বৃটিশ কলোনী থেকে পাকিস্তান সৃস্টির পর, জাতি নিতান্তই দরিদ্র ছিল; পুর্ব পাকিস্তানে কল-কারখানা, চাকুরী বলতে কিছুই ছিলো না বললেই চলে; রেলওয়ে, পোর্ট ও সরকারী চাকুরী ব্যতিত কোথায়ও কিছুই ছিল না; জাতির জন্য একটাই পথ খোলা ছিল, শিক্ষিত মানব সম্পদ গড়ে তোলা, শিক্ষার প্রসার ঘটানো; এই সহজ ভাবনাটি কারো মাথায় আসেনি; উল্টো উহাকে ধ্বংস করার সহজ বুদ্ধিটি কার্যকরী হয়েছে, শুরু করা হয়েছিল 'ছাত্র রাজনীতি'।
যাক, জাতির সৌভাগ্য যে ঢাকা ইুনিভার্সিটি ছিল, সেটাই ছিল দিক নির্দেশনার একমাত্র প্রতিস্ঠান, সেখান থেকে দক্ষ, শিক্ষিত তরুণেরা বের হয়ে এসে দেশ ও জাতিকে গড়ার কথা ছিল; কিন্তু পুরোপুরি বিনা কারণে ছাত্রদের রাজনীতিতে টানার জন্য গঠন করা হলো ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগ গঠন করার কিছু পরেই শেখ সাহেব নিজেই বিচারের সন্মুখীন হন ইউনিভার্সিটির কর্মচারীদের আন্দোলনে যুক্ত হয়ে।
ছাত্রলীগ বাংলাদেশ স্বাধীনতার সময় ভালো ও খারাপ, ২টি ভুমিকাই পালন করেছে; সাধারণ সদস্যদের অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন মুক্তিযোদ্ধা (এফএফ) হিসেবে, দেশের জন্য যুদ্ধ করেন; কিন্তু বিভিন্ন লেভেলের নেতারা ও ঢাকা ইউনিভার্সিটির নেতারা মিলে সম্পুর্ন আলাদা একটি মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপ (বিএলএফ) গঠন করেন; এদের মুল লক্ষ্য ছিল দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, তারা দেশ চালাবেন; এতে প্রায় ৩০ হাজারের মত সদস্য ছিল; যুদ্ধের ভেতর এ রকম একটি আলাদা বাহিনী গঠন করা সঠিক কাজ ছিলো না। এই বাহিনী প্রধানমন্ত্রীর পুরো কন্ট্রোলেও ছিলো না।
স্বাধীনতার পর, ছাত্রলীগ থেকে একটি রাজনৈতিক দলের জন্ম হয়; দেশে নতুন রাজনৈতিক দলের দরকার ছিল, তবে ছাত্রদের দ্বারা পরিচালিত দল সমস্যা ব্যতিত অন্য কিছুই ছিলো না; এবং সেটা প্রমাণ করে গেছে।
আজ শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের জন্য, বা সরকারের জন্য এই দলটির প্রয়োজন ফুরায়েছে; এখন শিবির, ছাত্রদল, ছাত্র ইউনিয়ন আর কোনভাবে সরকারকে কোণ-ঠাসা করতে পারবে না, সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না; সময় হয়েছে, ছাত্রদেরকে পড়াশোনায় ফেরত পাঠাতে; ৬৮ বছর পড়ালেখাকে ধ্বংস করার পর, এখন প্রায়চিত্ত করার সময় হয়েছে; এতে শেখ সাহেবের ভুলটুকুও শোধরানো হয়ে যাবে। ছাত্রলীগ বন্ধ করে; ১ মিনিট পর, ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে দেয়ার সময় হয়েছে আজ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:১৯