সিমেন্টের বস্তা কাঁধে সিঁড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে চোখের পানি আর কপাল বেয়ে পড়া ঘামে দেখতাম জীবন ও জীবিকার প্রহসনে স্বপ্নগুলোর অপমৃত্যু। হাউজ কিপারের ড্রেস গায়ে চাপিয়ে হোটেলের টয়লেট সাফ করার কোন এক অবসরে জানালার পর্দা সরিয়ে ঈদের আনন্দ মিছিলে মানুষের বন্যায় ভেসে যেতে দেখেছি আমার স্বপ্নগুলো। স্বপ্ন ভাঙার এক বুক ব্যাথা নিয়ে হোটেল হিলটনে ওয়েটারের ব্লেজার গায়ে চাপিয়ে টিপসের আশায় গেষ্টের সামনে আমি পারিনি বিমানবালার হাসি হাসতে।
একদিন স্বপ্নের ছেঁড়া পালে ঠিক ই হাওয়া লাগতে শুরু করেছিল। আবারো বুনেছিলাম স্বপ্নের জাল। পাগলাটে স্বপ্নগুলো একে একে মুঠোবন্দি হতে থাকে। কাউকে আপন করে পাবার উন্মাদীয় নেশায় একদিন দেখি, আমার স্বপ্ন আরেকজনের আঘাতে প্রথম লাল রং ঝরিয়ে শ্রান্ত হয়তোবা আমোদিত। আর আমি ???? স্বপ্নদোষের যাতনায় পুরোপুরি বিদ্ধস্ত , দুঃস্বপ্নের করোটিতে নিমজ্জিত। পাঁচজন মানুষের একটা পরিবারের কথা ভেবে প্রেম ভালোবাসা নামের স্বপ্নগুলোকে ছুটি দিয়ে আবারো উঠে দাঁড়াই। তাদের স্বপ্নে নিজকে বিলিয়ে দিতে আবারো নিজেকে পুনর্বাসন করি। স্বপ্নগুলো ছোঁয়ার নেশায় চলতে চলতে ক্লান্ত শরীর বিদ্রোহ করে উঠে। তখনই নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি স্বপ্নের মহাসাগরের একহাঁটু পানিতে আমি দাঁড়িয়ে ; সামনে বিশাল সাগর – আমাকে পাড়ি দিতে হবেই।
স্বপ্নদেখি একদিন আমার নিজেরও একটা ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান হবে। আফ্রিকাতে নিয়ে যাব বাংলাদেশী ঔষধ। আমার অফিসের ঝাড়ুদার থেকে শুরু করে সবাই হবে আমার বন্ধু। কয়েকটা বাংলাদেশী কোম্পানীর সাথে এগ্রিমেন্টও করে এসেছি। স্বপ্নে বিভোর আমি শুধু পারিনি বাবার দেখানো পথের মানুষ হতে। নিজের অজান্তে অবচেতন মন বলে উঠে, কে আমি ??? কেনই বা এমন কন্টকময় পথে পথচলা ??? আমি শুধুই জানি - স্বপ্নগুলো ছুঁতে গিয়ে স্বপ্নের নেশায় মাতাল আমি এক দিকভ্রান্ত যুবক।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০০৯ রাত ২:০৯