আজ কর্নেল তাহেরের স্ত্রীর বরাত দিয়ে দৈনিক ইত্তেফাক একটি নিউজ প্রকাশ করেছে। “জিয়া এত নিষ্ঠুর ছিল জানতাম না”-লুতফা তাহের।
ইতিমধ্যে কর্নেল তাহেরের ফাঁসি বৈধ কি অবৈধ ছিল সে ব্যপারে পরিবারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে একটি মামলা উঠেছে। কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাহেরের ফাঁসি সংক্রান্ত নথিগুলো গায়েব হয়ে গেছে। তাই বুঝা যায় তাহেরের ফাঁসি নিয়ে আগামি কয়েকদিন পত্রপত্রিকাগরম থাকবে বলা যায়।
কর্নেল তাহের মুক্তিযুদ্ধে একজন বীর সেনাপতি- বীর উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত। যুদ্ধে তিনি একটা পা হারান। বংগবন্ধু সরকারের সময়ই তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। এরপর জড়িয়ে পড়েন জাসদ রাজনীতিতে- এসবই আপনারা জানেন।
এখন আমার প্রশ্ন হল ’৭৫ এর পটপরিবর্তনের পর তাহেরের ভুমিকা কি আসলেই বিপ্লবী ছিল?তিনি কি আসলেই নির্দোষ ?আমরা দেখতে পাই, ’৭৫ এর পর খুনী মোশতাক সরকার ক্ষমতায় এলেও খালেদ মোশাররফ, জিয়া, আর তাহেরের মাঝে
ক্ষমতা লাভের দৌড় ।দেশ যখন নেতৃত্বশুন্য তখন এই তিন ত্রয়ীর মাঝে ১০০ মিটার দূরে রাখা ক্ষমতার চেয়ারটা কে আগে দখল করতে পারবে তা নিয়ে দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়। দৌড়ে যেভাবেই হোক খালেদ মোশাররফ মারা গেছেন, জিয়া চেয়ারে কাছে পৌছে গেছেন। এই ক্ষমতার দৌড় বড়ই নিষ্ঠুর খেলা, হয় বিজয় নয়তো মৃত্যু। জিয়া ফিরে দেখলেনখালেদ মরে গেলেও তাহের ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে। তাই ক্ষমতা নিরংকুশ করতে তাকে শেষ করে দেন।
এখন আমার প্রশ্ন হল তাহের কেন দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়েছিল? একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার কি সেনাবাহিনীতে রাজনৈতিক প্রচারনা চালাতে পারে? রাজনৈতিক লিফলেট বিতরন করতে পারে? এখন কি পারবে এরশাদ তার জাতীয় পার্টির পক্ষে সেনাবাহিনীতে প্রচারাভিযান চালাতে? তাহের কেন খালেদ মোশাররফের বিপক্ষে জিয়ার পক্ষেএকজন অবসরপ্রাপ্ত অফিসার হয়েও সেনাবাহিনীতে লিফলেট, প্রচারাভিযান চালাতে গেল?
তাহের জিয়ার কাঁধে বন্দুক রেখে ক্ষমতা চেয়েছিল। জিয়া সে সুযোগ দেননি।সে নিজেই ক্ষমতা চেয়েছিল। ফলে যা হবার তাই হল। এখানে ছিল না কোন আদর্শ, ছিল না কোন দেশপ্রেম, ছিল না বিপ্লব। যা কিছু ছিল হত্যা, বেইমানী, অভ্যুত্থান- সবই ক্ষমতার জন্য। কেউ ধোয়া তুলসীপাতা নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:০৪