somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃষ্টিধারাই আম আর আমড়া গোটা...

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৩:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কাজে যেখানে আমার ডেস্ক এবং চেয়ার তার পেছনে আছে ছোট্ট একটা জানালা। মাঝে মধ্যে চেষ্টা চলতে থাকে জানালাটা খুলে ফেলার। যেহেতু অফিস এর জানালা, বলা চলে যে এক্কেবারে যব্দ করে লাগানো যেন কেউ খুলতে না পারে। আমার "এয়ার কন্ডিসন" মোটেও ভালো লাগেনা। দম আটকে আসে। যেমনি জলে লাইট তেমনি কৃত্রিম বাতাস। সেইজন্য অজুহাত দিয়ে বার বার বাইরে চলে যাই মুক্ত বাতাস খাওয়ার জন্য। নইলে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারিনা। কোনদিকে সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা পার হয়ে যায় বোঝার কুল নেই, যদি না একটু করে পিছনে ফিরে তাকাই। চারপাশে অনেক গুলো জানালা কিন্তু ব্লাইন্ডস দিয়ে অন্ধকার করে রাখা হয়ছে, বিরক্তিকর।
হঠাৎ করে দুপুরের শুরুতেই মেঘ গর্জন শুনতে পেলাম। আমি পিছনে ফিরে জানালার দিকে মুখ করতেই দেখতে পেলাম, মেঘ ভারী মন খারাপ করেছে, সেই জন্য মুখ ভারী করে আছে, আর ইচ্ছে মত চারপাশে অন্ধকার ছড়িয়ে দিচ্ছে। ঠিক আমার মত। আমার সাথে মেঘের কত্য মিল। তবে মেঘ তার অন্ধকার ঘুচাতে বৃষ্টি নামিয়ে এনে দেই কারো মনে আনন্দ তো কারো মনে দুঃখ। আমারটা? :-)



শুরু হয় ঝুমঝুম বৃষ্টি, এবং আমার ভোজনের সময়। আজ ভোজনে তেমন কিছু খাওয়ার পরিকল্পনা যদিও ছিলনা। তারপর ও অনেক কিছু খেয়ে ফেলি। আমি নিত্যদিনের মত আমার থলে, বই, পানি, ছোট্ট একটা তুর্কি স্যান্ডউইচ, আম, আমড়া গোটা, আপেল, ছুরি এবং লবণ নিয়ে বের হয়ে পরলাম ছাদের উদ্দেশ্যে।



প্রতিদিন খাওয়া হয় বিভিন্ন রকমের খাবার আজকে ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনের সংখ্যা বেশি।
বৃষ্টির কারনে ছাদে আর উঠা হলোনা। তবে পারকিং লটে সরঞ্জাম নিয়ে বসে পরলাম। বাতাসে বৃষ্টির ফোঁটা ছুয়ে যাচ্ছিল আমাকে। তুর্কি স্যান্ডউইচ খেয়ে আপেল বের করতে করতে দেখলাম বৃষ্টি আরো বেড়ে গেল। আমি বসে বৃষ্টির আনন্দ দেখছিলাম, একটার পর একটা খাবার মুখে দিচ্ছিলাম। পাশাপাশি দূর আলাপনে মেতে ছিলাম কিছুক্ষণের জন্য কানাডার বাসিন্দার সাথে। সহজেই মন ভালো হয়ে যায় বৃষ্টির কারনে। সেই জন্য সহজ ভাবে কথা বলতে পারছিলাম। কিছুক্ষন পর ফোন রাখতে হয় কানাডার মানুষের। আমি আমার মত করে আমড়া গোটা আর আম ছিলে ছিলে লবণ দিয়ে খেতে থাকি। আর পাশাপাশি বই পড়ি রবি ঠাকুরের মনিহার খানা।

হঠাৎ করে...অনেক দূর থেকে কানে ভেসে আসছে এম্বুলেন্সের সাইরেন। এই সাইরেন আমাকে নিস্তব্ধ করে দেয়। আহা বৃষ্টি হলেই এখানে অনেকে এক্সিডেন্ট করে। যতবার বৃষ্টি হয় ততবার মনে হয় এই বুঝি এম্বুলেন্সের সাইরেনের আওয়াজ শুরু হবে। কিছুক্ষন যেতে না যেতেই শুরু হয়ে যায়। মন কেমন যেন করতে থাকে। আর সঙ্গে সঙ্গে আমার ফোন বেজে উঠে। আমি জানি কে করেছে। আমার মা। আম্মু বলে "মা তুই কোথায়? বাইরে অনেক সাইরেন এর আওয়াজ হচ্ছে আমার মনে শান্তি পাচ্ছিলাম না তাই তোরা কে কোথায় আছিস সুস্থ আছিস কিনা ফোন করে দেখছি।" আমি হেসে উত্তর দিলাম মাকে, আমি ভালো আছি, আনন্দে আছি। মা হেসে আল্লাহর হাওলা বলে ফোন রেখে দেয়।

আমি মাঝে মাঝে মনে করতাম মানুষ কিভাবে বৃষ্টিতে এক্সিডেন্ট করে? বৃষ্টি শুরু হলে চলমান গাড়ির স্পিড কমিয়ে দেয়া উচিৎ। আমি আর বলিনা এই কথা কারন, আমিও বৃষ্টির শীকার হয়েছি। সেই দিনটা কখনো ভুলতে পারবনা। বৃষ্টি বার বার স্মরণ করিয়ে দেয় সেই মর্মান্তিক দিনটির প্রতিটা মুহুর্ত।

আমার আনন্দ মিশে যায় বৃষ্টি থামার সাথে সাথে, কাজে ফিরে যাবার সময় এখন...

সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ৩:৩৭
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

"বিস্মৃতি"

লিখেছেন দি এমপেরর, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৫৫


সে যে আজ কোথা হারিয়ে গিয়েছে, আঁধার ছেয়েছে ঘনঘোর কালো;
চাঁদ নেই তারকারাজিও উধাও, নেই জ্বলে কোথা টিমটিমে আলো!
সে যে জানে শত হৃদয়ের কথা, মায়াজালে ঘেরা হাজার স্মৃতি!
কত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথা হালকা পোষ্ট!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:০৭

অবিশ্বাস্য হলেও লেকটির অবস্থান খোদ ঢাকায়; কেউ কি এর লোকেশন বলতে পারেন?



কাটা তরমুজের ছবিটা দেবার বিশেষ মাজেজা আছে;
উটিউবে একজন কামেল বুজুর্গান পাকা সূমিষ্ট তরমুজ কেনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলার্ট : শেখ হাসিনা আজ রাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪৭


বাংলাদেশের মানুষ কল্পনা করতে খুব ভালোবাসে। গুজব ও অপতথ্য শেয়ারে বাংলাদেশের মানুষ প্রথমদিকে থাকবে বলে অনেকের বিশ্বাস । দেশের মানুষের পাঠ্যবই ছাড়া অন্য কোনো বইয়ের প্রতি আগ্রহ নেই। আত্নউন্নয়ন মূলক... ...বাকিটুকু পড়ুন

তামিম ইকবাল কি একবার ফেসবুক লাইভে এসে শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাবেন?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৪ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৫৮



আজ দুইবার ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের পরেও তামিম বেঁচে আছেন যে হাসপাতালের ডাক্তার-স্টাফদের কারণে, সেটি গাজীপুরের একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল, যা শেখ হাসিনার মায়ের নামে। তামিমের এতটাই খারাপ অবস্থা ছিলো যে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

=খন্ড কাব্য ১-৪=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৫ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:৫৮


১।মনের অসুখ, মন আকাশ বৃষ্টির ভারে নুয়ে পড়েছে
চোখে বৃষ্টি নামার আগেই তুমি, বলো ভালোবাসি
অথবা চোখে তাকিয়ে বলো এ কাজল চোখে মানায় না বৃষ্টি
বলো, তুমি হাসো মন খুলে
ব্যস! চাই না কিছু... ...বাকিটুকু পড়ুন

×