আজকে ব্লগে নিক নিয়ে তর্ক-বিতর্ক দেখে অনেক দিন আগের একটা ঘটনা মনে হলো। ঘটনাটা কাওকে আক্রমণ বা সমর্থনের জন্য নয়। তবে ঘটনাটা শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না। একদিন বিকেলে অফিস থেকে ট্রেনে করে ফিরছি। ট্রেন ভর্তি যাত্রী। এর মধ্যে একজন তরুণী ট্রেনে উঠার পর থেকে যাত্রীদের উতসুক দৃস্টি দেখে সামনের মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আক্কেল গুড়ুম। আমার প্রবাসী জীবনে এরকম ঘটনার মুখোমুখি কখনও হইনি। মেয়েটি সুন্দর ও স্মার্ট। পড়নে কালো স্কার্ট আর সাদা শার্ট। কিন্তু বিপত্তি অন্যত্র। মেয়েটির স্টকিং হচ্ছে বিপত্তির মূল কারণ। সবাই হা করে তাকিয়ে আছে মেয়েটির স্টকিং (লম্বা মোজা)র দিকে। সামনে বসা দু'জন বয়স্কা মহিলা তরুণীটির দিকে ইংগিত করে যা বলছে তা মোটেও শোভনীয় নয়। তরুণীটি তা-ও বেশ নির্বিকার। তার এই নির্বিকার ভংগী আমাকে অবাক করল। তার মোজায় ইংরেজী হরফে অশ্লীল শব্দ। পুরোটা সাদা মোজাতে একটু পর পর ডিজাইন করে লেখা রয়েছে "....াক মি"। কোন ভদ্র তরুণী এধরণের অশ্লীল মোজা পড়ে পাবলিক ট্রেনে অবলীলায় ভ্রমণ করছে তা সত্যি আমাকে অবাক করল। মেয়েটিকে নিয়ে অনেকে ফিসফিস করে বলতে লাগল, বোধ হয় আদিম পেশায় জড়িত। পাবলিক ন্যুইসেন্স জিনিসটা নির্বোধরা বুঝে না। ব্যক্তি স্বাধীনতার মানে এই না যে যা ইচ্ছে তা-ই করা।
মেয়েটি অন্ধ বা কালা ছিল কি না জানি না। তবে নির্বিকার ছিল। আজকে ব্লগেও যদি কেউ এমন কোন নিক বা নাম নেয় যা এদেশের ইতিহাসকে, রক্তের ত্যাগকে খাটো করবে, মুক্তিসংগ্রামকে খাটো করবে, তাহলে তা স্বভাবত:ই প্রতিবাদ আর প্রতিরোধের শিকার হবে। অবশ্য সেই মেয়েটির মতো যদি সত্যি সত্যি কেউ আদিম পেশার একজন হয়ে থাকে, তবে তাদের পক্ষে নির্বিকার থাকাটা অসম্ভব না। আজকের ব্লগের "নিক" নিয়ে তর্ক বিতর্ক দেখে স্মৃতির পাতা থেকে এই ঘটনাটা মনে পড়ল। কাওকে আঘাত করে থাকলে দু:খিত।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ১২:৫৬