বাংলাদেশও ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল। তখন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ জেএমবি, হরকাতুল জিহাদ, হিজবুত তাহরির, লস্কর-ই-তৈয়বাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী প্রায় প্রতিদিনই বোমা ও গ্রেনেড হামলা চালাতো। এসব হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল, দেশ থেকে অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতাকর্মীদের নিশ্চিহ্ন করা। এসব সন্ত্রাসী হামলার মধ্যে আছে, ২০০২ সালের ৫ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের চারটি সিনেমা হলে বোমা হামলায় ১৯ জন নিহত। ২০০৪ সালের ২১ মে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর গ্রেনেড হামলা। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট আধা ঘণ্টায় দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৬৩টি জেলার পাঁচশ’ স্থানে বোমা বিস্ফোরণ। গ্রেনেড ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে আমাদের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও এসকাপের প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক এসএএমএস কিবরিয়া এমপি, শ্রমিক নেতা আহসানউল্লাহ মাস্টার এমপি, মমতাজউদ্দিন এমপি এবং কোর্ট চত্ত্বরে দুইজন জনপ্রিয় বিচারক হত্যা।
আমিও(হাসিনা) ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর এক ভয়াবহ গ্রেনেড আক্রমণের শিকার হই। তখন আমি(হাসিনা) ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দিচ্ছিলাম। এতে ২৪ জন নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। প্রায় ৫০০ জন আহত হয়েছেন। আমি(হাসিনা) অলৌকিভাবে বেঁচে যাই। বাঙালি জাতি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একটি ভিন্নধর্মী সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়। সেদিন কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য আমার (হাসিনা) বাবা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং আমাদের পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করাই ছিল হত্যাকারীদের উদ্দেশ্য। বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কময় এ দিনে আমার ছোট বোন শেখ রেহানা ও আমি বিদেশে ছিলাম। ফলে প্রাণে বেঁচে যাই। এসব ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে দেশকে রক্ষার লক্ষ্যে আমরা সন্ত্রাস ও সকল প্রকার চরমপন্থার বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স” নীতি গ্রহণ করেছি।