কার্টুনে ত সবই হতে পারে। বন্দুকের নল দিয়ে টমের বুলেট হয়ে ছুটে যাওয়া থেকে শুরু করে জেরীর নিজের ১০০ গুন বড় হাতুড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এ সবই হয়। একদিন কার্টুন দেখছিলাম। দেখি, একটা কার্টুন মই এনে কোন কিছুতে ঠেস না দিয়ে দাড় করিয়ে দিল এবং তরতর করে মইয়ের একেবারে শেষ প্রান্তে উঠে গেল। ওখানে দাঁড়িয়ে লগা ( ফল পাড়ার লম্বা চিকন বাশ বিশেষ) দিয়ে তার জমির উপর মেঘ টেনে আনল। এবং বৃষ্টি আরম্ভ হয়ে গেল। কি মজা তাই না!!
ধরুন আপনি তীব্র গরমে হাৎপাৎ করছেন । আর কেউ এসে বলল, দাঁড়াও বৃষ্টি নামিয়ে দেয় এবং দিলোও তাই। কেমন লাগবে?
হ্যাঁ। মানুষ নিজের মর্জি মাফিক বৃষ্টি নামাতে সক্ষম হয়েছে। তাকে কৃত্রিম বৃষ্টিপাত বলে। "কৃত্রিম বৃষ্টিপাত" নামটা আমরা সবাই কম বেশি শুনেছি। কিন্তু কিভাবে এই বৃষ্টিপাত ঘটানো হয় আসুন তাই জানি।
বর্তমানে অবশ্য লেজার বীম ব্যবহার করে মাটি থেকেই বৃষ্টি নামানোর কথা ভাবা হচ্ছে। তবে বৃষ্টি নামানোর ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হল বীমানে করে বায়ুমণ্ডলের নির্দিষ্ট স্তরে গিয়ে বৃষ্টি উৎপাদক পদার্থ ছড়িয়ে দেয়া। এভাবে বৃষ্টি উৎপাদনে সাধারণত দুটি পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
♦ড্রাই আইসঃ এ হল কঠিনিত কার্বন ডাই অক্সাইড। প্রচণ্ড চাপে সংকুচিত করে কঠিনে রূপান্তরিত করা হয়। অত্যধিক ঠাণ্ডা, তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে ৭৬ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। অত্যধিক শীতল বলে সাধারণত কোনো কিছুর হিমায়ন ঘটাতে ড্রাই আইস ব্যবহার করা হয়।
♦সিলভার আয়োডাইডঃ ড্রাই আইস থেকে কিছুটা ভিন্ন। ড্রাই আইস যেখানে তার প্রভাবে আশেপাশের অণুগুলোকে বরফ কেলাসে পরিণত করে সেখানে সিলভার আয়োডাইড নিজেই কেলাস হিসেবে কাজ করে। সিলভার আয়োডাইড একটি দারুণ পানিপ্রেমী বা হাইগ্রোস্কোপিক পদার্থ।
এখন বলি কিভাবে এগুলোর সাহায্যে বৃষ্টিপাত ঘটানো হয়-
তুলা সাদা মেঘগুলো বায়ুমন্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার স্তরে ভেসে বেড়ায়। এটিই মেঘেদের দেশ। মেঘগুলো ততক্ষণ পর্যন্ত ভাসে যতক্ষণ বৃষ্টিপাতের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ভারী না হয়।মেঘগুলো যতই ঠান্ডা হোক না কেনো এমনকি তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে হোক, নির্দিষ্ট ওজন না হলে বা ঘনীভূত না হলে তা বৃষ্টি হিসেবে ঝরে পড়ে না। এবং ঘনীভবন প্রক্রিয়া প্রকৃতি নির্ভর।
আর কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে এ ঘনীভবন প্রক্রিয়াটি উক্ত দুটি পদার্থের মাধ্যমে ঘটানো হয়। বিমান দিয়ে ট্রপোস্ফিয়ারে মেঘের স্তরের উপরে উঠে পদার্থ ছড়িয়ে দিয়ে আসা হয়। ড্রাই আইস বা সিলভার আয়োডাইড ঘনীভবনে ভূমিকা রাখে। তবে ড্রাই আইস ও সিলভার আয়োডাইডের কার্যপ্রক্রিয়া কিছুটা ভিন্ন। মাইনাস ৭৮ ডিগ্রী তাপমাত্রায় থাকা ড্রাই আইস আশেপাশের পানির অনুগুলোকে কেলাসে পরিণত করে। আর অন্যদিকে দারুণ পানিপ্রেমী বা হাইগ্রোস্কোপিক পদার্থ হিসেবে খ্যাত সিলভার আয়োডাইড নিজেই কেলাসে পরিণত হয়। কাজের প্রক্রিয়া ভিন্ন হলেও কাজ কিন্তু একি। মেঘের কণা গুলো ভারী করা। এবং
কণাগুলো যখন ওজনের কারণে আর বায়ুস্তরে থাকতে পারেনা তখনি হুড়মুড়িয়ে ধরাধামে নেমে আসে।
অতি সরল ও সংক্ষেপে লিখেছি। বিস্তারিত জানতে চাইলে......
view this link
view this link
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৫