হুমায়ুন আজাদ স্যার মারা যাবার সময় আমি নিতান্তই একটা সাধারন স্টুডেন্ট ছিলাম। কিন্ত রাজীব যখন মারা যায়, তখন আমি শাহবাগে.. এর কয়েকদিন আগেই রাজীবের সাথে আমার কথা হয়েছিলো। তাকে বলেছিলাম- সাবধান থাকো ভাই, আমাদের জীবনের খুব বেশি একটা মূল্য নাই মৌলবাদীদের কাছে। রাজীবের মৃত্যু ঠেকানো যায় নি। আজ অভিজিৎদার মৃত্যুও আমরা ঠেকাতে পারলাম না।
অভিজিৎ দা, আপনি সত্যিই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন ? কেন, কেন, কেন ??
আমার ব্লগিং জীবন টা সত্যিকার অর্থে শুরুই হয় মুক্তমনা থেকে। আজ, এখন পর্যন্ত আমার ভিতরে সত্যিকার অর্থে পলিটিকালি,রিলিজিয়াস, ফিলসফিক্যালি, যেই পয়েন্ট অফ ভিউগুলো তৈরি হয়েছে, তার পিছনে বিরাট একটা অবদান আছে মুক্তমনা আর প্রথম স্বর্নযুগের সামুর। ইউনিভার্সিটি একটা স্টুডেন্ট, যার জীবন টা ছিলো নিতান্তই ভ্যাগাবন্ড গোছের, সেই ছেলেটার মাঝে নৈতিক ও রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি করা যেমন তেমন ব্যাপার না। অভিজিৎ দা আমাকে প্রশ্ন করতে শিখিয়েছিলো। শিখিয়েছিলো কিভাবে চিরাচরিত ফ্যালাসিগুলো কাটিয়ে লজিক দিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে হয়।এইতো সেদিন ও পারভেজ ভাইয়ের সাথে কথা হচ্ছিলো অভিজিৎ দা কে নিয়ে। আর আজকে মানুষ টা নেই...কি আশ্চর্য ! আমরা এত সহযেই অভ্যস্ত হয়ে গেলাম সন্ত্রাসবাদের সাথে ! আমাদের কি কিছুই করার নেই ? দু একটা স্ট্যাটাস দিয়ে আমরা আবার ফিরে যাবো আমাদের আগের যায়গায় ? বন্যা আপুর জন্য কিছুদিন হা পিত্যেস করে আবার মেতে যাবো আড্ডায় ?
আজকে অভিজিৎ দার মৃত্যু শুধু একটা খুন ই নয়। এটা আমাদের জন্য একটা প্রশ্ন। তোমরা যারাই ভয়েস রেইজ করো, পরিবর্তনের কথা বলো, তাঁদের খুজে খুজে মারা হবে, হত্যা করা হবে, নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে...কি করবে তোমরা ? কি জবাব দেবে তোমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে ? এভাবেই কালকে রাস্তায় পড়ে থাকবে তোমাদের লাশ...
হুমায়ুন আজাদ থেকে শুরু করে আজকে অভিজিৎ ....তোমরা কিছুই করতে পারো নি, পারবেও না।
আমরা কি এর কোন উত্তর ই দিতে পারবো না ?? ক্ষমা করে দিও অভিজিৎ দা। একদিন না একদিন অবস্থার পরিবর্তন হবেই। মনে রেখো, সেই পরিবর্তন টা তোমাদের হাত ধরেই শুরু হয়েছিলো। তখন হয়তো তোমার আত্মা শান্তি পাবে ...
"অভিজিৎ রয় হত্যার বিচার চাই"
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১:৫১