ভাইয়েরা, ছাত্র জীবনে হয়ত আপনারা কেউ কেউ বাঘের মত হিংস্র ছিলেন। ভুলে যান সেই সোনালী অতীত। একজন সফল কামলা হতে হলে আপনাকে হতে হবে বিড়ালের মত নম্র। মজা করলাম। আসলে আপনাকে হতে হবে অনেক কৌশলী। আমার চাকুরি জীবন খুব বেশি দিনের না। তবে এই অল্প কদিনেই টের পেয়েছি কর্পোরেট লাইফ কতটা কঠিন! টিকে থাকতে হলে আপনাকে প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রমাণ করে যেতে হবে। অনেক কিছু মানিয়ে নিতে হবে যার জন্য আপনি হয়ত কখনোই প্রস্তুত ছিলেন না । একজন মেধাবী বা দক্ষ ব্যাক্তিই যে একজন সফল কর্পোরেট হতে পারবে এমন কোনো গ্যারান্টি নেই। সফল কর্পোরেট হওয়ার জন্য কিছু এডিশনাল গুনাবলি থাকা প্রয়োজন। এই পোস্টটি হচ্ছে মূলত সেই সকল ভাই ব্রাদারদের জন্য যারা রিসেন্টলি কামলা হয়েছেন বা খুব শীঘ্রই কামলা হতে যাচ্ছেন।
অভিজ্ঞ বড় ভাইদের অনুরোধ করছি আমার কোনো ভুল ত্রুটি হলে ধরিয়ে দিন। আপনাদের মূল্যবান মতামত দিয়ে পোস্টটির গুরুত্ব বাড়িয়ে দিন।
কিভাবে হবেন একজন সফল কর্পোরেট (কামলা)?
টিপস ১ – প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর থেকেই নিজের একটা চমৎকার ইমেজ গড়ে তোলার চেষ্টা করুন। কথা বলুন খুব মেপে মেপে। এমন কোনো কথা বলবেন না যা আপনার বুদ্ধিমত্তাকে অন্যের নিকট খাটো করার সম্ভবনা বাড়িয়ে তুলে।
টিপস ২ – চাকুরিতে জয়েন করার পরই অফিসের পিয়ন থেকে শুরু করে সকল সহকর্মীর নাম ঠটস্থ করে ফেলুন।
টিপস ৩ – চোখ কান সর্বদা খোলা রাখতে হবে। অফিসের কোথায় কি হচ্ছে না হচ্ছে তার নিয়মিত আপডেট রাখতে হবে।
টিপস ৪ – কখনোই কোম্পানী সম্পর্কে নিজের হতাশা অন্য কারো কাছে প্রকাশ করা যাবে না। বরং কেউ হতাশা প্রকাশ করলে, তাকে থামিয়ে, কোম্পানী সম্পর্কে ইতিবাচক কথা বলতে হবে।
টিপস ৫ – কাউকে খুশী করতে গিয়ে বা কারো কাছে নিজেকে ভালো প্রমান করতে গিয়ে এমন কোনো কাজ কখনোই করা যাবে না যা কোম্পানীর নীতি বহির্ভূত।
টিপস ৬ – কোনো প্রকার সমলোচনায় অংশগ্রহন করা যাবে না। সেটা কোনো কলিগকে নিয়ে হোক অথবা বসকে নিয়ে হোক। বরং ঐ মূহুর্তে কলিগ বা বসের পজিটিভ দিকগুলো নিয়ে কথা বলা যেতে পারে।
টিপস ৭ – কোনো কলিগকে ব্যাক্তিগত ভাবে পছন্দ না হলেও চেহারা বা কথা বার্তার মাধ্যমে সেটা প্রকাশ করা যাবে না। সবচেয়ে অপছন্দনীয় ব্যাক্তির সাথেও সর্বদা হাসিমুখে কথা বলতে হবে।
টিপস ৮ – কখনোই সহকর্মীদের সাথে ঝগড়া বিবাদে লিপ্ত হওয়া যাবে না বরং কেউ যেচে পরে ঝগড়া করতে এলেও তাকে কৌশলে ঠান্ডা করতে হবে। রাগ উত্তেজনা সর্বদা পরিহার করে চলতে হবে।
টিপস ৯ – আপনি এক কোম্পানীতে থাকা অবস্থায় অন্য চাকুরী খুজছেন। ভালো কথা। কিন্তু এই ব্যাপারটা ভুলেও অন্য কাউকে বুঝতে দেয়া যাবেনা।
টিপস ১০ – কলিগকে কখনো বন্ধু ভাবা যাবেনা। তাই কলিগকে বিশ্বাস করে একান্ত ব্যাক্তিগত কথাবার্তা শেয়ার না করাই ভালো।
টিপস ১১ – কোম্পানীর প্রতি আপনার কোনো দরদ না থাকলেও অন্যকে বোঝাতে হবে কোম্পানীর প্রতি আপনার দরদের কোনো শেষ নেই।
টিপস ১২ – কাজ করলেই হবে না। কাজের অগ্রগতি নিয়ে নিয়মিত বসের সাথে আলোচনা করতে হবে। তিনি আপনার কাজে সন্তুষ্ট কিনা বা তিনি আপনার কাছ ভিন্ন কিছু আশা করছেন কিনা, তা নিশ্চিত হতে হবে।
টিপস ১৩ – বসের সাথে যাতে কোনোভাবেই কমিউনিকেশন গ্যাপ তৈরি না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। বস যদি কাঠখোট্টা টাইপের না হয় তাহলে তার সাথে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা যেতে পারে। তবে অবশ্যই দূরত্ব বজায় রেখে।
টিপস ১৪ – বস কি পছন্দ করেন বা না করেন সেটি সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে। বস যা অপছন্দ করেন বসের সামনে কখনোই তা করা যাবেনা। হতে পারে বস যা পছন্দ করেন আপনি হয়ত তা করেন না। তবে এই ক্ষেত্রে আপনাকে কম্প্রোমাইজ করতেই হবে।
টিপস ১৫ – বসের ঝাড়ি খেয়ে এসে কলিগদের সাথে বসের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করা যাবেনা। বলা তো যায় না আপনার কোনো সহকর্মীই বসের কানে কথা লাগিয়ে দিতে পারে। বেস্ট ওয়ে হলো, এমন একটা ভাব করা যেনো কিছুই হয়নি।
টিপস ১৬ – বসকে মাঝে মধ্যে সারপ্রাইজ গিফট দেয়া যেতে পারে। এতে আপনার সাথে বসের সম্পর্ক গভীর হবে। এবং কোনো দূরত্ব থাকলে তা দূরীভূত হবে।
টিপস ১৭ – বস কোনো পার্টিকুলার বিষয়ে আপনার চেয়ে কম জানতে পারে। সেক্ষেত্রে সরাসরি বসের সামনে নিজেকে পন্ডিত প্রমান করার চেষ্টা না করাই ভালো। কৌশলে বসকে সেটা বুঝিয়ে দেয়া যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে বস যাতে কোনোভাবেই আপনার কথায় অপমানিত বোধ না করেন।
টিপস ১৮ – কোনো রাজনৈতিক আলাপচারিতায় বসের সাথে কোনো স্পেসফিক পয়েন্টে আপনার দ্বিমত থাকতে পারে। এই ক্ষেত্রে স্কিপ করাই বেটার।
টিপস ১৯ – যদি বুঝতে পারেন বসের সাথে কোনোভাবেই আপনার আন্ডারস্ট্যান্ডিং হচ্ছে না, তাহলে আর দেরী না করে নতুন চাকুরী খোজা শুরু করেন।
এডিশনাল টিপস – সফল কামলা হতে হলে ধৈর্য্য এবং তৈল মর্দনের কোনো বিকল্প নেই।