somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেন্ট মার্টিনের পথে ভ্রমন বাংলাদেশ-২

০৪ ঠা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আগের পর্ব

সেন্ট মার্টিনের পথে ভ্রমন বাংলাদেশ-১

টেকনাফে নেমেই আমি রাব্বি এবং রাহাত ভাই ছুটলাম টেকনাফ ঘাটে, উদ্দেশ্য সেন্ট মার্টিন যাওয়ার দেশী নৌকা ঠিক করা। ভাগ্য সুপ্রসন্ন ঘাটে গিয়ে খবর পেলাম সকাল ৯টায় একটি নৌকা সেন্ট মার্টিনের দিকে রওয়ানা দিবে সাথে সাথে আমারা আমাদের ২২ জনের জন্য সেই নৌকায় সিট বুকিং দিলাম বলাতো যায়না পরে যদি না পাই। নৌকা ঠিক করে আবার ফিরে এলাম বাস কাউন্টারে সবাইকে জনানো হলো ঠিক ৯ টায় আমরা সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করব। তার আগে সকালের নাস্তা করা দরকার, ঠিক হলো টেকনাফ ঘাটের হোটেল কস্তুরীতে সকালের নাস্তা করব সেই মোতাবেক আমাদের ব্যাগ ব্যাগেজগুলো রিক্সা-ভ্যানে ঘাটে পাঠিয়ে দেয়া হলো টুট ভাই নিজেই থেকে গেলেন ওগুলো দেখা শুনার জন্য। আমার হোটেল কস্তুরীতে ডাল পরটা আর ডিম মামলেট দিয়ে সকালের নাস্তা সারলাম।


ছবি : দেশি নৌকায়-১

দেশী নৌকা সম্পর্কে আমার খুব একটা ধারনা ছিলনা, মনে করেছিলাম আমরা ২২ জন সাথে হয়ত আরো ৫ /১০ জন নিয়েই রওয়ানা দিবে। কিন্তু একি মানুষ আর মালামাল উঠছেতো উঠছেই শেষই হচ্ছে না। আনুমানিক ২০ ফিট বাই ৭ ফিট এই নৌকাতেই ৭০ জনের মতো লোক উঠল সাথে কয়েক মণ বিভিন্ন ধরেনর মালামাল বোঝাই করা হলো নৌকায়। অবশেষে বাংলা টাইম ৯ টার নৌকা ছাড়লো ১০:২০ মিনিটে। ছোট খাল জোয়ারের পানিতে টুইটুম্বুর, সেই খাল ধরে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি নাফ নদীর দিকে। কিছুদুর যাওয়ার পর নাফ নদীর প্রবেশ পথেই আছে বিডিআর চেক পোস্ট, নিরাপত্তা চেকিং এর জন্য নৌকা এখানে দাড়ালো দুইজন বিডিআর জওয়ান এসে দেখে গেলেন নৌকায় কোন অবৈধ মালামাল আর কোন বর্মী নাগরিক আছে কিনা। আবার নৌকা চলতে শুরু করলো নাফনদীর দিকে।


ছবি : দেশি নৌকায়-২



ছবি : নাফ নদীর প্রবেশ মুখ বিডিআর চেক পোস্ট

অপরুপ সুন্দর নাফ নদী যার সৌন্দর্য বর্ননা করার মতো ভাষা আমার জানা নেই । আমি যতবার এই নাফনদীকে দেখি ততবারই মুগ্ধ হই এর অপার সৌন্দর্যে। এই নাফ নদী থেকেই টেকনাফ নামের উৎপত্তি, নাফ নদীর বাঁকে(স্থানীয় ভাষায় বাঁককে টেক বলা হয়) অবস্থিত বলে এ শহরের নাম টেকনাফ। আমাদের নৌকা চলছে নাফ নদী ধরে সমুদ্রে লঘুচাপের কারনে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বড় বড় ঢেউ আমাদের দোলা দিচ্ছে সাগরের কি অবস্থা এখান থেকেই বুঝা যাচ্ছে। আমাদের পাশ দিয়ে যাওয়া নৌকা গুলো হাঁক দিয়ে যাচ্ছে "দইজ্জা গরম" এর মানে হলো সাগর উত্তাল।

ছোট ছোট নৌকা মাছ ধরছে নদীতে। ঢেউয়ের দোলা খেতে খেতে নাফ নদীর অপরুপ সৌদর্য উপভোগ করছি দুরে নদীর অপর পাড়ে রুপকথার কামরুপ কামাক্ষার দেশ বার্মা (মায়ানমার)। যতই সাগরের কাছাকাছি যাচ্ছি ঢেউয়ের বেগ ততই বাড়ছে মনে মনে ভাবলাম দইজ্জা সত্যিই ভয়ানক গরম। কিছুক্ষনে মধ্যে আমাদের পেছেনে কেয়ারী সিন্দাবাদ কে দেখা গেল আমাদের অভিযাত্রীরা অনেকে আক্ষেপ করলো কেন আমরা সিন্দাবাদের জন্য অপেক্ষা করলাম না। আরো কিছুক্ষন চলার পর আমরা মোহনায় এসে পড়লাম মোহনায় বিশাল বিশাল ঢেউ যেন আমাদের এই ছোট্ট তরীটাকে পিষে ফেলতে চাইছে। আমরা বঙ্গোপসাগর ধরে চলছি বিশাল বিশাল ঢেউয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে। এরই মাঝে লক্ষ্য করলাম কেয়ারী সিন্দাবাদ ঢেউয়ের বেপরওয়া নৃত্য দেখে তার গতি পথ ঘুরিয়ে আবার টেকনাফের দিকে রওয়ানা দিলো। আমাদের নৌকার মাঝি নির্বিকার আপন মনে হাল ধরে আছেন, সামনে আগানোই যেন তার একমাত্র লক্ষ্য।


ছবি : বমি করছে ত্রিভুজ

যতই এগিয়ে যাচ্ছি ঢেউয়ের আকার তত বড় হচ্ছে এরই মাঝে নৌকায় অনেকে কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে মিতু ভাবীতো পলাশ ভাইকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদছেন। বিশাল বিশাল ঢেউ আমাদের নৌকাকে ২০/২৫ ফিট উঁচুতে নিয়ে আবার সাগরে আছড়ে ফেলছে সে এক ভয়ঙ্কর আর রোমাঞ্চকর অনুভুতি। ইতিমধ্যে অনেকের সী সিকনেস শুরু হয়ে গেছে আমার পাশে ত্রিভুজকে দেখলাম রীতিমতো নৌকার কিনারা ধরে সাগরে উপুড় হয়ে বমি করা শুরু করেছে পূরবী আপু ওর পিট মালিশ করে দিচ্ছে।

চলবে..................................
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×