চলচ্চিত্রে বিশেষ যে কয়টি আন্তর্জাতিক পুরস্কারের কথা খুব জোরেশোরে উচ্চারিত হয়, এর মধ্যে গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড অন্যতম। বছরের শুরুতে বিশ্বের চলচ্চিত্রমোদি দর্শক মুখিয়ে থাকে, হলিউড ফরেন প্রেস এসোসিয়েশন প্রবর্তিত এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান দেখার জন্য। একাডেমি অ্যাওয়ার্ড (অস্কার) ও গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের পর সবচেয়ে বেশি দর্শক এই অনুষ্ঠানটি দেখে থাকেন। অনুষ্ঠানটি ১৬৭টি দেশে একযোগে প্রচার করা হয়। সামান্য কিছু বিচ্যুতি ছাড়া গত ৭ দশক ধরে এই পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। এদিক দিয়ে চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট পুরস্কারগুলোর মধ্যে এটি প্রাচীনতম। গত ১১ জানুয়ারি, আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার বেভারলি হিলটনে বসেছিল এর ৭২তম আসর।download (2)
গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডের যাত্রা শুরু ১৯৪৭ সালে, হলিউডের বিখ্যাত রুজভেল্ট হোটেলে। দ্যা হলিউড ফরেন প্রেস এসোসিয়েশন এই পুরস্কার প্রবর্তন করে। তবে আক্ষরিকভাবে ১৯৪৭ সালকেই এর সূচনা কাল বলা যায় না। এর ইতিহাস আরো পুরনো। সেখানে এইচএফপিএ ও গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডের ইতিহাস যেন যুগলবন্দি হয়ে আছে।
শুরুটা ’৪০-এর দশকে। তখন বিশ্ব সরগরম যুদ্ধের আবহে। ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর, আমেরিকার হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের পার্ল হার্বারে অবস্থিত নৌ-ঘাঁটিতে অতর্কিতে বিমান হামলা করে জাপান। পার্ল হার্বার বিধ্বস্ত হয়। এই আক্রমণের ফলে মন্দা নেমে আসে দেশটির চলচ্চিত্রাঙ্গনে। যুদ্ধের যন্ত্রণা থেকে বাঁচতে দর্শক যখন পথ খুঁজছেন, ঠিক সে সময় খ্যাতনামা অনেক চলচ্চিত্রকার এই প্রয়োজন মেটানোর উপায় আবিষ্কারে ব্যাপৃত হন। এ সময় লস এঞ্জেলসকেন্দ্রিক বিদেশী সাংবাদিকেরা নিজেদের মধ্যে মিলিত হন চিন্তা, শ্রম আর সামর্থ নিয়ে। তারা প্রথমে অলাভজনক ও দাতব্য একটি সংস্থার কথা চিন্তা করেন। যদিও এই প্রক্রিয়া নতুন ছিল না। একইভাবে ১৯২৮ সালে গঠিত হয়েছিল হলিউড এসোসিয়েশন ফর ফরেন করোসপন্ডেন্টস্ এবং ১৯৩৫ সালে ফরেন প্রেস সোসাইটি। ১৯৪৩ সালে ওই বিদেশী সাংবাদিকেরা পুনরায় গড়ে তোলেন হলিউড ফরেন করোসপন্ডেন্টস্ এসোসিয়েশন। তাদের মূলমন্ত্র ছিল- ধর্ম বা জাতি বৈষম্যহীন ঐক্য।
প্রথম দিকে চলচ্চিত্র সংস্থাগুলো চিন্তা করে উঠতে পারছিল না, এই ধরনের সংগঠন চলচ্চিত্রাঙ্গনে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে। প্রথমাবস্থায় এর সদস্যরা একটি বাড়িতে আলোচনায় মিলিত হতেন। অল্পদিনেই এই দলে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। সংস্থাটি ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে প্রথম বিশেষ একটি আয়োজন করে। সে সময় তারা ওয়ার্নার বোস. এর স্বত্বাধিকারী হেনরি এম. ওয়ার্নাসকে তার দাতব্য কার্যক্রমের জন্য পুরস্কৃত করে। মাঝখানে সংস্থার সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। ফলে এটি ভেঙে দুটি সংগঠনে রূপান্তরিত হয়। ১৯৫৪ সালে তারা পুনরায় ‘দ্য হলিউড ফরেন প্রেস এসোসিয়েশন’ সংক্ষেপে এইচএফপিএ নামে একত্রিত হয়। প্রথম থেকেই জগৎখ্যাত সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকাররা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বর্তমানে ৯৯ জন সদস্য নিয়ে সংগঠনটি পরিচালিত হচ্ছে। বিশ্বের ৫৫টি দেশের প্রায় ২৫০ মিলিয়ন মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রতিনিধিত্ব করে তারা। John-legend-ReL
হলিউড ফরেন প্রেস এসোসিয়েশনই (এইচএফপিএ) প্রতি বছর গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড দিয়ে থাকে। পুরস্কার প্রদান উপলক্ষে তারা প্রতি বছর প্রায় চার শতাধিক চলচ্চিত্রাভিনেতা, পরিচালক, লেখক, প্রযোজকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। এ জন্য তিন শতাধিক চলচ্চিত্র দেখা হয়। সংস্থা থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করে বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র পরিচালক, অভিনেতা, সাংবাদিকদের সঙ্গে একটা আন্তঃযোগাযোগ গড়ে তোলার কাজ করা হয়। সংগঠনটি আমেরিকার মোশন পিকচার এসোসিয়েশনেরও সদস্য।
প্রতিষ্ঠার প্রথম থেকেই এইচএফপিএ-এর সদস্যরা শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাণের উপর বার্ষিক পুরস্কার প্রদানের কথা চিন্তা করে। বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি হিসেবে তারা চিন্তা করে, হলিউডের সেরা চলচ্চিত্রের বিচারক হিসেবে দর্শকের অংশগ্রহণ বাড়ানো উচিত। সে লক্ষ্যে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বিশেষ অবদান রাখার জন্য ১৯৪৪ সালের প্রথম দিকে টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্স স্টুডিওতে একটি সাধারণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কার দেয়া হয়। সে বছর ‘হুইচ অন দ্য রাইন’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য পল লুকাস সেরা অভিনেতা, ‘দ্য সং অফ দ্য বানাদাত’ সেরা চলচ্চিত্র এবং জেনিফার জোন্স সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পান। পরবর্তী বছরগুলোতে সংগঠনে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এ সময় বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সংগঠনের উদ্দেশ্যকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার কথা চিন্তা করা হয়। এর প্ররিপ্রেক্ষিতে ১৯৪৫-৪৬ সালে সাংগঠনের প্রেসিডেন্ট মেরিনা ক্রিস্টনাস গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডের প্রস্তাব করেন।
গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডের মাহাত্ম্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে ১৯৪৫ সালে বেভারলি হিল হোটেলে এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সে বছর ‘গোয়িং মাই ওয়ে’ চলচ্চিত্রটি সেরা চলচ্চিত্র, ইঙ্গম্যান বার্গম্যানের ‘দ্য বেস্ট অফ সেন্ট মেরি’ ও আলেকজান্দার কোন্স ‘প্রেসিডেন্ড উইলসন’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য যথাক্রমে সেরা অভিনেত্রী ও অভিনেতার পুরস্কার পান।2105_1208_GG_2015_AlternateImage_AC
১৯৫১ সালে গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডের ইতিহাসে প্রথম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। এ বছর তারা ড্রামা এবং মিউজিক্যাল বা কমেডি- এই দুই ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বিনোদন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার জন্য এর পরের বছর সেসিল বি. ডিমিল অ্যাওয়ার্ড চালু করা হয়। চলচ্চিত্রকার সেসিল বি. ডিমিল-কে পুরস্কৃত করার মধ্য দিয়ে এই পুরস্কার প্রদানের সূচনা হয়। যদিও টেলিভিশন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে পুরস্কার প্রদান শুরু হয়ে আরো পরে, ১৯৫৫ সালে। চলচ্চিত্রের মতো টিভি অনুষ্ঠানকেও তারা সম্মান জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমবারের মতো সেবার ‘দিনা সোর’, ‘লুসি অ্যান্ড দেসি’, ‘দ্য আমেরিকান কমেডি’, ‘ডাভি ককটেল’ টিভি সিরিজগুলো পুরস্কৃত হয়।download (1)
বিশ্ব চলচ্চিত্র অঙ্গনে এনিমেশন ফিল্মের যাত্রা বেশি দিনের নয়। তবে আজকের দিনে দর্শক ও কলাকৌশলের ভিত্তিতে এনিমেশন ফিল্ম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে আছে। ২০০৭ সালে হলিউড ফরেন প্রেস এসোসিয়েশন এ ধরনের চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রেও পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। সে বছর ‘কার’, ‘হ্যাপি ফিট’ ও ‘মাস্টার হাউস’ পুরস্কার জিতে নেয়। মিস গোল্ডেন গ্লোব চিন্তাটা আসে ১৯৬৩ সালে। সে বছর দু’জন অভিনেত্রীর নাম মিস গোল্ডেন গ্লোব হিসেবে ঘোষণা করা হয়। একটি চলচ্চিত্র এবং অন্যটি টেলিভিশনের ক্ষেত্রে। ইভা সিক্স ‘অপারেশন বিকিনি’ ও ‘বিচ পার্টি’ চলচ্চিত্রের জন্য এবং ডোনা ডগলাস ‘দ্য বিভারলি হিলবিলিস’ টিভি শো’র জন্য পুরস্কার পান।56432309
২০০৯ সালে গোল্ডেন গ্লোবে একটি অভাবনীয় ঘটনা ঘটে। দ্য নিউইয়র্ক ফার্ম তাদের সোশাল অ্যাওয়ার্ড এই বছরের জন্য হলিউড ফরেন প্রেস এসোসিয়েশনের সঙ্গে একত্রে ঘোষণা করে। পূর্বে এ ধরনের বিষয় চিন্তাও করা যেত না। আরেকটি ব্যাপার হলো, প্রতিবছর পুরস্কার প্রদানকে সামনে রেখে হলিউড ফরেন প্রেস এসোসিয়েশন অর্থ সংগ্রহ করে। এই অর্থ বিশ্বের বিনোদনসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে এবং দাতব্য কাজে ব্যবহৃত হয়। এর বাইরেও চলচ্চিত্রের উন্নয়নেও অর্থ ব্যয় করা হয়। ১৯৭৮ সালে এইচএফপিএ-এর নবীন সদস্য হিসেবে ইয়ংগেস্ট আর্টিস্ট ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা কর হয়। এর তত্ত্বাবধানে ২১ বছরের কম বয়সী চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টদের অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। কখনো কখনো অর্থের সংকুলান হলে তারা ওই সব তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অর্থ সাহায্যও দিয়ে থাকে। গত ১৯ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর ১৫ মিলিয়ন ডলার এভাবে দান করে আসছে। গত বছর প্রায় সাড়ে ১২ মিলিয়ন ডলার বিনোদনসংশ্লিষ্ট ৪০টি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে এবং দাতব্য কাজে ব্যবহার করা হয়েছে।hosts8f-3-web
প্রতি বছরের শুরুর দিকে গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। হলিউডে বসবাসকারী ৮৬ জন খণ্ডকালীন সাংবাদিকের সিদ্ধান্তে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। বিদেশী মিডিয়াও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। একাডেমি পুরস্কারের জন্য গ্রহণযোগ্য সময় জানুয়ারির ১ তারিখ থেকেই শুরু হয়, কিন্তু গোল্ডেন গ্লোবের জন্য এই সময় ১ অক্টোবর পর্যন্ত। অস্কার, গ্র্যামি বা এমি অ্যাওয়ার্ডের নিয়মিত সঞ্চালক সম্প্রচারের শুরুতেই অনুষ্ঠানের সঙ্গে সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেন। কিন্তু গোল্ডেন গ্লোবে এ ধরনের কোনো সঞ্চালক নেই। এইচএফপিএ-এর ঐতিহ্য অনুযায়ী প্রতি বছর মি. অথবা মিসেস গোল্ডেন গ্লোব নির্বাচকগণ এই পুরস্কারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরিচিত ব্যক্তিদের কন্যা অথবা পুত্রকে খুঁজে বের করেন। এই কন্যা বা পুত্র ওই বছরের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান পরিচালনা করে। সাধারণত বেভারলি হোটেলে আনুষ্ঠানিক ডিনারের মাধ্যমে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত অনেক ব্যক্তিই পরবর্তীতে একাডেমি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। তাই অনেকে একে আবার একাডেমি অ্যাওয়ার্ডের (অস্কার) ছায়া হিসেবে বিবেচনা করেন। jeremy-renner-JLO_612x380
১৯৪৪ সাল থেকে এইচএফপিএ গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড আয়োজন করে আসছে। এই আনুষ্ঠানিকতার বিচ্যুতি ঘটে ২০০৮ সালে। ২০০৭-০৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘রাইটার্স গিল্ড অফ আমেরিকান স্ট্রাইক’ যা ‘রাইটার্স স্ট্রাইক’ নামে পরিচিতি, তা দানা বেঁধে ওঠে। তারা প্রযোজক প্রতিষ্ঠান, টিভি সংস্থা ও বিজ্ঞাপনী সংস্থার আনুপাতিক ভারসাম্য হার অনুযায়ী স্ক্রিপ্টের সম্মানী দাবি করে। এই আন্দোলনের সঙ্গে গোল্ডেন গ্লোবের অনেক ব্যক্তি জড়িত ছিলেন। এ জন্য ২০০৮ সালে আনুষ্ঠিত ৬৫তম গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান টিভিতে প্রচার না করে অন্য মাধ্যমে প্রচারের ঘোষণা করা হয়। Actors-Aaron-Paul-L-and-Bryan-Cranston-R Actress-Joanne-Froggatt-holds-the-award-for-Best-Supporting-Actress-in-the-press-room-at-the-72nd-annual-Golden-Globe
৭৩ বছরের ইতিহাসে অনেক ব্যক্তি গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। যারা পরবর্তীতে বিশ্ব তারকায় পরিণত হয়েছেন। অনেকে একাধিকবার পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। পুরস্কারও পেয়েছেন একাধিকবার। মেরিল স্ট্রিপ এবং জ্যাক নিকোলসন ৬ বার করে গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন, যা পুরস্কারের ইতিহাসে রেকর্ড। সবচেয়ে বেশি মনোনয়ন পেয়েছেন জ্যাক লেমন, ২২ বার। মেরিল স্ট্রিপ ২১ বার মনোনয়ন পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন। এই আসরে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন- দুই মাধ্যমে সেরা হয়েছেন এমন ঘটনা ঘটেছে ৪ বার। এই তালিকায় রয়েছেন সেগোরনি ওয়েভার (১৯৮৯), জন প্লোরাইট (১৯৯৩), হেলেন মিরেন (২০০৭) এবং কেট উইন্সলেট (২০০৯)। ৫টি ক্যাটগরিতেই মনোনীত হয়ে ৫টিতেই গ্লোব জয় করেছে এমন চলচ্চিত্র রয়েছে ৩টি- ডক্টর জিভাগো, ওয়ান ফ্লিউ ওভার দ্য কুক্কস নেস্ট এবং এ স্টার ইজ বর্ন। ‘নাসভিল’ চলচ্চিত্রটি সবেচেয়ে বেশি বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে। যাই হোক, আজকে ২৫টি ক্যাটাগরিতে গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড দেয়া হয়। এর মধ্যে ১৪টি চলচ্চিত্র এবং ১১টি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের জন্য।Golden-Globes
২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ড্রামা নিয়ে বসেছিল এবারের আসর। যথারীতি ২৫টি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ড্রামা বিভাগে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতেছে ‘বয়হুড’। এর পরিচালক রিচার্ড লিঙ্কলেটার সেরা পরিচালক এবং প্যাট্রিসিয়া আর্কুয়েট পার্শ্বচরিত্রে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন। ওয়েস অ্যান্ডারসন পরিচালিত ‘দ্য গ্র্যান্ড বুদাপেস্ট হোটেল’ শ্রেষ্ঠ কমেডি এবং মিউজিক্যাল চলচ্চিত্রের পুরস্কার পেয়েছেন। ‘বার্ডম্যান’ চলচ্চিত্রের জন্য আলেজান্দ্রো গনজালেজ ইনারিতু সেরা চিত্রনাট্য, আর সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রের জন্য মাইকেল কিটন অর্জন করেছেন কমেডি এবং মিউজিক্যাল বিভাগের সেরা অভিনেতার খেতাব। ‘বিগ আইস’ চলচ্চিত্রের জন্য দ্বিতীয়বারের মতো সেরা অভিনেত্রী নির্বাচিত হয়েছেন এমি অ্যাডামস। ড্রামা বিভাগে ‘স্টিল অ্যালাইস’ চলচ্চিত্রটির জন্য সেরা অভিনেত্রীর খেতাব পেয়েছেন জুলিয়ান মুর।
হুইপল্যাশ’ চলচ্চিত্রের জন্য জে কে সিমন্স সেরা পার্শ্ব-অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন। সেরা অ্যানিমেটেড ফিল্ম নির্বাচিত হয়েছে ‘হাউ টু ট্রেইন ইয়োর ড্রাগন টু’।
আজীবন সম্মাননা সেসিল বি. ডেমিল পুরস্কার অর্জন করেছেন জর্জ ক্লুনি। আর ভিনদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে সেরা পুরস্কারটি জিতে নিয়েছে রাশিয়ান ছবি ‘লেভিয়াথান’।
তৃতীয়বারের মতো এই অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন অভিনেত্রী টিনা ফে এবং এমি ফিলার।নতুন সময়
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৪০