somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শামসুজ্জোহা-চুনকা থেকে আইভী-শামীম পর্যন্ত রাজনৈতিক টান পোড়ন

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৪:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে উত্থান পতনের খেলায় অপ্রতিরোধ্য জনপ্রিয় নারী নেত্রী সেলিনা হায়াৎ আইভী। জেলা আওয়ামীলীগের অন্তঃদ্বন্দে কয়েক যুগ ধরে দ্বীখন্ডিত, স্থানীয় ভাষায় রেল লাইনের এপার ওপার অথবা উত্তর দক্ষিণে বিভক্ত আওয়ামীলীগ। আর এই বিভাজনের শুরুটা দেশ স্বাধীনের স্বল্প সময়ের পর থেকেই। একেএম শামসুজ্জোহা ভার্সেস আলী আহাম্মদ চুনকা থেকে শুরু। বর্তমানে এ দুই পরিবারের প্রভাবশালী সদস্য সেলিনা হায়াৎ আইভী ভার্সেস একেএম শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের মধ্যে চলছে রাজনৈতিক বোঝা পরা। চলছে নেতৃত্বের লড়াই। আর রাজনৈতিক উত্থান পতনে সর্বশেষ ক্ষমতাধর হিসেবে নেতৃত্ব স্থান দখলে রেখেছেন চুনকা কণ্যা আইভী। অপরদিকে নিজ বলয়ে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক মাঠ ধরে রাখতে নানা কৌশলে ব্যাস্ত সময় পার করছেন ওসমান ভ্রাতৃদ্বয়। ভোটের রাজনীতিতে দল এবং দলের বাইরেও ব্যাপক জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত আওয়ামীলীগ নেতা সেলিনা হায়াৎ আইভী। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে টানা তিনবার মেয়র নির্বাচিত হয়ে অপ্রতিরোধ্য হিসেবে আলোচনায় আছেন আইভী। দুই পরিবারের রাজনৈতিক বিরোধও নেতৃত্বের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত চুনকা পরিবারের সদস্যরা রাজনৈতিক ভাবে ক্লীন ইমেজের আলোচনায় থাকলেও ওসমান পরিবারের সদস্যরা নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে অনেকটাই রাজনৈতিক ইমেজ সংকটে পড়েছেন।
উত্তর দক্ষিণে বিভক্ত জেলা আওয়ামীলীগঃ
১৯৭৩ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আলী আহম্মদ চুনকা আওয়ামিলীগের দলীয় সমর্থন চাইলে তার বিরোধীতা করে মহিউদ্দিন আহম্মেদ খোকা ওরফে খোকা মহিউদ্দিনের পক্ষে সমর্থন আদায় করে দেন একেএম শামসুজ্জোহা ওসমান। ততৎকালীন সময়ে ব্যাপক জনপ্রিয় চুনকা স্থানীয়দের চাপে পড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন। এখান থেকেই শুরু হয় চুনকা পরিবার ও ওসমান পরিবারের মধ্যে শীতল দ্বন্দ্ব। ১৯৮০ সালে জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে শামসুজ্জোহা ও চুনকা সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে চুনকা জয়ী হন। ১৯৮৪ সালে আলী আহাম্মদ চুনকার মৃত্যুর পর ৮৫ সালে তার মেয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী বিদেশে পড়তে গেলে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতির মাঠে একক কর্তৃত্বের দাবিদার হয়ে উঠে ওসমান পরিবার। তবে ওই সময়ে শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপিকা নাজমা রহমানের নেতৃত্বে সংগঠিত থাকে চুনকার নেতাকর্মীরা। ১৯৮৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে নৌকা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে নির্বাচন করেন নাজমা রহমান। তৎকালীন শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম ওসমান তার ভাই জাতীয় পার্টির মনোনীত নাসিম ওসমানের পক্ষে কাজ করার অভিযোগে শামীম ওসমানের সঙ্গে দূরুত্ব তৈরি হয় নাজমা রহমানের। শহরের উত্তর-দক্ষিণের রাজনীতি নাজমা রহমানের মাধ্যমে জিইয়ে থাকে। ১৯৯২ সালে চুনকা কন্যা আইভী দেশে ফিরে শহর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হয়ে আবারো বিদেশে ফিরে যান। পরবর্তী সময়ে ২০০৩ এর জানুয়ারিতে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনের কয়েকদিন আগে দেশে ফিরেন। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বিএনপির প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দীতা করে মোমবাতি প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সেলিনা হায়াৎ আইভী । নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা রূপান্তরিত হয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে। ২০১১ সালের ৩০শে অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনকে ঘিরেই এই দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছায়। ৩৭ বছর আগের ঘটনারই যেন পুনরাবৃত্তি ঘটে। এবার প্রতিদ্বন্দ্বী চুনকা কন্যা আইভী ও জোহা পুত্র শামীম ওসমান। এ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না থাকলেও দলীয় সমর্থনের ব্যাপার ছিল। কেন্দ্রীয় আওয়ামিলীগের একটি অংশ শামীম ওসমানকে সমর্থন করে। অপর একটি অংশ নির্বাচনের মাঠে থাকার গ্রীণ সিগনাল দেয় আইভীকে। শামীম ওসমানের দেয়াল ঘড়ি প্রতীকের বিপরীতে দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে এক লাখের বেশি ভোট পেয়ে জয় ছিনিয়ে নেন চুনকা কন্যা আইভী। ভোটের রাজনীতিতে বড় ধরনের হোঁচট খান শামীম ওসমান। ওই নির্বাচনকে ঘিরে শামীম-আইভি একে অপরকে দোষারোপ ও বাক বিতণ্ডায় জড়িয়েছিলেন প্রকাশ্যেই। নানান ঘটনায় দুই পরিবারের দু’জনেই পরস্পরকে দায়ী করে আসে। নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ত্বকী হত্যা ও সাত খুনের ঘটনায়ও একে অপরের প্রতি অভিযোগ টানেন। একে অপরকে খুন, গুম, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকারও অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। টেলিভিশনে সরাসরি সমপ্রচারিত টকশোতেও শামীম ওসমান ও আইভীর মারমুখী বাক্য বিনিময় ও শক্তি প্রদর্শনের চ্যালেঞ্জ করতে দেখা গেছে। এমনকি সিটি করপোরেশনের ময়লা নিয়ে নোংরা রাজনীতি করা হয়েছে। আইভীকে কোণঠাসা করতে শামীম ওসমানের লোকজন অশ্লীল লেখা ও আইভীর বিকৃতি ছবি দিয়ে ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ড বানিয়ে সারা শহর ছেয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন আইভীর পক্ষের নেতা কর্মী ও সমর্থকরা । মানববন্ধন, সভা-সমাবেশে একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। এমন পরিস্থিতি চলমান। দ্বিতীয় সিটি নির্বাচনেও প্রথম থেকেই ওসমান পরিবার চুনকা কন্যা আইভীর বিপক্ষে অবস্থান নেন। এমনকি তৃণমূল থেকে প্রার্থী হিসাবে যে তিন জনের নাম কেন্দ্রের কাছে মনোনয়নের জন্য পাঠানো হয়েছিল সেখানেও ছিল না আইভীর নাম। এর পেছনেও ওসমান পরিবার কলকাঠি নেড়েছে বলে অভিযোগ তোলেন শামীম বিরোধী আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ও আইভীর ঘনিষ্ঠজনরা। কিন্তু সেবার আওয়ামী লীগ আইভীকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়। তারপর চলে নানা নাটকীয়তা। আইভীর সমর্থনে সংবাদ সম্মেলন করেন ও আইভিকে উপহার পাঠান শামীম ওসমান। এমনকি নৌকায় ভোট দিয়েছেন তা প্রমাণ করতে তিনি মিডিয়ার সামনে ব্যালট পেপার প্রদর্শন করেন। সে নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানের ধানের শীষ প্রতীকের বিপরীতে সেলিনা হায়াৎ আইভীর নৌকা প্রতীক বিপুল ভোটের ব্যাবধানে জয়ী হন।দ্বিতীয় সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের পর ২০১৮ সালে নগরবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ফুটপাথ হকার মুক্ত করতে বার বার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছেন মেয়র। কিন্তু হকারদের ফুটপাতে বসার পক্ষ নেন এমপি শামীম ওসমান। হকার উচ্ছেদ ও বসানোকে কেন্দ্র করে মাঠে নামেন দুই জনপ্রতিনিধি। শামীম ওসমান ফুটপাতে হকারদের বসার নির্দেশ দিয়ে বলেন, আমি শহীদ মিনারে উপস্থিত থাকবো, আপনাদের কেউ মারলে আপনারা মার খাবেন। কিভাবে পাল্টা মাইর দিতে হয় আমার জানা আছে।শামীম ওসমানের এই বক্তব্যে অবাক হন সিটি মেয়র। তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন। বঙ্গবন্ধু সড়কে হকার বসবে না। হকারদের জন্য প্রয়োজনে আরো বিকল্প জায়গা করে সেখানে পুনর্বাসন করবেন। ১৬ই জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে হকার ইস্যু নিয়ে মিডিয়ার মুখোমুখি হতে নগরভবন থেকে পায়ে হেঁটে রওনা হন আইভী। এদিকে পূর্ব ঘোষণা মতে দুপুরের পর থেকে হকাররা ফুটপাথে বসার জন্য শহীদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন। শামীম ওসমানের লোকজন শহীদ মিনারে অবস্থান নেয়। যা পরে সংঘর্ষে রূপ নেয়। রাজপথে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেয় সন্ত্রাসীরা। ওই সংঘর্ষে আইভীর ওপর হামলা করা হলে তার নেতাকর্মীরা মানব ঢাল তৈরী করে আইভীকে রক্ষা করে। ঘটনার আগে ও পরে শামীম-আইভী অভিযোগের আঙ্গুল তোলেন একে অন্যের বিরুদ্ধে।হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন।সর্বশেষ ২০২২ এর ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আবারো নানা নাটক মঞ্চস্থ হয়। এবারের নির্বাচনেও শামীম ওসমান ও তার অনুসারীদের সমর্থন নিয়ে টান পোড়ান শুরু হয়। শেষে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর কবীর নানক,মীর্জা আজমসহ বেশ কয়েকজন প্রবীন নেতা নির্বাচন পর্যন্ত অবস্থান নেন নারায়ণগঞ্জে। এ নির্বাচনে আইভীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার গডফাদার ওসমান পরিবারের প্রার্থী বলে অভিযোগ তোলেন সেলিনা হায়াৎ আইভী। মাঠ পর্যায়ে সেই অভিযোগের সত্যতা পান স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। পরিশেষে কেন্দ্রীয় চাপের মূখে পড়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে নৌকা প্রতীকের প্রতি সমর্থন জানালেও আইভীর প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে শামীম ওসমান। কবরস্থানে তার বাবা মায়ের কবরে শ্মশানের মাটি ফেলার কথা উল্লখ সহ বিভিন্ন সময়ে তাদের পরিবারের বিরুদ্ধে আইভি বিষাদাগার করেন বলে তিনি দুঃখ্য প্রকাশ করেন। তবে সব জল্পনা কল্পনা আর নাটকীয়তার অবসান ঘটিয়ে আবারো জয় ছিনিয়ে নিয়ে অপ্রতিরোধ্য হিসেবে আলোচনায় থাকেন চুনকা কণ্যা আইভী।


ওসমান পরিবারের উত্থানঃ
ওসমান পরিবারের রাজনৈতিক ইতিহাসের প্রতিষ্ঠাতা খান সাহেব ওসমান আলী ১৯০০ সালে তৎকালীন বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দিতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২০ এর দশকে তিনি কুমিল্লা থেকে নারায়ণগঞ্জে আসেন। রাজনীতি, ব্যবসা, সমাজসেবা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে ওসমান আলী তখন থেকেই নারায়ণগঞ্জে সুপরিচিত হয়ে উঠেন।১৯৩৫ সালে খান সাহেব ওসমান আলী নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া রেললাইন সংলগ্ন স্থানে গড়ে তোলেন ঐতিহাসিক বায়তুল আমান।এরপর নারায়ণগঞ্জেই স্থায়ী হন। ওসমান আলী ১৯৩৮ সালে নিজ গ্রামে একটি প্রাথমিক ও একটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের তানজিম মুসাফিরখানা, রহমতুল্লাহ অডিটোরিয়াম ও গণপাঠাগার নির্মাণে তার অবদান ছিল। এসব জনহিতকর কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ সরকার তাকে ১৯৪০ সালে ‘খান সাহেব’ উপাধিতে ভূষিত করে। কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের দমননীতির প্রতিবাদে তিনি ১৯৪৪ সালে উপাধি বর্জন করেন। ব্রিটিশদের উপাধি বর্জনের সাহসী সিদ্ধান্তের জন্যও সেসময় তিনি সমানভাবে প্রশংসিত হন। লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাকিস্তান আন্দোলন শুরু হলে ওসমান আলী নারায়ণগঞ্জে আন্দোলনকে সংগঠিত করেন এবং বামপন্থী ও অন্যান্য স্থানীয় নেতাদের সহযোগিতায় সেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার চেষ্টা করেন। ১৯৪৬ সালে নারায়ণগঞ্জে ‘ঝুলন যাত্রা’কে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হলে হিন্দু ও মুসলমানদের সমঝোতায় আনতে তিনি ভূমিকা রাখেন। ওসমান আলী ১৯৪৬ সালে সাধারণ নির্বাচনে (নারায়ণগঞ্জ দক্ষিণ নির্বাচনী এলাকা) ঢাকার নবাব খাজা হাবিবুল্লাহকে পরাজিত করে বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর মুসলিম লিগের সভাপতি এবং ঢাকা জেলা মুসলিম লিগের সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর মুসলিম লিগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ঢাকা জেলা মুসলিম লিগে ঢাকার নবাবদের সঙ্গে প্রগতিশীল গ্রুপের মতবিরোধ দেখা দেয়। এ বিরোধে ওসমান আলী প্রগতিশীল গ্রুপকে সমর্থন করেন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে নারায়ণগঞ্জে গণসংবর্ধনা দেন। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দল আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য ছিলেন এম ওসমান আলী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সেসময়ের রাজনীতিবিদরা তাকে অত্যন্ত সমীহ করতেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তার বিশেষ ভূমিকা ছিল। এ জন্য তিনি কারারুদ্ধ হন। ১৯৬২ সালের শাসনতান্ত্রিক আন্দোলন, ছয়দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ওসমান আলী সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাপিডিয়ায় এম ওসমান আলী সম্পর্কে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তাতে বলা হয়, তিনি সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগী ছিলেন। তার সম্পাদনায় ত্রিশের দশকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সবুজ বাঙলা নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এ পত্রিকায় লিখতেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মোহিতলাল মজুমদার, জসীমউদ্দীন, আবুল মনসুর আহমদ, অধ্যাপক মুহম্মদ মনসুরউদ্দীন, বন্দে আলী মিয়া, কাজী আবদুল ওদুদ, মাহমুদা খাতুন সিদ্দিকা প্রমুখ। ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ তিনি প্রয়াত হন।
বাবার পথ ধরেই রাজনীতিতে এসে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন ওসমান আলীর বড় ছেলে একেএম সামসুজ্জোহা। তিনি নাসিম ওসমান, সেলিম ও শামীম ওসমানের বাবা। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে নির্বচনে তিনি সাংসদ হন।সরকারি বার্তা সংস্থা বাসসের খবরে জানানো হয়,স্বাধীনতা সংগ্রামে বিশেষ অবদান রাখায় মৃত্যুর ২৯তম বার্ষিকীতে ২০১৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়।


চুনকা পরিবারের উত্থানঃ
আলী আহাম্মদ চুনকা স্কুলে ছাত্রাবস্থায় তিনি আওয়ামী লীগের ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত হন। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন এবং পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আইয়ুব বিরোধী গণআন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের ছাত্র-শ্রমিক ও সাধারণ মানুষকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক-জনতাকে সংগঠিত করে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বর্পূণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক হিসেবে সক্রীয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ( মুক্তিযুদ্ধ ক্রমিক নং- ১১৩৮, পৃষ্ঠা নং- ৪৯৯৫, বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত, ২৯ শে মে ২০০৫ খ্রি.)। মুক্তিযুদ্ধের সূচনাতে ২৬ র্মাচ তাঁর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা নারায়ণগঞ্জে অস্ত্রাগার লুন্ঠন করেন, যা দিয়ে পরবর্তীতে পাকসেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পতিরোধ গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে তিনি ভারতরে আগরতলার রাজবাড়িতে অবস্থান গ্রহণ করেন। আগরতলা ও মেঘালয়ের ক্যাম্পের মুক্তযিোদ্ধাদরে এবং স্বরর্নাথীদরে খাবার-দাবার, চিকিৎসা ও বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের দায়িত্ব পালন করেন। আলী আহাম্মদ চুনকা ১৯৬২ সালে দেওভোগ ইউনিয়ন থেকে বীণা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিডি মেম্বার নির্বাচিত হন। ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত পৌরসভার নির্বাচনে বিপুল ভোটে নিবাচিত হয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শহররে অবকাঠামো উন্নয়ণ ও উন্নত নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধির ভূমিকার জন্য ১৯৭৭ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনে তিনি পূনরায় বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮০ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ওসমান পরিবারের একেএম শামছুজ্জোহার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন আলী আহাম্মদ চুনকা। মৃত্যুর পূর্ব র্পযন্ত তিনি একাধারে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতির দাযিত্ব পালন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননত্রেী শেখ হাসিনাকে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বালুর মাঠে প্রথম গণসংর্বধনা প্রদান করেন এবং “নগরের চাবী” তাঁর হাতে তুলে দেন চুনকা। দেওভোগ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তার প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু। শৈশব থেকেই অবহেলিত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক ও পরবর্তীতে এই জনগোষ্ঠীর প্রতি তার গভীর মমত্ববোধের প্রতিফলন ঘটে। তিনি একদিকে রাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও অন্যদিকে সমাজের নিন্মস্তরের অবহেলিত বৃহত্তর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাথে সমভাবে সর্ম্পক গড়ে তুলেছেন।১৯৫৬ সালে নারায়ণগঞ্জ শহর ও এর আশেপাশে ভয়াবহ মহামারি দেখাদেয়। বসন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। শত শত মানুষের মৃত্যু হয় আত্মীয় পরিজন ফেলে জীবন বাঁচাতে যখন মানুষ এদিক-সেদিক পালাতে থাকে তখন তিনি সহকর্মীদের নিয়ে দল গঠন করে আর্তের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাদের চিকিৎসা সেবা ও মৃতদের দাফন-কাফনে তাদের পাশে দাঁড়ান। মহামারীর পুরো সময় তিনি এই আর্তের সেবায় নিয়োজিত থাকেন। ১৯৬৪ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় সাহসিকতার সাথে তিনি বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ান। ১৯৬৯ সালে নারায়ণগঞ্জের ডেমরার টর্নেডো, ১৯৭০ সালে দক্ষিণবঙ্গে জলোচ্ছ্বাস এবং ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় দুর্গতদের রক্ষার জন্য তাঁর ভূমিকা ব্যাপক আলোচিত। এসবের জন্যই তিনি এই জনপদের “চুনকা ভাই” হিসাবে সারাদেশে পরিচিতি লাভ করেন। শিক্ষা,সংস্কৃতির ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি ‘শিশুবাগ বিদ্যালয়’ ও ‘কলরব’ নামে দুইটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি শহরের নারায়ণগঞ্জ হাই স্কুল, গণবিদ্যা নিকেতন, তোলারাম কলেজ ও মহিলা কলেজ পরিচালনার সাথে যুক্ত হয়ে প্রতিষ্ঠানসমূহের শিক্ষার মান উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। নারায়ণগঞ্জের অসংখ্য সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে তিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত থেকে সংস্কৃতির মান উন্নয়নেও বিশেষ অবদান রাখেন। তিনি প্রায় শতাধিক সমাজ কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন, ক্লাব সমিতি ও ক্রীড়া সংগঠনরে সাথে জড়িত ছিলেন। মিডিয়া বান্ধব চুনকা সাংবাদিকতার সুবিধার্থে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের জায়গা বরাদ্দ দেন। নারায়ণগঞ্জে বই পড়ায় উৎসাহ দিতে সুধীজন পাঠাগারের ভবন নির্মাণের জন্য জায়গা বরাদ্দ দেন। তিনি নারায়গঞ্জে স্কাউট আন্দোলনকে সম্প্রসারিত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। কাবাডি, ফুটবল ও ক্রিকেট সহ বিভিন্ন খেলাধুলায় তার সবিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসাবে পরিচিত ছিলেন। বৃহত্তর ঢাকা জেলায় তিনি কাবাডি খেলোয়াড় হিসাবে বহু পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। তিনি প্রায় ৭৬টি সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছেন।


ওসমান পরিবারের বর্তমান অবস্থানঃ
নারায়ণগঞ্জে প্রগতির পক্ষে সব লড়াইয়ে সামনের সারিতে থেকে নারায়ণগঞ্জে যে পরিবারটির উত্থান হয়েছিল দুই পুরুষ বাদে সেই পরিবারেরই উত্তরসূরিদের কর্মকাণ্ডের কারণে অতীত মান-মর্যাদা অনেকটাই সংকটের মূখে।সামসুজ্জোহা বেঁচে থাকতেই তার বড় ছেলে নাসিম ওসমান স্বৈরাচার এরশাদের শাসনামলে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৮৬ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে তিনি সাংসদ হন। পরবর্তীতে ১৯৮৮, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির টিকিটে তিনি এমপি হন। ২০১৪ সালের এপ্রিলে নাসিম ওসমানের আকস্মিক মৃত্যুতে সেলিম ওসমানের সাংসদ হওয়ার সুযোগ আসে। সে বছর উপনির্বাচনে সাংসদ হন তিনি। নারায়ণগঞ্জের ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি সব কিছুতেই তার একচ্ছত্র আধিপত্যের কথা আলোচিত হয় নানা মহলে। অভিযোগ রয়েছে সাংসদ হওয়ার আগেই বড় ভাই নাসিম ওসমান ও ছোট ভাই শামীম ওসমানের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে নারায়ণগঞ্জের ব্যবসা বাণিজ্যের নেতৃত্ব নিজের কব্জায় নেন তিনি।১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগের টিকেটে শামীম ওসমান এমপি হন। এমপি নির্বাচিত হয়েই নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে ভয়ংকর রাজনীতিবিদের তকমা লাগে তার গায়ে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সন্ত্রাসের রাম রাজত্ব কায়েম করেন বলে অভিযোগ ওঠে ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে।২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির পর শামীম ওসমান প্রথমে ভারত ও পরে কানাডায় পারি জমান।২০০৬ সালে ফিরে এসে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে আবির্ভূত হলেও ২০০৭ সালের ওয়ান ইলেভেনের পট পরিবর্তনে আগের দিন তিনি আবারো দেশত্যাগ করেন। ফিরে আসেন ২০০৯ সালের এপ্রিলে। ততদিনে তার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। তখন নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ ছিলেন অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচনে সেলিনা হায়াৎ আইভীর কাছে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হন শামীম ওসমান। ২০১৪ সালের নির্বাচনে অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীকে বাদ দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে শামীম ওসমানকে মনোনয়ন দেয়। সেই নির্বাচনে এমপি হয়ে নারায়ণগঞ্জে নিজের ভিত্তি আবারও শক্তিশালী করেন শামীম ওসমান। তিনি বর্তমানেও নারায়ণগঞ্জ ৪ এর সংসদ সদস্য।নারায়ণগঞ্জের মেধাবীছাত্র ত্বকী হত্যাসহ চাঞ্চল্যকর সাত খুনে ওসমান পরিবারের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল ওঠে। সর্বশেষ হকার বাসানো ও উচ্ছেদ নিয়ে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভির ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে শামীম ন ওসমানের মদদে তার অনুসারী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যেমন বিরক্তির কারণ হয়েছে তেমনি নির্বাচনের বছরে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে আওয়ামী লীগকে। শামীম ওসমানের ভাই জাতীয় পার্টির সাংসদ সেলিম ওসমান সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসেন ২০১৬ সালে। পরিবারের মর্যাদা বিসর্জনে তিনিও কম যাননি। ২০১৬ সালের ১৩ মে সেলিম ওসমান প্রবীণ শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কান ধরে ওঠবস করান ও তার সামনে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় ওই শিক্ষককে। ওই ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা ও নানাভাবে হেনস্থার শিকার হতে হয় তাকে। জনসমক্ষে স্কুল শিক্ষকের অপমান সেসময় দেশব্যাপী প্রতিবাদের জন্ম দিয়েছিল। এই ধরনের নানা ঘটনায় ওসমান পরিবার রাজনীতিতে ক্লীন ইমেজ ধরে রাখতে ব্যার্থ হন। রাজনৈতিক মাঠে বারবার বিতর্কিত হন।


চুনকা পরিবারের বর্তমান অবস্থানঃ
আলী আহম্মদ চুনকার বড় মেয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী। ১৯৮৪ সালে চুনকার মৃত্যুর পর ১৯৮৬ সালে তিনি বৃত্তি নিয়ে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের ওদেসা নগরের পিরাগভ মেডিকেল ইন্সটিটিউটে পড়তে যান। পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে আইভী রাজনীতির মাঠে যোগ দেন ১৯৯২ সালে নারায়ণগঞ্জ শহর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার মধ্য দিয়ে। ২০০৩ এ চারদলীয় জোট সরকারের আমলে বিএনপির প্রর্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে জয়লাভ করে পৌরসভার চাবি তুলে দেন দলনেত্রী শেখ হসিনার হাতে। এরপর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে শামীম ওসমানের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে লক্ষাাধিক ভোটের ব্যাবধানে দেশের প্রথম নারী সিটি মেয়র নির্বাচিত হন। সন্ত্রাস বিরোধী ভূমিকা ও সিটির উন্নয়ন কর্মধারার জন্য এ পর্যন্ত সুনাম ধরে রেখেছেন চুনকা কণ্যা আইভী। টানা তৃতীয় বারের মতো নগর কর্তা নির্বাচিত হয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক হিসেবে ভূয়সী প্রশংসা কুড়ান তিনি। আইভী বর্তমানে জেলা আওয়ামীলীগের জ্যাষ্ঠ সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। আলী আহাম্মদ চুনকার মেঝো ছেলে রেজা রিপন বর্তমানে জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ও ছোট ছেলে আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জল মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এই দুইজনের ব্যাপারেও রাজনৈতিক মাঠে কোন বিতর্ক নেই। #
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ভোর ৪:২৪
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×