Mizan Rahman
জানতে চাইঃ ৭১ এ কথিত কুখ্যাত জামায়াতীদের এত অপরাধ কিন্তু ৭১ পরবর্তী সার্বিক পরিসংখ্যান কি বলে!!?? কি এক ভয়াবহ ব্যাপার। ভাবতেই গা শিউরে উঠছে। ৯ মাসের যুদ্বে ৩০ লাখ লোক শহীদ আর ২ লক্ষ নারী ধর্ষিতা! আরও অবাক ব্যাপার হলো ২ লক্ষ নারী ধর্ষনের মত ভয়াবহ ঘৃন্য কাজটি অবলিলায় সম্পাদন করেছে গোলাম আযম, নিজামী, সাঈদী, কাদের মোল্লা এবং কামরুজ্জামান গংরা, তাও মাত্র ৯ মাসে! আসুন একটু বিশ্লেষনে যাইঃ ৯ মাস = ২৭০ দিন মোট ধর্ষিতা = ২ লক্ষ গড়ে প্রতিদিন ধর্ষিতার সংখ্যা = ৭৪০.৭৪ জন নারী। ৭০ এর নির্বাচনী ফলাফলে আওয়ামিলীগ ভোট পেয়েছিল ৯৯% এরও বেশী, তার মানে আওয়ামি ভাষায় এরা সবাই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি (যদিও নির্বাচনি ইশতেহার অথবা ঐতিহাসিক ৬ দফার কোথাও স্বাধিনতার কথাটি ছিলনা একমাত্র ৭ই মার্চের ভাষন ছাড়া), তাহলে স্বধীনতা বিরোধীরা শতকরা হিসেবে গননার মধ্যেই আসেনা! আর মুস্টিমেয় কিছু লোকই যদি ৩০ লক্ষ খুন আর ২ লক্ষ নারী ধর্ষন করে থাকে তবে তাদের শৌর্য বীর্য্য,পৌরষত্বের প্রশংসা করতেই হয়। অবস্থাদৃস্টে মনে হচ্ছে তারা এক হাতে অস্ত্র কিংবা তলোয়ার অন্য হাতে লুঙ্গি উঁচিয়ে দিবা রাত্রি দেশময় দৌঁড়ে বেড়িয়েছে এবং জল-স্থলে বন-বাদাড়ে যেখানে যাকে যে অবস্থায় পেয়েছে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রটি ঘেচাং করে সেঁদিয়ে দিয়েছে, ফলে আক্রান্ত ব্যাক্তি হয়তো নিহত নতুবা বীরাংগনা। এই যদি হয় চিত্র তবে গোলাম আযম সাঈদীদের একবার ফাঁসি দেয়া কি যথেস্ট হবে!! তাদের কে ক্বেয়ামত অবধি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখলেও ২ লক্ষ ইজ্জত হরণের শাস্তি যথেস্ট নয় বলেই মনে হয়। আচ্ছা, ধর্ষন আর লুটপাটকারী এই দুর্ধর্ষ মানুষরূপী ঘাতকরা স্বাধীনতা যুদ্বকালীন এতই বেশুমার অপরাধ করেছে যে একা এক সাঈদীর বিরুদ্বেই অপরাধের বিবরন হয়েছে ৫/৬ হাজার পৃষ্ঠা (!), কিন্তু স্বাধিনতা পরবর্তিতে তারা হঠাৎ এমন সৎ, ভাল হয়ে গেল কি করে যে দেশের কোথাও তাদের বিরুদ্বে খুন, ধর্ষন, চাঁদাবাজি, ডাকাতির অভিযোগ নেই,কোন মামলাও নেই! যে বাঘ একবার রক্তের স্বাধ পায় সে কি রক্ত না খেয়ে পারে? যারা ইতোপুর্বে ২ লক্ষ নারী ধর্ষন করলো তাদের হাতে স্বাধিনতার পরে একজন নারীও লাঞ্চিত হলোনা - এটা অবিশ্বাস্য, বরং তাদের বর্তমানে যা জনশক্তি তাতে দৈনিকই ২ লক্ষ অপকর্ম সংঘটন করার কথা। গত ৪০ বছরে কেউ কি শুনেছেন অমুক স্বাধীনতা বিরোধীর হাতে অমুক মহিলার শ্লিলতাহানী ঘটেছে, অথবা অমুক নেতার হাতে আওয়ামিলীগের অমুক খুন হয়েছে? কিংবা বেগম ফজিলাতুন্নেছা / ইড়েন কলেজ থেকে সাপ্লাই যাচ্ছে অমুক জামায়াত নেতার বাসায় !! নাহ্, তা কেউ শোনেননি। তবে কি তারা স্বাধীনতার পরে নূপংসক হয়ে গেছে? তাদের ধরে ধরে খাসী করিয়ে দেয়া হয়েছে এমন কথাও তো শোনা যায়নি! তাহলে কাহিনী টা কি?? কিন্তু অবাক ব্যাপার হলো, যারা আজকে অভিযোগকারী, বিচারপ্রার্থী তাদের ব্যাপারে খুন রাহজানি, চাঁদাবাজি, ধর্ষন, মদ্যপানে অকাল মৃত্যু, বেশ্যাবৃত্তি, টেন্ড়ারবাজি, দখলদারিত্ব, মন্দির দখল, সংখ্যালঘুদের উপর হামলা ... ইত্যাদির অসংখ্য রিপোর্ট প্রতিনিয়ত দৈনিক পত্রিকাতে গত ৪০ বছর ধরেই দেখছে জনগন। আপনি নিজেই একটু আপনার চারপাশে চোখ বুলিয়ে নিন, দেখবেন আপনার প্রতিবেশী / আত্মিয় বখাটে, মাস্তান, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, লম্পট লোকটি কোন দলের ! কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্বকালীন কিংবা স্বাধীনতার পুর্বে এদের কার্য্যকলাপ দুধের মত পরিস্কার পানির মত স্বচ্ছ (!)। কোন পাপ পঙ্কিলতা তাদের স্পর্শই করতে পারেনি!! কিন্তু এমন ফেরেশতাতুল্য দলটি / লোকগুলো স্বাধীন দেশে এসে পাপিস্ঠ শয়তানের মত আচরন শুরে করেছে কেন? কেনইবা তাদের বিরুদ্বে থানা, আইন আদালতে অভিযোগের পাহাড়? কেনইবা জনগন বলছে চাপাতিলীগ, টেন্ড়ারবাজলীগ, ুত্তালীগ ... ইত্যাদি !!!! তাদের অবস্থা এতই করুন যে,হেন কোন অপকর্ম নেই যে তারা করেনা কেবল অর্থযোগ হলেই হলো!! দেশে ৭৪ এর দুর্ভিক্ষে ২ লক্ষ বুভুক্ষ মানুষ না খেয়ে মরেছে। কেউ কি শুনেছেন একজন আওয়ামি নেতা/পাতি নেতা না খেয়ে মারা গেছে? কেউ কি দেখেছেন স্বাধীনতার অব্যাবহিত পরে কেন্দ্র থেকে থানা পর্যায়ে কোন আওয়ামি নেতা গরীব আছেন, যিনি দিন এনে দিন খেয়ে চরম দারিদ্রের কষাঘাতে দিনাতিপাত করেছেন? তবে কি আওয়ামিলীগের সবাই বিত্তশালী পিতার সন্তান অথবা শেখ মুজিব কি বেছে বেছে জমিদার / মহাজন শ্রেনীর লোকজনকে আওয়ামি নেতা বানিয়েছিলেন? বুঝতে পারছিনা !!!!!!!!!!! আচ্ছা, দেশে স্বাধিনতা দিবসে, বিজয় দিবসে রেলী, মিছিল, রাস্ট্রিয় অনুস্ঠানে অসংখ্য পঙ্গুমুক্তিযোদ্বা দেখা যায়, দেশের কোথাও কি দেখেছেন একজন পঙ্গু রাজাকার ! ৯ মাস যুদ্ব হলো, ৩০ লক্ষ লোক মারা গেল বিনা প্রতিরোধে ! তাদের হাতে একজন রাজাকারও পঙ্গু হলোনা কেন? এটা কেমন কেরামতি !!! নাকি ঘটনা তার উল্টো? স্বাধিনতার পর হতে ঘটনার পরম্পরা, ক্ষমতাসীনদের লোভ লালসা, নারী লিপ্সা, চরিত্রহীনতা, মিথ্যাচার, লুটপাট, খুন রাহজানি'র পরিসংখ্যান কি বলে? আরও আছেঃ সেদিন মহাজোটের শরীক এরশাদের মুখে শুনলাম তার সময়ে তালিকাকৃত মুক্তিযোদ্বার সংখ্যা ছিল মাত্র ৯০ হাজার আর এখন তা দেড় কোটি ছাড়িয়ে গেছে। হতেই পারে; যে দেশের নির্বাহী প্রধান থেকে শুরু করে চাকর বাকর পর্যন্ত ডিগ্রী কেনা-বেচার কারবার করে সে দেশে মুক্তিযুদ্বের সার্টিফিকেট বিক্রি তো ডাল ভাত। কথা হলো যে দেশের মুক্তিযোদ্বার সংখ্যাই হলো ৯০ হাজার থেকে দেড় কোটির মধ্যে, সে দেশে ৩০ লক্ষ লোক নিহত হয় কি করে? এটা কি ১২ হাত বাকুড়ের ১৩ হাত বিচির মত হয়ে গেলনা! তবে কি মোট মুক্তিযোদ্বার সংখ্যা ৩০ লক্ষ ৯০ হাজার? যদি তাই হয় তবে মোট ৩০ লক্ষ ৯০ হাজার মুক্তিযোদ্বার ৩০ লক্ষই নিহত হলো; তাহলে আমাদের দেশ স্বাধীন হলো কি করে? কেবল ভারতের সহায়তায়? কারও জানা থাকলে উত্তর দিন। সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত ভয়াবহ মর্মান্তিক যুদ্ব হলো মার্কিন-ইরাক কিংবা মার্কিন আফগান যুদ্ব। এই যুদ্ব সমুহে ড্রোন বিমান, চালকবিহীন বিমানসহ অত্যাধুনিক বোমারু বিমান দিয়ে ক্লাস্টার বোমা, কার্পেট বোমা, টর্পার বোমাসহ নাম না জানা শত শত টন বোমার বর্ষন হয়েছে এসব দেশে। অবাক ব্যাপার হলো গত সপ্তাহের একটি টিভি রিপোর্ট অনুযায়ী মার্কিন আফগান যুদ্বে গত ১০ বছরে নিহতের পরিমান ১০ হাজার ছাড়িয়েছে (মাত্র), আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যা ১০ কোটি ছাড়িয়ে যাবার কথা। আবার ইরাক যুদ্বের হতাহতের পরিমান আরও হতাশাব্যান্জক, গত বছরের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী মোট হতাহতের পরিমান ১০ হাজার, এখন পর্যন্ত মেরে কেটে হয়তো বড় জোর ১৫ হাজার বানানো যাবেনা, অথচ ইরাক যুদ্বের ব্যাপ্তি আফগানিস্তানের চেয়ে অন্ততঃ ১০ গুন বেশী। বিজ্ঞজনদের নিঃস্বার্থ, নিরপেক্ষ, অশ্লিলতামুক্ত সুবিবেচিত মূল্যবান মন্তব্য আশা করছি।