অবশেষে ছেলেটি মারা গেলো, তার ছবিতে মালা দিয়ে কাঁদছে তার প্রেমিকা, বন্ধু, পার্ট টাইম প্রেমিকারা। ছেলেটির মা বাবা ব্যাস্ত মানুষ, তারা মিডিয়ার সামনে পানি ফেলেছেন, এর পরে চলে গেছেন নিজ নিজ কাজে, ছেলে মরে গেছে তার পরেও বাবা - মা সমাজ সেবা বন্ধ করেন নি, এটা তো পত্রিকার হট নিউজ, প্রথম পাতাতেই ছোট করে আসবে। ছেলেটি মারা গেছে বাস্তবে তাকে খুন করা হয়েছে, একটু সুখের আশায় সে মারা গেছে।
বড় বড় লোকেরা আসছেন, জ্ঞানী লোকের ছেলে বলে কথা, এর উপর ছেলেটির বাবার মন্ত্রী পাড়ায় সামান্য যোগ আছে। ছেলেটি গান গাইতো, তার জানেন ছেলেটা গায়ক। কি গাইতো অনেকেই জানেন না, শোনা যায় ব্যান্ড করতো, ব্যান্ড পার্টি টাইপের কিছু হবে হয়তো, তাঁরা পুরানা যুগের মানুষ ব্যান্ড মিউজিক, রক অথবা পাশ্চাত্য ধারা তারা বুঝেন না।
ছেলেটি মারা গেছে এখন গাড়ী আসবে তার লাশ হিম ঘরে নিয়ে যাবার জন্য ছেলেটির ভাই এখনো জার্মানি থেকে ফেরে নি। ফিরে এলে তাকে কবরস্থ করা হবে। ছেলেটি ব্লগ লিখতো, তাকে অনেকেই নাস্তিক ভাবে। কিন্তু ছেলেটি অন্য ভাবে চিন্তা করতো বা চিন্তা করতে ভালোবাসতো। ছেলেটি পড়তে ভালোবাসতো সে পড়তো, সে জানতো সব কিছুই ঠুনকো, তার ভেতরেই একটা অবাস্তব জগৎ গড়ে উঠেছিলো। সে সেখানেই বাস করতো।
আজ আকাশে চাঁদ নেই, ছেলেটি ঘুমুচ্ছে শুণ্য তাপমাত্রার কিছু নিচে পানির ত্রৈধ বিন্দুরও সামান্য নিচে। হাত পা গুলো কাঠ হয়ে গেছে...।
অন্য একটি জগতে ছেলেটির ঘুম ভাংলো, আজ খুব হালকা লাগছে ওর। রাতে হঠাৎ সে হারিয়ে ফেলেছিলো নিজেকে, একটা অপার্থিব আলো যেনো শুষে নিয়েছিলো তাকে এর পর আর কিছুই মনে নেই। হঠাৎ ছেলেটি দেখলো সে একটা করিডোরে শুয়ে আছে, সম্পুর্ণ নগ্ন ভাবে পড়ে আছে সে। দূরে একটা আলোর রেখা, ছেলেটি এগিয়ে যায় সেই আলোর দিকে...।
কয়েকজন মানুষ চোখের পানি ফেলছে, একটা ছেলে কবরে চলে যাচ্ছে,একটা মানুষের গল্পের ইতি হতে যাচ্ছে। সবাই কাঁদছে হয়তো এর মাঝে দু একটা কান্না সত্য, বাকী গুলো হাওয়াই মিঠাই। ছেলেটি দেখছে, সে মারা গেছে। কিন্তু তার কোন অনুশোচনা নেই, সে সব গুলো মানুষের নগ্ন শরির গুলোকে দেখছে, সবাই তার মতোই নগ্ন, ছেলেটি হেটে গেলো তার বাড়িতে, তার ছবিতে ফুল দেয়া বাবা মদ খাচ্ছেন, মা পাশের রুমে সিরিয়াল দেখছেন, ছেলেটি তার সর্ব শক্তি দিয়ে চেষ্টা করলো ছবিটাকে ফেলে দিতে...।
কাঁচ ভাঙ্গার ঝন ঝন শব্দ, বাবা মাতাল হয়েই বলে উঠলেন কে কে, কে ওখানে, ছেলেটি বলে উঠলো, আমি...