সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে মহা সংকটে পড়েছে সরকারী দল!
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
দিন যত ঘনিয়ে আসছে সরকারী দলের প্রার্থীদের পরাজয় তত নিশ্চিত হয়ে উঠেছে। হিসাব কিতাব করে বড় গোলমালে পড়ে গেছে আম্লীগ। কি করি কোন দিকে যাই - বড় দিশাহারা অবস্থা! সুষ্ঠু ভোট হলে সরকার বিরোধীরা ৪টিতেই জিতবে, এটা এখন সবাই বিশ্বাস করেন। রাজশাহী ও বরিশালে ভোটের ব্যবধান হবে বিরাট। খুলনাতে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে জামায়াত ও হেফাজত কোমড় বেধে নেমেছে, অথচ জাতীয়পার্টির প্রার্থীর কল্যানে তালুকদার খালেককে ব্যাপক হারের সম্মুখীন হতে হবে। সিলেটে আরিফের পক্ষে বিজয়ের রব উঠেছে। আম্লীগের প্রেসিডিয়াম নাসিম সাহেব সে গুজবের দিকে জনগনকে কান না দিতে অনুরোধ করেছেন! মোট কথা ২০ বছরের রাজত্বহারা হচ্ছেন এবার কামরান।
৫ মে পরবর্তী বিএনপির খুব নাজুক সময়ে ৪ সিটির নির্বাচন ঘোষণা করে সরকার সুবিধা নিতে চেয়েছিল। আম্লীগ ধরে নিয়েছিল যেহতু বিএনপি তত্বাবধাযক সরকারের দাবীতে আন্দোলন করছে, তাই বিএনপি সিটি নির্বাচন বর্জন করবে। তাহলে নির্ঘাত ওয়াক-ওভার পাবে সরকারী দল। আর নেহায়েত যদি বিএনপির স্থানীয় নেতারা ইলেকশনে আসেও, তবে কেন্দ্রের খারাপ পরিস্থিতিতে হয়ত দল আর তেমন এগিয়ে আসবে না। মোট কথা ২০০৮ সালের মত একটা নির্বাচন আশা করেছিল আম্লীগ। কিন্তু বিএনপি যে এত জোরালোভাবে ইলেকশনে নামবে, বিশেষ করে জোটবদ্ধ হয়ে সকল কোন্দল মিটিয়ে সর্বশক্তি নিয়ে নির্বাচন করতে পারবে, এটা ছিল সরকারের কল্পনারও বাইরে। বরং কার্যত দেখা যাচ্ছে, সরকারী জোটে বিভেদ ও বিদ্রোহী প্রার্থী। খালেদা জিয়ার এমন স্মার্ট গেমে হতবাক হয়ে গেছে আম্লীগ ও মহাজোট!
সরকারী দল ৪ সিটিতে হেরে গেলে ভীষন বিপদে পড়ে যাবে সরকার। বলা চলে, সরকারে থাকার আর কোনো ম্যান্ডেটই থাকবে না। দেশের মানুষ তথা বিদেশীদের কাছে মেসেজ চলে যাবে- আম্লীগের ভয়ানক বিদায় আসন্ন। ওদের নেতা কর্মীরা মুষড়ে পড়েবে, অনেকে বিদেশমূখী হবে। পুলিশ-আর্মি সহ সকল বাহিনী পরিস্কার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলবে। সরকারী প্রশাসন ও কর্মকর্তারা ভবিষ্যত সরকারের লোকদের সাথে যোগাযোগ তৈরী করে সামনের দিনে ভালো থাকা নিশ্চিত করতে চাইবে। সে ক্ষেত্রে বাকী চার মাস সরকার কেবল থাকবে ভেন্টিলেটরে!
আর যদি কারচুপি করে ২/১ টা মেয়র ছিনিয়ে নিতে চায় সরকার, তবে মিডিয়া ও ইলেক্ট্রনিক্সের চরম ব্যবহারের ফলে ধরা পড়ার সম্ভাবনা সমধিক। সেক্ষেত্রে এইসব উপাদান সরকার বিরোধী আন্দোলনে ঘৃতাগ্নি ঢালার সামিল হবে। অতপর এই বিষয়টি নিশ্চিত হবে যে, সরকার সামনের নির্বাচন জোরজরদস্তি করে কেটে নিতে চায়। ”গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয়” তেমন চাপাবাজি নিয়ে দেশী-বিদেশী কারো কাছেই আর সরকার দাড়াতে পারবে না সরকারী দল।
ভোট সুষ্ঠু হলে হেরে গেলেও সরকার আবার বলতে চাইবে যে, আম্লীগ নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে না। কাজেই হাসিনার অন্তর্বতী সরকারের অধীনে নির্বাচনে যেতে বিএনপি যেনো আর আপত্তি না করে! কিন্তু মুশকিলটা অন্যত্র- বিএনপির কাছে হাসিনাকে বিশ্বাস করার মত কোনো নূন্যতম কারন নাই! আর তাই সিটি কর্পোরেশনের বিজয় বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীতে আন্দোলনকে জোরদারই করবে। নবউদ্যমে ১৮ জোট কর্মীরা শেষ পর্যন্ত এটা আদায় করেই ছাড়বে। মোট কথা, সিটি নির্বাচনে বিরোধী দল হারলেও লাভ, জিতলে ডবল লাভ। আর সরকারের প্রার্থী জিতলেও সামনে বিপদ, হারলে মহাক্ষতি!! এখন কি করবে সরকার?
সব মিলিয়ে সরকার এখন মহা দোটানায় পড়ে নিজেদের সর্বনাশের মাত্রা মাপছে! সরকারের লোকেরা এতদিন যে জনপ্রিয়তা নামক বৃক্ষটিতে নিজেরাই কুঠাঘাত করছিল, তা ছিল তাদের দৃষ্টির বাইরে। শেষ সময়ে এসে এখন তা ভূপাতিত হওয়ার অবস্থা। জনপ্রিয়তার এ নাজুক পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে দেশের মানুষ যখন সরকারকে ’নাস্তিকদের দোসর’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে এবং শাপলা চত্তরে গণহত্যার পরে সারা দেশে সাধারন মুসলমানরা সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, সে সময় এমন গুরুত্বপূর্ন সিটি কর্পোরেশনগুলোর নির্বাচন দেয়ার যৌক্তিকতা অনেকেই খুঁজে পাচ্ছে না! জনবিচ্ছিন্ন মন্ত্রীবাহাদুরদের ভাবনা ছিল, ’মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি’ আর ’যুদ্ধাপরাধ বিচার’ নিয়া জনগন সরকারী দলের পক্ষে হুমড়ি খেয়ে পড়বে। কিন্তু দেশ যে ’আস্তিক আর নাস্তিকে’ বিভাজিত হয়ে গেছে- সংখ্যাগুরু মানুষের মনের এই ভাবনাটি ’প্রতিবেশী ও বাম নিয়ন্ত্রিত’ সরকার বুঝতে অক্ষম। বাস্তব অবস্থা না বুঝে নির্বাচন দেয়ার খেসারত গুনছে এখন মহাজোট, অনেকেই বলছেন এর চেয়ে বরং নির্বাচন না দিয়ে আগামী সাধারন নির্বাচনে বর্তমান মেয়রদের প্রভাব কাজে লাগাতে পারত। সব মিলিয়ে সিটি নির্বাচন দিয়ে বিরোধী দলকে বিপদে ফেলতে গিয়ে লাভ-লসের হিসাবে সরকারের নিজেরই এখন নাক-কাটা পড়ছে!!
৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন