ভাষা আন্দোলনের সময় প্রথমবার বাংগালীদের জাতীয়তাবাদী চরিত্র প্রকাশিত হয়েছিল, ভালো লক্ষণ ছিল; তখন ক্ষমতায় মুসলিম লীগ, তাদের রাজনৈতিক ধরণা ছিল, 'বৃটিশের অনুপস্হিতে দেশ তাদের' ; কিন্তু মানুষ অর্থনৈতিক মুক্তির পথ খুঁজতেছিল; মুসলিম লীগের নেতাদের আধুনিক অর্থনীতি ও মানুষের স্বপ্ন সম্পর্কে কোন ধারণাই ছিলো না। আওয়ামী লীগের সামান্য সরকার বিরোধীতাই আওয়ামী লীগকে মানুষের কাছে নিয়ে যায়; কিন্তু তারাও আধুনিক বিশ্বের কেহ ছিলো না, তাদের একমাত্র পরিচয় ছিল, তারা সরকার বিরোধী।
১৯৭৩-৭৪ সালের বাংলাদেশে, আওয়ামী লীগ পুরোপুরি ১৯৫৪ সালের মুসলীম লীগের অবস্হানে চলে যায়; এদের রাজনৈতিক চরিত্র মুসলীম লীগের পর্যায়ে চলে যায়, দেশ মানে আওয়ামী লীগ, আও্য়ামী লীগ মানেই দেশ। এই সুযোগে, ঘরে সিআইএ'এর নেকড়ে হানা দেয়; তারা বুঝতে পেরেছিল যে, মানুষ তাদের ফেলে চলে গেছে।
আজকে, আবারো ১৯৭৩-১৯৭৪ সালের মতো, দেশ মানে আও্য়ামী লীগ, আওয়ামী লীগ মানেই দেশ, তারা ব্যতিত অন্য কেহ দেশ চালাতে পারে, এই ধরণের কথা আওয়ামী লীগ চিন্তাও করতে পারে না; তবে, আজকে তারা ১৯৭৪ বা ১৯৭৫ সালের আওয়ামী লীগ নয়, তারা এখন অনেক সংগঠিত, দেশের থেকে দল বড়; পেছনে কারণও আছে, যারা তাদের থেকে দেশের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল, তারা কোনভাবেই আওয়ামী লীগ থেকে ভালো ছিলো না; সেগুলো ১৯৬০ সালের মুসলীম লীগের জেনারেশন; এরা আওয়ামী লীগকে পরোক্ষভাবে সাহায্য করে গেছে।
আওয়ামী লীগ আধুনিক রাজনৈতিক দলে পরিণত হবে না কখনো; কারণ, তাদের রাজনীতি আদর্শ বা তত্বের ভিত্তিতে নয়, তাদের রাজনীতি দলের শক্তি ভিত্তিক, এবং দল নিজেই স্বার্থ-ভিত্তিক, সম-মনা মানুষেরা দলে আসছে; তবে, মানুষের প্রয়োজনে নয়, নিজ প্রয়োজনে।
এ অবস্হায়, জাতির শিক্ষিত প্রফেশানেল, যারা নিজ প্রফেশান থেকে আয় করে পরিবার চালনার পাশাপাশি রাজনীতি করে জাতির জন্য অবদান রাখতে পারবে, সেই ধরণের মানুষের নেতৃত্বে আধুনিক ভাবনার একটি রাজনৈতিক দলের দরকার আছ জাতিকে বিশ্বের সাথে চলতে হবে। আওয়ামী লীগ এখন স্হবির, মিশরের হোসনী মোবারকের মত জনপ্রিয়, ভোটে গেলে ভোটে জয়ী হবে; কিন্তু ক্ষমতায় না থাকলেও কেহ তাহাদের অভাবে কাঁদবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৩৭