মাথায় রশি-দিয়ে-বাঁধা-স্যুটকেস, হাতে লাল কম্বলের প্যাকেট, পায়ে সাদা জুতা, কারো কারো গায়ে কোটও আছে, ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে আসছে বাংগালী; প্রশাসন ও সরকার এই ধরণের বাংগালী চায় দেশে, এরা দেশে হার্ড-কারেন্সী পাঠায় সোনার বাংলায়; মাঝে মাঝে সোনাও আনে। এরা যাবার সময় বাবার শেষ ভিটা ও বউয়ের শেষ চুড়িটা বিক্রয় করে গেছে, এখন বউএর জন্য একটা কম্বল নিয়ে এসেছে, মায়ের জন্য জমজম কুয়ার পানি, বাবার জন্য খেজুর! এরা হলো বাংলার সম্পদ, সরকার ও আদম বেপারীরা এদের বিক্রয় করে; এরা দুবাইতে ১ রুমে ২০ জন থাকে, আদম বেপারী দুবাই গেলে হলিডে-ইন এ থাকে।
এই ধরণের বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ, বেগম জিয়া; শেখ হাসিনার স্বপ্নও অবশেষে এখানে এসে থেমেছে, মনে হচ্ছে; শেখ হাসিনাও এদের চাষ করছেন।
এরা হার্ড-কারসন্সী পাঠায়, এদের বউদের কারা দেখে রাখেন, এদের বাচ্চাদের কারা স্কুলে পাঠান, এদের মেয়েরা কি ভ্যালেনটাইনস ডে পালন করছে, নাকি সেলফোনে পর্ণ দেখছে, কে খবর রাখছে? কিন্তু এসব বাংগালী বিক্রয় করে ট্রিলিয়ন ডলার আয় করছে সরকার, প্রশাসন ও আদম বেপারীরা।
এরা ভোট নিয়ে মাথা ঘামায় না, এরা পদ্মাসেতু নিয়ে কথা বলে না, এরা জানে না যে, দিপুমণি শিক্ষমন্ত্রী হয়েছে, বদি'র বউ এমপি হয়েছে, বাংলাদেশের ঋণ ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁচেছে, ১০ জনে ৩ লাখ ভোট দিতে পারে, এরা নিজের বেতনটা বুঝে, থাকার সীটটা চিনে, বউয়ের সাথে বছরের পর বছর টেলিফোনে কথা বলে, বউ কাঁদে, দেশে আসতে মাঝে মাঝে এইডসও আনে; শেখ হাসিনা ও উনার প্রশাসন এই ধরণের বাংগালী চাষ করছে।
কেহ ভোট নিয়ে আলোচনা করুক, কেহ বাজেট নিয়ে আলাপ করুক, কেহ সুদের হার বুঝুক, কেহ কবিতা লিখুক, কেহ বেকারত্বের কথা বলুক, কেহ প্রশ্নফাঁসের কথা বলুক, কেহ বদি'র বউয়ের এমপি হওয়ার কথা বলুক, কেহ বিল ও পার্লামেন্ট নিয়ে আোচনা করু, কেহ ব্যাংক ডাকাত ও ষ্টক মার্কেট ডাকাতদের নিয়ে কথা বলুক, কেহ পড়ালেখা নিয়ে কথা বলুক, কেহ মন্ত্রীদের টাকা নিয়ে কথা বলুক, কেহ বসুন্ধরার দেশ দখল নিয়ে কথা বলুক, কেহ ১৭.৪ ভাগ হারে ধনী বৃদ্ধি নিয়ে কথা বলুক, সরকার, ব্যুরোক্রটরা ও প্রশাসন তা চায় না; তারা স্যুটকেস মাথায় করে বিদেশযাত্রী বাংগালী চায়, তারা চায় লাল কম্বল হাতে দেশে ফেরা বাংগালী, তারা এসব বাংগালীদের চাষ করার প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ভোর ৬:০৩