ব্লগার 'রাজীব নুর'কে ভীষনভাবে পিটায়েছে আওয়ামী সন্ত্ররাসীরা; হত্যাও করে ফেলতে পারতো; যাক, প্রাণে বেঁচে গেছেন। অনেক সভ্য দেশেও এই রকম মার খাওয়া সম্ভব; পার্থক্য হচ্ছে যে, ওখানে বিচার চাওয়া যায়, বিচার হয়; ফলে, অপরাধী আটকা পড়ে জেলে, পুনরায় একই অপরাধ করার সুযোগ পায় না। রাজীব নুর হয়তো বিচার চাইবে না; কারণ, বিচার চাইতে গেলে, এর থেকেও বড় বিপদে পড়ার সম্ভাবনা আছে।
বিশ্বের প্রায় দেশেই ভিকটিম বিচার না চাইলেও, পুলিশ অপরাধীর বিচার চাইবে; আমাদের পুলিশ বলে, " আমরা ঘটনার কথা শুনেছি, কেহ নালিশ করলে, আমরা ব্যাপারটা দেখবো!"
যারা রাজিবকে পিটায়েছে, তারা জানে যে, তাদের কিছু হবে না, তারা জয়ী; বরং এই মার দেয়ার ফলে, তাদের সামাজিক প্রতিপত্তি বাড়বে, অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক; দলের মাঝে কদর বাড়বে।
১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল খারাপ গেছে, ততকালীন প্রশাশন বুঝেনি; ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮১ সাল খারাপ গেছে; ততকালীন মানুষ বুঝতে পারেনি; ২০১৫ সাল থেকে ২০১৬ সাল অবশ্যই খারাপ যাবে, বর্তমান প্রশাসন তা বুঝতে চাইবে না; ২০১৮ সাল থেকে ২০১৯ সাল আরও খারাপ হবে; আমি কিভাবে বলছি? আপনি লক্ষ্য করলে এই প্যাটার্ণটা আপনার চোখেও পড়বে।
১৭ কোটী লোক যদি এত কম যায়গায়, এত কম সম্পদ ও কম শিক্ষা নিয়ে বসবাস করে, এই ধরণের অরাজকতা সম্ভব। ১৯৭২ সালে যদি ভুমির স্বল্পতা, সম্পদের স্বপ্লতা, নিরক্ষরতার প্রভাবকে বুঝে ১৯৭৩ সালের ও তারপরবর্তী ২০ বছরের জন্য প্ল্যান করা হতো, ১৯৯২ সালে তার ফল পাওয়া যেতো।
আজকের প্যাটার্ণ দেখুন, রাজীব নুর বিচার চাইবে না, বা চাইতে পারিবে না, রাজীব নুর সন্ত্রাসীদের যতটুকু ভয় করেন, তিনি আইন ও বিচারের লোকদেরও ততটুকু ভয় পান, অথবা কমপক্ষে তাদের উপর আস্হা নেই; এটাই যথেস্ট যে, আগামী বছর এর থেকে খারাপ হবেই হবে।
আবার আরেকটা ট্রেন্ড দেখেন, আর্মি তত্বাবধাক সরকারের সময়, প্রাইম মিনিস্টারের অপ্রমাণিত দুর্নীতি নিয়ে একজন লিখেছিলো, ঐ লোকের বিপক্ষে ৬২টি 'মানহানী' মামলা হয়েছে; ৬২টি মামলা কি কোন নিয়ম শৃংখলার মাঝে পড়ে? এখানে কি ১টি মামলাই যথেস্ট নয়? বিশ্বের শতশত প্রাইম মিনিস্টারের বিপক্ষে কোটি কোটী পাতা লেখা হচ্ছে, তর্ক হচ্ছে, বিচার হচ্ছে; তাই বলে কি ৬২টি মামলা হতে পারে? দেশের এটর্নি জেনারেল কোথায়, এটা যে একটা বিশৃংখলা সেটা কি উনার চোখে পড়ছে না?
নাগরিকের মৌলিক অধিকার, আইন শৃংখলা, সামাজিক অবস্হা ও প্রশাসনিক অবস্হাকে বুঝার চেস্টা করুন; আজকে যেই অবস্হায় আছে দেশ, এর থেকেও আরো খারাপ অবস্হায় যাবে দেশ; কারণ, প্যাটার্ণ ভালোর দিকে যাচছে না।