আগের পর্ব (বিজ্ঞাপনের কিছু স্ট্রাটেজি )
বিজ্ঞাপনের খুব গুরুত্বপুর্ন একটা ব্যাপার হচ্ছে পারসুয়েশন। অন্য কেউ কিভাবে আপনাকে/ আপনার পন্যকে/ আপনার এড কে দেখছে, সেইটা। কাস্টোমার আপনার বিজ্ঞাপন যতটা এডপ্ট করতে পারবে, আপনার বিজ্ঞাপন ততটাই ইফেক্টিভ।
এডভার্টাইজিং শিখতে হলে আপনার অবশ্যই অন্যকে পারসুয়েশন করানোর ক্ষমতা থাকতে হবে। আপনার কাস্টোমার কে দিয়ে আপনার ইয়েস বলিয়ে নিতে হবে। এড কিরকম বানাবেন তার আগে আপনাকে আপনার কাস্টোমারের মনস্তত্ব টা একটু বুঝতে হবে। আপনি যদি যায়গামত টোকা দিতে পারেন, তাহলে নিশ্চই আপনার এড সবাই দেখবে, এডের কপিটি মনে রাখবে। কিছুটা সাইকোলজিক্যালি আপনাকে এটা ঢুকিয়ে দিতে হবে সবার মাথায়।
আচ্ছা, তাহলে আজকের আলোচনার বিষয়, কমিউনিকেশন উইথ আদার্স। কিভাবে চমৎকার ভাবে অন্যদের সাথে আপনি কমিউনিকেশনের মাধ্যমে একটা কানেকশন তৈরি করবেন, সেইটার কিছু স্ট্রাটেজি আজকে আমরা শিখবো।
যেভাবে আপনি অন্যদের মনোযোগ ধরে রাখবেন, তাদের সাথে বেটার কমিউনিকেসনে আসবেন, তার কিছু পয়েন্ট সেটপ বাই স্টেপ বলি। প্রথমে আমরা কিছু শব্দ শিখবো, যেগুলো আপনি আপনার কথায় এবং এডের কপিতে ইউজ করবেন।
১. প্রথম শব্দটি হচ্ছে "বিকজ", মানে কারন।
আমাদের মানুষজাতির একটা কমন মনস্তত্ব হচ্ছে, আমরা সব কিছুই কজ এন্ড এফেক্ট রিলেশনশিপে দেখতে চাই। যে কোন কিছু। আজকে মন টা ভালো নাই, কারন তার সাথে দেখা হয়নি।
আজকে "চোরাবালি" মুভিটি দেখতে যাবো, বিকজ, চোরাবালির কথা অনেক শুনেছি। কিংবা আজকে সামুর স্টিকি পোস্ট ব্লগ ডে নিয়ে, কারন সামনে আসছে ব্লগ দিবস। আমরা আসলে এভাবেই চিন্তা করি। সব কিছুতে এফেক্টের সাথে সাথে কজটাও ভেবে নেই। আমরা একটা ঘটনার প্রেক্ষিতে অন্য আরেকটা ঘটনা বিচার করি। হয়তো মুখে বলি না, বাট আমাদের অবচেতন মনে কারন টা ধরে নেয়। আপনি যদি বলেন,
"লাক্স ভালো সাবান, কারন এর গন্ধ সুন্দর, দামে কম"
তারমানে আমরা ইমিডিয়েট দুইটা জিনিস এটেটাইম দেখতে পাচ্ছি। লাক্স ভালো, কারন ??? কারন এক, এর গন্ধ সুন্দর, দুই, এর দাম কম। এ প্রশ্ন দুইটা হয়তো আপনার অবচেতন মনে এমনিতেই থাক্তো, আচ্ছা লাক্স কেন কিনবো ? আচ্ছা এর দাম কেমন ? আমি প্রথমেই লাক্সের বর্ননা আর দাম বলে দিয়ে আপনাকে প্রশ্ন করার সুযোগ বন্ধ করে দিচ্ছি। বুঝা গেলো ?
আচ্ছা, আপনাদের ছোট বেলার কাহিনী মনে আছে , আমাদের বাবা মায়েরা কি করতো ?
মা ছেলের কথাপোকথন
-তন্ময়, পড়তে বস। ভিডিও গেম রাখো।
আম্মু, আরেকটু প্লিজ, আরেকটা স্টেজ খেলি, তারপর।
-যাও বলছি।
-কেন আম্মু, খেলিনা আরেকটু । এখন পড়তে বসতে হবে কেনো ?
-বিকজ, আমি বলছি, তাই।
এবং তারপর আমি পড়তে বসে যেতাম।
আমি শিওর এরকম কমন ঘটনা আপনার জিবনে বহুবার ঘটেছে। এই কমন কনভারসেশনের মাদ্যে কিন্ত একটা ব্যাপার লক্ষনীয়, আম্মু বিকজ বলার সাথে সাথে পরিস্থিতিটা চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। আমি আর কথা বাড়ানোর সুযোগ পাচ্ছিনা। আপনার কাস্টোমারো সুযোগ পাবেনা। মেবি আপনার বিকজ কথাটা, সরাসরি ব্যাবহার করার প্রয়োজন হবেনা, তবে আপনি কারন বলে দিয়ে বিকজ শব্দটি উহ্য রাখতে পারেন।
কাজেই কমিউনিকেশন এবং এডভার্টাইজিং কপির একটা বিশেষ শব্দ হচ্ছে "বিকজ" ।
আপনি যখনি বিকজ কথাটার উপর জোর দিবেন , তার আগের কথাটার প্রাধান্য বেড়ে যাবে। উদাহরন-
আপনি লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন দোকানে, দোকানীকে বললেন,
মে আই ক্যাট দ্যা লাইন প্লিজ, বিকজ আই নিড টু টেক দ্যা বাস।
৬০% ক্ষেত্রেই দোকানি বলবে, শিওর। (এইটা রিসার্চ থেকে পাওয়া)
অথচ দেখুন, অন্যরাও কিন্ত একই কারনে হয়তো লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। তারপরেও দোকানি আপনার কথা শুনবে, কারন আপনি তাকে সাইকোলজিক্যালি ইনফ্লুয়েন্স করছেন। আবার দেখুন, পছন্দের মানুষ কে বললেন,
-আজকে আমার সাথে একটু দেখা করবা ? বিকজ, ইটস রিয়েলি ইম্পর্টেন্ট টু মি।
সে দেখা না করে পারবে ?
আমি একটা এডভার্টাইজিং এর কপি দেখেছিলাম, উপরে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের একটা ছবি। আর নিচে লেখা-
"বিকজ, ইটস ইম্মপর্টেন্ট ফর ইউ"
এর চেয়ে এফেক্টিভ, সুন্দর কোন কপি হতে পারে বলে মনে হয় না। কারন ছোট্ট একটা বাক্য দিয়ে আপনি তাকে ম্যাসেজ থ্রো করতে পারছেন, বুঝিয়ে দিচ্ছেন, তার জন্য এটা ইম্মপর্ট্যান্ট।
আপনার এডভার্টাইজিং এ বিকজ শব্দটি রাখার চেষ্টা করুন। বিকিজ না থাক্লেও চেষ্টা করুন, দর্শক যাতে বুঝে নেয় আপনার পন্য তার কিনা উচিৎ, বিকজ........
২. ওয়ার্ড অফ পারসুয়েশন এর ২য় শব্দটি হচ্ছে, "নাও" অর্থাৎ, এখনি।
আবার একটা কনভারসেশন দেখি মা ছেলের।
-মা, আমি একটু পাশের বাসায় খেল তে যাই ?
- না, এখন পড়ার সময়, পড়তে বস।
-যাইনা আম্মু, চলে আসবো তো তাড়াতাড়ি।
- উহু, এখন পড়ার সময়।
-আম্মু, শুন। আসলে বলতে চাচ্ছিলাম....
- বলেছিনা পড়তে বস, এক্ষুনি।
- আচ্ছা, যাচ্ছি।
আচ্ছা, তাহলে কি বুঝা গেলো কনভারসেশন থেকে ? নাও বা এক্ষুনি বলার পর আসলে বাচ্চাটির তর্ক করার কোন সুযোগ থাকছেনা। মা সন্তানের উপর এক ধরনের কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করছে।
ঠিক আপ্নিও আপনার কাস্টোমারের উপর কতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেন এই একটি শব্দের মাধ্যমে ।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, আপনি যখন এডভার্টাইজিং এ "নাও" কথাটি ব্যাবহার করবেন, তখনো কনজিউমার রা ঠিক, একই রি অ্যাকশন দেখাবে। (রিসার্চ থেকে পাওয়া), তারমানে আপনি ছোট্ট একটি শব্দ দিয়ে তাদের ম্যানুপুলেট করতে পারছেন। অনেক সময় দেখবেন, বিজ্ঞাপনে এই কথাগুলো সচেতন ভাবেই ব্যাবহার করা হয়।
আপনাকে সব সময় যে হার্ড টোনে "নাও" বলতে হবে, তা কিন্ত নয়। সফট করে প্রিয় মানুষটিকে বলতে পারেন, "আমি তোমার বাসার নিচে, বারান্দায় আসো, এখুনি প্লিজ", অথবা টেক্সট করলেন, "একটু ফোন করবা জান, এখনি"।
দেখবেন, ফোন না করে যাবে কোথায়। আপনার আকুতি, অনুরোধ সময়ের সাথে সিনকর্নাইজ করে প্রকাশ পাচ্ছে মাত্র একটি শব্দের মাধ্যেমে।
এড এ কিছু
"বাটায় এখন ৬০% সেল, এখনি চলে আসুন "
"এক্ষুনি বেছে নিন আপনার পছন্দের প্লট" ইত্যাদি।
৩. তিন নম্বর ম্যাজিক ওয়ার্ড টি হচ্ছে, "ইমাজিন" অর্থাৎ কল্পনা করা।
বছর দশেক আগে আমেরিকার বেস্ট সেলিং কার হয়েছিলো "মার্কারি সেভয়" , তাদের স্লোগান টা ছিলো, "ইমাজিন ইওরসেলফ ইন মার্কারি, নাও" ।
হাও নাইস, তাইনা ? সেই বছর মার্কারি গাড়ির মার্কেট সেল বেড়ে গিয়েছিলো প্রায় ৩০% ।
তারমানে হচ্ছে, আমরা সব সময় যখন কোন লেখা পড়ি, বা কারো কাছ থেকে কিছু শুনি, আমারা মনে মনে জিনিস্টা কল্পনা করে নেই, ভিজুয়ালাইজ করার চেষ্টা করি। আমি শিওর, আপনি যদি আমাকে না চিনে থাকেন, তাহলে অবচেতন মনেই কল্পনা শুরু করে দিয়েছেন, এই পোস্টের লেখক মানুষ টা আসলে কেমন, সেকি এরকম ? কাটখোট্টা ? রসিক ? আসলে যে কারো লেখা পড়লেই আপনার এই কথাগুলো মনে আসবে। আপনি মনে মনে একটা শেপ কল্পনা করবেন। একটা গল্পের বই যখন আমরা পড়ি, তখন আমরা সেটা কল্পনায় দেখার চেষ্টা করি। আর যেই ফিল্ম মেকার রা এই জিনিস টা বেশী ভালো কল্পনা করতে পারবে, তার সিনেমাও তত বেশী নিখুত হবে।
ইমাজিন শব্দটি এত সুন্দর সাইকোজিক্যালি এফেক্ট করে, কারন হচ্ছে, আপনি আসলে আপনার কাস্টোমার কে কোন কিছু কিনতে বলছেন না, বা করতে বলছেন না ডিরেক্ট। আপনি শুধু বলছেন, কল্পনা করতে। একজন কাস্টোমারের রেজিস্ট্যান্ট করার যায়গাটা বন্ধ হয়ে যায়, যখন আপনি তাকে বলেন, ইমাজিন দিস প্রডাক্ট, অর দিস সার্ভিস ইউ আর গেটিং...সে তখন না চাইলেও একটা চিন্তায় পড়ে যায়। আসলেই, এই প্রডাক্ট টা আমার হাতে কেমন লাগবে ? অথবা এই সার্ভিস ব্যাবহার করলে তো খারাপ হয় না।
উদাহরন, "ইমাজিন ইওর সেলফ উইথ স্যামসাং গ্যালাক্সি ট্যাব"
প্রিয় মানুষ কে প্রপোজ করতে ভয় পাচ্ছেন ? কোন অসুবিধা নাই, জাস্ট বলেন- "জান,চিন্তা করতো, আমাদের একটা ছোট্ট সংসার হলে কেমন হত ?"
বিজ্ঞাপনেও আপনি ঠিক সেইম কথাগুলো ব্যাবহার করতে পারেন। যাতে দর্শক কে সরাসরি কিছু কল্পনা করতে না বললেও, সে যেন কল্পনা করতে বাধ্য হয়। এমন কিছু এলিমেন্ট দিয়ে দিন, যা তাকে কল্পনায় নিয়ে যাবে। দেখবেন, বিজ্ঞাপন টি অনেক ইফেক্টিভ।
৪. সবচাইতে চমৎকার দুটো ম্যাজিক ওয়ার্ড হচ্ছে, "প্লিজ" এবং "থ্যাঙ্ক ইউ"।
এই দুইটা শব্দ অনেক বহুল ব্যাবহাহৃত। তবে তাতে করে এই শব্দ গুলোর আবেদন একটুও কমেনা। আপনি যখন কাওকে "প্লিজ" বলে কোন বাক্য শুরু করবেন, সেই ব্যাক্তির সাথে আপনার একটা ফরমাল কিন্ত আন্তরিক রিলেশনশিপ তৈরি হবে। সেইম ব্যাপার থাঙ্কস এর বেলাতেও। আপনি যদি কাওকে বলেন, এই জিনিস টা করলে আমি অনেক থাঙ্কফুল থাকবো তোমার প্রতি, তাহলে দেখবেন সেন্ট পার্সেন্ট ক্ষত্রে সে কাজটা করছে। অর্থাৎ, কৃতজ্ঞতা স্বীকারের সাথে সাথে আপনার পরবর্তি কোন কিছু চাওয়ার পথ টা সহয হয়ে উঠছে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমি যেই শব্দগুলো বলছি, সেগুলা কিন্ত পরিক্ষীত। আপনি কারো সাথে কথা বলার জন্য ব্যাবহার করেন, এডভার্টাইজিং এর জন্য
অথবা সেল করার জন্য, আপনি প্রত্যেকবার সেন্ট পারসেন্ট টাইম পজেটিভ ফিডব্যাক পাবেন। এমন কি যদি সেই পারসন টি জেনেওই থাকে আপনি
ইয়েস আদায় করে নেয়ার জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করছেন, তারপরেও।
৫. এবারের পয়েন্ট হচ্ছে, "নেইম" বা নাম। যার সাথে কমিউনিকেট করতে চাচ্ছেন, তার নাম।
পারসন'স নেইম, এইটা কিন্ত আবার একটু ট্রিকি ব্যাপার। আপনি যদি যার সাথে কমিউনিকেট করছেন, তার নাম অধিক ব্যাবহার করেন, তাহলে কিন্ত
ব্যাপার টা হিতে বিপরীত হয়ে যাবে। মনে করেন ব্যাঙ্ক থেকে ক্রেডিট কার্ডের ব্যাপারে মি.হাসানের কাছে ফোন আসলো,
-হ্যালো, মি.হাসান, আমি সিটি ব্যাঙ্ক থেকে বলছি। আমরা আপনার জন্য একটা ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করতের চাচ্ছি। আপনি এই ক্রেডিট কার্ড টি নিলে ,
আপনাকে আমাদের ব্যঙ্কের তরফ থেকে ৫% ডিস্কাউন্ট দেয়া হবে। মি.হাসান, ক্রেডিটের বিলিং টাইম ও আমরা
বাড়িয়েছি। আপনাকে ধন্যবাদ মি.হাসান।
দেখেন, একটু ওভার ইউজ হয়ে গেছে না হাসান নামটা ? মনে মনে একটা গ্রাফ চিন্তা করেন। প্রথম বার সেলস্ম্যান যখন
হাসান নামটি বললো, তখন হাসানের কাছে তার গ্রহন যোগ্যতার কার্ভ টা উপরের দিকে উঠা শুরু করেছে। মাঝে যখন ইউজ করলেন, তখন
কার্ভ টা নিচে নেমে গেলো। লাস্টে থাঙ্কস জানিয়ে নাম বলার পর, কার্ভ টা আবার উপরে উঠে গেলো। অর্থাৎ আপনি কারো সাথে কথা বলার শুরুতে
এবং শেষে নাম ইউজ করেন, তাহলে সর্বোচ্চ গ্রহনযোগ্যতা পাবে। কিন্ত যদি, তার চেয়ে বেশি বার ইউজ করেন, তাহলে কার্ভ টা
আবার নিচের দিকে বেকে যাবে, অর্থাৎ গ্রহনযোগ্যতা কমে যাবে। মজা না ?
আপনি বেশিবার নাম ধরে ডাক্লে, আপনার অডিয়েন্স বেশিমাত্রায় ম্যানুপুলেটেড ফিল করবে, এমন কি যেখানে ম্যানুপুলেটেড হবার নয়, সেখানেও।
কাজেই সেল অপরচুনিটি কমে যাবে।
৬. নাম সম্পর্কে শিওর হন। বানান, এবং উচ্চারন।
আচ্ছা, আপনার নাম মনে করেন, মাহদী আহমেদ। এখন আপনার কাছে একটা অফিসিয়াল চিঠি আসলো
"মি. মেহেদি হাসান।" আপনার কেমন লাগবে ? আমার কিন্ত ভালো লাগবে না। নিজের নামের বানান ভুল কেউই
পছন্দ করেনা। আমাদের সাইকোলজি বলে, আমরা নিজের নাম টা বার বার লেখার হরফে দেখতে চাই। ইন্টারন্যাশ্নাল ট্রিপের ব্যাপারে
কিন্ত আরো বেশি সতর্ক থাকা দরকার। কারন এক এক দেশের এক্সেন্টের কারনে নাম কিন্ত অনেক চেঞ্জ হয়ে যায়।
যুবরাজ হয়ে যায় ইউভ্রাজ, মিশেল হয়ে যায় মার্শাল ইত্যাদি।
আমার অনেক গুলা ফ্রেন্ড আছে তুর্কি। তাদের একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে, তারা সি কে উচ্চারন করে জে। মানে যার নাম আতমাজা, তার নাম লেখতে
হয় আতমাজা। যার নাম জামাল, তার নাম লেখতে হয় চামাল। এখন আমার ফ্রেন্ডের নাম লেখা ছিলো চেমেলেট্টিন সিসেক। তার নাম হয়ে গেছে জামালুদ্দিন শেখ।
তবে আমি তার নাম শোনার পর, তাকে বলেছিলাম, তোমার নাম টা আমাকে শেখাও, ইজ ইট চেমেলেট ?
সে বললো, না, জেমেলেট। আমি আবারো ভুল করলাম। পরে বললাম, আই মাস্ট লার্ন ইউর নেইম।
এর পর থেকে আমি তাকে ঠিক নামে ডাক্তাম। তো এই ব্যাপার টা কিন্ত তুর্কি ফ্রেন্ড টার কাছে আমার গ্রহনযোগ্যতা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছিলো।
ভার্সিটির শেষ দিন পর্যন্ত আমরা খুব ভালো ফ্রেন্ড ছিলাম।
যখন আপনি কারো নাম ঠিকভাবে বলবেন, আপনার প্রতি সেই মানুষটার রেস্পেক্ট লেভেল বেড়ে যায়।
সবার লাসেটে যেই টেকনিক টা বলবো, তা হলো কন্ট্রোল।
মানুষ সবসময়ি কন্ট্রোল্ড একটা সিস্টেম মেইন্টেইন করে। সে সাবকনশাস্লি কন্ট্রোলে থাকতে এবং কন্ট্রোলে রাখতে
পছন্দ করে। এটা কিন্ত মিজার একটা ব্যাপার। দেখবেন, সবাই চায়, সব কিছু তার ইচ্ছা মতই হোক। ইভনে কন্ট্রোল
শব্দটাও পারসুয়েটিভ। আপনি যখন কাওকে বলবেন,
"ইউ আর ইন কন্ট্রোল হিয়ার" বা "ইউ আর ইন চার্য হিয়ার" ।
কথাটার মধ্য দিয়ে তার কতৃত্বটাকে দেখানো হলো। মানুষ সবসময়ি কত্তৃত্বে থাকতে পছন্দ করে।
কাজেই আপনি যদি এডের মাধ্যমে তার লিডিং এর যায়গাটা দেখ্যে দিতে পারেন, আপনার কথায় সে
প্রভাবিত হবে। যেমন একটা গাড়ির বিজ্ঞাপন হতে পারে,
"হোন্ডা সিআরভি- হুইচ ইউ ক্যান কন্ট্রোল" ।
দারুন হবে না ??
তো এখনি নিজের কথাবার্তায় এই ব্যাপারগুলা প্রাক্টিস শুরু করে দিন। যত বিজ্ঞাপন দেখবেন, চেষ্টা করুন বের করার, কিভাবে
তারা আপনাকে ম্যানুপুলেট করার চেষ্টা করছে। আর সাথে থাকুন , পরের পর্বের জন্য।
ধন্যবাদ।
আগের পোস্ট গুলোর লিঙ্ক
পর্ব ১
পর্ব ২
পর্ব ৩
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১২ ভোর ৬:১৭