আমাদের সুশীল চেহারার মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নাহিদ সাহেব আজ বাণী দিয়েছেন,
বুয়েটের শিক্ষকদের কর্মবিরতি অযৌক্তিক। উনি জ্ঞানী ,মানী হয়তো বা ধনীও তাই উনার কথা বিবেচনা করে দেখতেই হচ্ছে। শিক্ষকদের দাবি কি?? আপনারা কি জানেন?? শিক্ষকদের প্রধান দাবি সমূহ:
১.চাকুরীর বয়স-সীমা ৬৫ করা *
২. ডিপ্লোমা ইঞ্জিঃ জনাব কামাল আহমেদ রেজিস্টার নিয়োগ না করা **
৩. উপাচার্যের ও উপ উপাচার্যের পদত্যাগ এবং উপ উপাচার্যের পোস্ট বাতিল করা। ***
৪.সকল রাজনৈতিক নিয়োগ পুনর্বিবেচনা করা।
কেমন যেন খটকা খটকা লাগে, তাই না??
*চাকুরীর সাধারণ বয়স সীমা ৬০-৬২ বর্তমানে। শিক্ষকদের চাকুরি ৬৫ বছর পর্যন্ত বর্ধিত করতে পারেন উপাচার্য মশায়। সুতরাং সিনিয়র শিক্ষকরা উপাচার্যের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করলে তাকে এমনিতেই বিদায় নিতে হয়। আর এই সুযোগে কিছু রাজনৈতিক নিয়োগ করে বুয়েটকে অচল করে দেয়া যাচ্ছে। সুতরাং এই দাবি শিক্ষকদের নিজেদের স্বার্থরক্ষায় নয়।
** একজন বঙ্গবন্ধু পরিষদনেতাকে রেজিস্টার হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য কি পরিমাণ নির্লজ্জতা যে করেছে বুয়েট প্রশাসন তা বলে শেষ ক রা যাবে না। আমার বক্তব্য হল , বুয়েট যে অধ্যাদেশের অধীনে চলে তাতে ঐ রাজনৈতিক সংগঠনটি অবৈধ হওয়ার কথা।
*** বুয়েটে আগে উপ-উপাচার্য নিয়োগের বিধান ছিল না। বর্তমান প্রোভিসি আসার পরে থেকেই বুয়েটে যত অনিয়মের ডালপালা গজিয়েছে। এর আগে বিশ্বকাপের সময় বুয়েট যে প্রায় দুই মাস বন্ধ ছিল তার মূল ইন্ধন-কারী ছিলও এই লোক। অত্যন্ত ক্ষমতাবান বলে তাকে শাস্তি দেয়া যায়নি।বুয়েটের সকল অপরাজনৈতিক কাজকর্মের প্রধান নিয়ন্তা ইনিই। কদিন আগে পরীক্ষা পিছানো নিয়ে যে রংগটা হল বুয়েটে সেখানেও কলকাঠি নেড়েছেন এই অসভ্য লোক। ছাত্রলীগের ছেলেদের রীতিমত ফোন দিয়ে বলেছেন পরীক্ষা পিছানোর মিছিল নামাতে। এমনিতে বুয়েটে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১ সপ্তাহ এক্সাম পিছায়। উনার কলকাঠিতে তিন দফা বা চার দফা পর্যন্ত এক্সাম পিছিয়েছে।
এই ত্রিরত্নের প্রধান কর্মকাণ্ড হচ্ছে:
ফলাফল ইঞ্জিংনিয়ারিংঃ ছাত্রলীগের এক ছাত্রের টার্ম ফাইনালের রেজাল্ট পালটিয়ে দিয়েছেন উনারা মুল সার্ভার থেকে। এ নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট উনি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। জোরে বলুন মাশাল্লা। বুয়েটের মুল সার্ভারকে বাইবেল সম বিবেচনা করা হয়।সেখানে হাত দেয়ার ধৃষ্টতা দেখানোর কথা ফাঁস হলে পরে খোজ নিয়ে জানা যায় ছাত্রলীগের মামারা এহেন সুবিধা এই একটি নয় আরও পেয়েছে। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগে কারচুপিতো আছেই। তার নিজের পুত্রকে পর্যাপ্ত যোগ্যতা না থাকার পরেও শিক্ষকরুপে নিয়োগ দিয়ে দিয়েছেন।
আমার মনে হয় এর পরে বুয়েটের সর্বনাশের আর বাকি থাকে না। অনেকেই বলবেন বুয়েটের সেরা ভার্সিটি হয়ে থাকতে হবে এমন কোন কথাতো নেই। আমি তাদের কথা মেনে নিচ্ছি। কিন্তু বুয়েটের অবনমনের ফলে আরেক ভার্সিটির উন্নয়ন হোক এটা নিশ্চয়ই আপনিও চাইবেন না। শত হলেও আপনার ট্যাক্সের টাকা!! আমাদের মতামত হচ্ছে ,’যেকোনো ভার্সিটি তার পরিশ্রম দিয়ে বুয়েটকে ছাড়িয়ে যাক।কিন্তু বুয়েট যেনো রাজনীতির কালোথাবায় পড়ে ধ্বংস না হয়’ তাহলে তা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।
আবার শিক্ষামন্ত্রীতে ফেরত আসি, উনি কিভাবে ভাবলেন যে যার পদত্যাগ চাই তার সাথে আলাপ আলোচনা করা সম্ভব??
আমাদের শিক্ষামন্ত্রীর এই ধরণের জনবিরোধী ভূমিকা এটাই প্রথম নয়। ধর্ষক পরিমলকে নিয়ে আন্দোলনের সময় উনি কিন্তু প্রকারান্তরে পরিমলের মিউচুয়াল হুসনে আরার পক্ষ নিয়ে ছিলেন। দুর্ভাগ্য এই জাতীর যাদের মেমোরী গোল্ডফিসের চেয়েও দুর্বল ।
বি দ্রঃ এই লেখাটা মূলত নন বুয়েটিয়ানদের জন্য। আর এই ব্লগটা বুয়েটিয়ান ও নন বুয়েটিয়ান একাধিক ব্যাক্তি ব্যবহার করেন ।সুতরাং এই নিকের প্রতি বিরাগ পোষণ করা প্রত্যাশিত নয়।