বঙ্গবন্ধুর খুনি লে. কর্নেল (অব.) নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশের হাতে তুলে না দেওয়ার ব্যাপারে অভিবাসন (ইমিগ্রেশন) কর্তৃপক্ষের ওপর কানাডার আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। ফলে তাঁকে হস্তান্তরের ব্যাপারে কানাডা সরকারের কিছুই করার নেই। টরন্টো থেকে প্রকাশিত অনলাইন সাপ্তাহিক নতুন দেশ গত বুধবার এ সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশ করেছে।
ওই খবরে বলা হয়, ভ্রমণ ভিসা নিয়ে নূর চৌধুরী ১৯৯৬ সালের মাঝামাঝি কানাডায় আসেন। ওই বছরের ৫ জুলাই তাঁর নামে এই ভিসা ইস্যু করা হয়। কানাডায় আসার কিছুদিন পর তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেন। ১৯৯৯ সালে তাঁর আবেদনের ওপর শুনানি হয় এবং প্রাথমিক শুনানিতেই আবেদন বাতিল হয়ে যায়। তখন নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে কানাডা সরকারের কাছে আবেদন করেন কানাডায় বাংলাদেশের তত্কালীন হাইকমিশনার আমিনুল ইসলাম। ২০০২ সালে আরেক দফা শুনানি হলেও তাঁর আবেদন আর গৃহীত হয়নি। পরে ২০০৪, ২০০৫ ও ২০০৬ সালে পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক আশ্রয়ের সবগুলো আবেদনই নাকচ হয়ে যায়।
সবশেষ ২০০৭ সালের এপ্রিলে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি আপিল বোর্ড মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার কারণে তাঁর রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন নাকচ করে দেন। কিন্তু একই সঙ্গে আদালত নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশ সরকারের হাতে তুলে না দেওয়ার আদেশ দেন।
এর আগে ইন্টারপোলের ঢাকা শাখার অনুরোধে কানাডা ইন্টারপোল নূর চৌধুরীকে ধরিয়ে দিতে পরোয়ানা জারি করে। আদালতের রায়ের পর ইন্টারপোলের অটোয়া অফিস থেকে ফ্যাক্স করে কানাডা বর্ডার অ্যাজেন্সিসের ওয়ার ক্রাইম অ্যান্ড পাবলিক সেফটি বিভাগকে জানানো হয়, বাংলাদেশে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের আদেশ থাকায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে না। মৃত্যুদণ্ডের প্রতি ভবিষ্যতে কানাডা কিংবা বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতিমালার পরিবর্তন হলে তখন এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে নতুন দেশ-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এর পরপরই নূর চৌধুরী কানাডায় বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট সংগ্রহ করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডার প্রচলিত আইন অনুসারে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ থাকলে ওই ব্যক্তিকে সংশ্লিষ্ট দেশের হাতে তুলে দেওয়ার আগে কানাডা ওই সরকারের কাছ থেকে নিশ্চয়তা চাইবে যে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ কার্যকর করা হবে না।
অবশ্য এর আগে কানাডা সফর শেষে দেশে ফিরে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, নূর চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। সে দেশে অভিবাসী হিসেবে বসবাসের জন্য তাঁর আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তাঁকে বহিষ্কারের আদেশ জারি করেছে কানাডা সরকার। তাঁর পাসপোর্টটি কানাডার বাংলাদেশ হাইকমিশন জব্দ করেছে।
Click This Link