প্রত্যেক মানুষ বয়স ভেদে ও চিন্তার প্রসারতা ভেদে একই বস্ত বা ধারনাকে পৃথক পৃথক ভাবে দেখা অনুভব করা ও বুঝবার ক্ষমতা রাখে,এটা মানুষ ভেদে যেমন পৃথক হয় সময় ভেদেও পৃথক হয়ে যায়।একথা সত্য যে সময় নিরপেক্ষ কোন ধারনা নেই।সময় নিরপেক্ষ দৃশ্যপট বা বস্ত্ত থাতে পারে।যেমন আমাদের আকাশ পর্বত নদী বায়ু পানি অতীতে যেমন ছিল এখনও তেমন আছে।কিন্তু এসব সম্পর্কে ধারনা জনে জনে ও যুগে যুগে বদলে গেছে।অতএব কোন ধারনারই সময় নিরপেক্ষ ও সর্বজন বোধগম্য বা প্রয়োজনীয় অস্তিস্ত্ব নেই।একটা নির্দিষ্ট সময় বা নির্দিষ্ট ভৌগলীয় সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্রে কোন ধারনা সত্য ও কাজে লাগালে আগামী কোন সময় অন্য কোন ভৌগলীয় সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে কাজে লাগবে তা ঠিক নয়।রাজনৈতিক,ধর্মীয়,দার্শনিক,সামাজিক,প্রশাসনিক বা অর্থনৈতিক কোন ধারনাই সব লোকের সব সময়ের জন্য সত্য নয় এবং গ্রহন যোগ্য নয়।এর নিরন্তর বদল হচ্ছে এবং হওয়াটাই মানবিক, না হওয়াটা মানবিক গুনের দৈন্যতা একরূপ অপমানকর দাসত্ব।সবচেয়ে ভয়াবহ এই যে এই দৈন্যতা হিংসা হানাহানি,বন্ছনা ও লুন্ঠন বাড়িয়ে তোলে।শান্তি ও মানবিক মূল্যবোধকে অসম্ভব করে তোলে।
যারা ধারনা সমূহকে সময় জন সংস্কৃতি ও জন জীবন যাপনের প্রয়োজনে পরিবর্তন করতে পারে না বা পরিবর্তন গ্রহন করতে অপরাগ তারা মূর্খ।এরা জৈবিক ক্রিয়াকান্ত নির্ভর কান্ড জ্ঞানহীন মানুষ।এদের আচরন কিছুকে সৃষ্টি করে না এবং এরা সৃষ্টিকে ধ্বংস করে।যারা ধারনা সমূহ বদলাতে রাজি নয় বা বদলের বিরোধিতা করে তারা স্বৈরাচারী ও সন্ত্রাসী।স্বৈরাচারী চিনতে হলে তাকে অস্ত্র ও বোমা হাতে দেখতে হবে এমন কোন প্রয়োজন নেই।যারাই নানা রাজনৈতিক মত,প্রশাসনিক ধারা,সাংস্কৃতিক জীবন বা ধর্ম বিশ্বাসকে প্রশংসা করতে পারে না তারা স্বৈরাচারী,সন্ত্রাসী ও পর সম্পদ লুন্ঠনকারী হওয়ায় কোন বাধা থাকে না।রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি সন্চয় করে তারা তাই করে।যেমন আজকের পৃথিবী করছে।
পূর্ব কালের সম্রাট ও তার সাঙ্গ পাঙ্গরা যেমন ইন্দ্রিয় বিলাস ভোগের জন্য যে কোন জনপ্রিয় ধর্ম,দর্শন ও রাজনৈতিক ধারনাকে আশ্রয় করে তার প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার জন্য তাকে একমাত্র কালজয়ী বলে অন্য ধারনা সমূহকে ধ্বংস করার প্রয়াস পেয়েছ। বর্তমানে ও সমরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার ব্যবহার করে তারই মহড়া চলছে।
মানুষের আসলে কি প্রয়োজন? সাদা মাটা কথায় বেচে থাকা ও তার জন্য খাবার আশ্রয় নিরাপত্তা যৌনানন্দ ও প্রজনন।এর মধ্যে ব্যক্তি চিরস্হায়ী হতে চায়।এই চিরস্হায়ী হওয়ার প্রয়োজন কেন ব্যক্তি জানে না।এখানে সে প্রকৃতির অন্যান্য বস্ত্ত ও বিষয়ের একটি অংশ মাত্র।কারো ধারনা সাংস্কৃতিকে অস্বীকার ও ধ্বংসের পরিবর্তে প্রশংসা ও গ্রহন করতে পারলে মানব জাতির যে সম্মিলিত শক্তির ঐক্য প্রকাশ পেত তাতেই হয়ত মানুষের আসলে কি প্রয়োজন তার উত্তর পাওয়া যেত।