয়েই স্বপ্ন দেখ। ইনশাল্লাহ, তোমার স্বপ্ন একদিন সত্যি হবে (মনে মনে খুব কষ্ট পাইছিলাম, একটু কান্নাও পাইছিল কিন্তু কি আর করা? যখন সন্ত্রাসীর লাথি খাবে তখন বুঝবে। সন্ত্রাসীদের মা-বোন-ভাই পরিচয় আছে নাকি। মদ খাওয়া তো ওদের নেশা। ওহ! বলতে ভুলেই গেছিলাম ছেলেটির প্রোফাইল পিকচারে মদের বোতল নিয়ে ঢং করে পিক দিছে এবং আরেকটা পিক এ ছেলেটি প্লেবয় লোগো সম্বলিত পিকও দিছে ) সবচেয়ে মজার কথা হল, ছেলেটি প্লেবয় মেয়েটি জানতো কারন ছেলেটি মেয়েটির বান্ধবীদের প্রপোজ করছে। ছেলেটি মেয়েটিকে বলে যে, আমি তোমাকে সারাজীবন ভালবাসে যেতে চাই, কাছে পেতে চাই, কিন্তু আমি তোমাকে বিয়া করবার পারুম না কারন আমার জীবন আমার হাতে নেই। ব্লা... ব্লা... ইত্যাদি রোমান্টিক রোমান্টিক সব কথা-বাত্রা (আমার কাছে ওইগুলা মহাকাশীয় কথা-বাত্রা মনে হয়...)
মেয়েটিকে কিন্তু আমাকে ভালোই বুঝতে পারতো। কেন পারতো সেটা আমার কাছে রহস্যই থেকে গেল। মেয়েটির পরিবার সম্পর্কে আমি অনেক কিছুই জানতে পারি তার কাছ থেকে, মেয়েটিকে আমি খুব রেস্পেক্টও করতাম।
একদিন দেখি কি, মেয়েটি আমাকে আবোলতাবোল ম্যাসেজ পাঠাচ্ছে পরে জানলাম ওর (জামাই --> মেয়েটি ছেলেটিকে জামাই বলে) ওর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করছে। মেয়েটির সব ফ্যামিলি পিকচার নিয়ে ফেললো এবং বলল সব পিক নাকি ইন্টারনেটে পাবলিশ করে দিবে। আর আমি যদি ছেলেটির অ্যাকাউন্ট হ্যাক করি তাহলে ছেলেটি আমাকে মেরে ফেলবে (মেয়েটির ভাষ্য)
আমাকে ছেলেটি এইসব কিছু বলেনি, জাস্ট বলেছে যদি পারি যেন আমি ওর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করি। যায় হোক, মেয়েটি আবার আরেকটা অ্যাকাউন্ট করলো এবং আমাকে ও তার অন্য ফ্রেন্ডদের অ্যাড করলো। মেয়েটি আমাকে বলে ওর ফ্রেন্ডরা নাকি সিঙ্গেল হয়ে যায় (রিলেশন ভেঙ্গে যায়) যদি ওর সাথে কথা বলে। আমি বললাম, বাহ!! তোমার তো জাদু আছে... আরও অনেক কিছু বলছিলাম
কিছুদিন পর মেয়েটা আমাকে বলতে থাকে "আই মিসিং হিম" মানে সে ওই ছেলেরে মিস করতেছে। ভালো তো... ভালো না... কোথাও যেন পড়েছিলাম, মেয়েরা খারাপ ছেলের প্রতি আকৃস্ট হয়!! যাক, ওইটা প্রমান পাইলাম হাতে নাতে...
কিছুদিন পর মেয়েটি আমাকে কিছু না বলে ব্লক করে কোন কারন ছাড়া। পরে জানলাম, মেয়েটি ওই ছেলেটির সাথে আবার ডুবে ডুবে জল খাচ্ছে। আমি মেয়েটারে রেস্পেক্ট করতাম কিন্তু ব্লক খাবার পর মনে হল মেয়েটার মানসিক সমস্যা আছে। রেস্পেক্ট তো আর নেই বলা চলে। যদিও আমারে আনব্লক করছে কিছুদিন পরে কিন্তু আমি মাইয়াটারে একটা কল ও দিই নাই, ম্যাসেজ ও দিই নাই, জানার চেস্টাও করি নাই। তখন থেকে মনে হয়তেছে আপদ বিদায় হয়ছে। কেন মনে হয়তেছে আমি নিজেও জানি না।
কাল দেখলাম, মেয়েটি তার অন্য একটা ফেক অ্যাকাউন্ট থেকে আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠাইছে। এখনও একসেপ্ট করি নাই। বুঝতেছি না করবো কিনা???
একটি মেয়ে, একজন সন্ত্রাসী ও আমার ফেসবুকীয় ভালবাসা
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন
এখানে সেরা ইগো কার?
ব্লগারদের মাঝে কাদের ইগো জনিত সমস্যা আছে? ইগোককে আঘাত লাগলে কেউ কেউ আদিম রোমান শিল্ড ব্যবহার করে,নাহয় পুতিনের মত প্রটেকটেড বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহার করে।ইগো আপনাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছে, টের পেয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন
এবং আপনারা যারা কবিতা শুনতে জানেন না।
‘August is the cruelest month’ বিশ্বখ্যাত কবি টিএস এলিয়টের কালজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘The Westland’-র এ অমোঘ বাণী যে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে এমন করে এক অনিবার্য নিয়তির মতো সত্য হয়ে উঠবে, তা বাঙালি... ...বাকিটুকু পড়ুন
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন
মার্কিন নির্বাচনে এবার থাকছে বাংলা ব্যালট পেপার
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলার উজ্জ্বল উপস্থিতি। একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিল বাংলা।সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে... ...বাকিটুকু পড়ুন