আগারগাও পাসপোর্ট অফিসে বিড়ম্বনার শেষ নেই। মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রবর্তনের পরও বিড়ম্বনার অবসান ঘটেনি। পাসপোর্ট করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন মানুষ। পড়ছেন দালালদের খপ্পরে। পাসপোর্ট অফিসকে দালালমুক্ত করার ঘোষণা, অভিযান অব্যাহতভাবে চলছে। এদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। কিন্তু পরিস্থিতি যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। দালালদের দৌরাত্ম্য আর ঘুষ, দুর্নীতির কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পরছেন আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট করতে আসা মানুষ। দালাল চক্র এবং অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশের কারণে এ পাসপোর্ট অফিস থেকে বিধি মোতাবেক পাসপোর্ট পাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সময়মতো পাসপোর্ট পাওয়া, পাসপোর্ট অফিসের মূল দরজা পার করে দেয়া, পুলিশ ভেরিফিকেশনের ঝামেলায় না পড়ার কারণ দেখিয়ে দালালরা হাতিয়ে নিচ্ছে পাসপোর্ট করতে আসা মানুষের টাকা পয়সা। পাসপোর্টের জন্য টাকা জমা দিতে গিয়েও সেবা গ্রাহকরা দালালদের হাতে পড়ছেন। কোন ঝুট-ঝামেলা ছাড়া দ্রুত পাসপোর্ট পাইয়ে দেয়ার আশা দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এসব দালাল। আর পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানি এড়াতে সাধারণ মানুষও এই দালালদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। দালালদের মাধ্যমে এখান থেকে রোহিঙ্গাসহ এদেশের নাগরিক নন এমন অনেকেই নির্বিঘেœ বাগিয়ে নিচ্ছেন পাসপোর্ট। আগারগাও পাসপোর্ট অফিসের ফটকে কেউ গেলেই দালালরা ঘিরে ধরে বলেন, পাসপোর্ট বানাবেন, না নবায়ন করবেন? কোনো একটি করানোর কথা বললে তারা বলেন,লাইনে দাড়ালে এক মাসেও কাজ হবে না। তাদের সাহায্য নিলে কয়েকদিনেই কাজ শেষ। সহায়তা দিতে ফটকে দাড়িয়ে থাকা এসব ব্যক্তি ভ্রাম্যমাণ দালাল। টাকার বিষয়ে রফা হলে তারা পাসপোর্ট নিয়ে ভেতরে মূল দালালদের দেন। ওই টাকার পরিমান নির্ধারিত ফির চেয়ে অনেক বেশি। শুধু আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস নয় পাসপোর্টের জন্য ব্যাংকের লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা না দাঁড়িয়ে ২ মিনিটেই কাজ শেষ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা নেয়। এসব দালালদের বিরুদ্ধে অব্যাহত রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান। তবুও থামছে না দালালদের তৎপরতা। সম্প্রতি আগারগাও পাসপোর্ট অফিস এলাকা থেকে দালাল চক্রের ১৬জনকে আটক করে র্যাব-২ এর একটি দল। আটককৃতদের্য ১০জনকে ৩ মাস ও ৬ জনকে ১৫দিনের কারাদন্ড দেয়া হয়। এভাবে প্রায়ই চলে র্যাবের অভিযান। তবুও থামে না দালালদের তৎপরতা।
অভিযোগ রয়েছে, দালালদের নেয়া অতিরিক্ত টাকার ভাগ পাসপোর্ট অফিসের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীও পান। তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়েই এখানকার দালালরা ফুলে ফেপে উঠছে।