১৯৭১ সালে, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা জাতির জীবন-মরণ ছিলো; তারপর সময়ের সাথে ক্রমে এই বিষয়গুলো গুরুত্ব হারাতে হারাতে, আজ প্রায় ম্লান হয়ে গেছে; মানুষ আজ সেই গৌরবগুলোর সাথে নিজকে কোনভাবে জড়িত দেখছে না, কোন বাঁধন অনুভব করছেন না; অনেকটা জোর করে জড়াতে চাচ্ছেন, যা শুধুমাত্র আনুস্ঠিকতা হয়ে গেছে; অনুস্ঠান শেষ, কোন কিছু নেই!
বিশ্বাস না হয়, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা, বা কোন বীর-শ্রেস্ঠের উপর একটা পোস্ট দেন; সাথে সাথে "ব্লগার ওরিয়নের কানাডা ইমিগ্রেসন প্রাপ্তির সুখবর" দিয়ে আরেকটা পোস্ট দেন, তখন বুঝতে পারবেন!
৪৬ বছর তেমন সময় নয় যে, বিষয়গুলো আমাদের কাছে এত ম্লান হয়ে যাবে; বরং সময়ের সাথে উজ্বল হতে পারতো; সমস্যা কোথায়? সমসয়া হচ্ছে, যারা স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত ছিল না, তারা সেগুলোকে দখল করে বসে আছে, সেগুলোকে তাদের সম্পত্তি করে ফেলেছে, মানুষ থেকে লুকায়ে ফেলেছে!
এই ধরুণ, বিরোধীদলের নেত্রী রওশন এরশাদ যদি 'বিজয় দিবসের বাণী' পাঠায় আমার মন ভরবে? উনি কোথা থেকে বিরোধীদলের নেত্রী হচ্ছেন, উনি আমাদের স্বাধীনতার কে হন? আমাদের এত কস্টের স্বাধীনতার দেশে, যেখানে রাজনৈতিক পন্ডিত, পিএইচডিরা বিরোধীদলের প্রধান হওয়ার কথা, সেখানে এসব লতাপাতা, আগাছা কি করে বিরোধীদলের নেত্রী হয়?
১৯৭১ সালের কোন বড়-কলমি ইপিআর যোদ্ধা যদি আমাকে 'বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা' জানালে আমার বুকটা ফুলে উঠতো!
বিজয় দিবস উপলক্ষে, প্রাইম মিনিস্টার, প্রেসিডেন্ট যে ধরণের অর্থহীন 'বাণী' দেন, তা মানুষের মনে দাগ কাটার মতো কিছুই না; ওখানে প্রাণহীন কিছু শব্দ থাকে, যাহা সেসব বাণীর লেখকেরা নিজেও বুঝে না, লেখক নিজের বাণী পড়ে নিজেই উল্লসিত হয় না।
আজ ৪৬ বছর পরও, মানুষ স্বাধীনতাকে, মুক্তিযুদ্ধকে অনুভব করতে পারতো, যদি শেখ হাসিনা মানুষকে কিছুটা মাংস দি্তে পারেতেন; উনারা নিজেরা মাংস খেয়েদেয়ে হাড্ডি বিতরণ করতে করতে স্বাধীনতাকে হাড্ডি-সর্বস্ব করে ফেলেছেন; মানুষ উনাদের বাণীটুকু পড়ে উহাতে হাড্ডিটুকু দেখেন মাত্র, ওখানে প্রোটিন নেই, প্রাণ নেই; তাই মানুষ বাঁধন অনুভব করছেন না, উৎসাহ কমে গেছে!
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৫৯