আমি থেমে থাকিনি কখনোই-
হয়ত বুনোফুলের মৌতাতে নিপুণ বুননে
গেঁথেছিলাম এক ঐশী ফাগুণরাত,
ভেসেছিলাম ঢেউয়ের সফেদ ফেনায়, ভোররাতে
টুপটাপ শিশিরের ঝরে পড়ায়, শুকনো
পাতার মর্মরে, প্রথম চুমুর লাজুকতায়
কিংবা
অতৃপ্ত আত্মাদের
প্রার্থনায় বারবার ফিরে আসায় ।
আমার পুরোটুকু তোমার অজানাই ছিল ভাবা যায়, তিনশ' মাইল
ড্রাইভ করে লাস ভেগাসে তিনরাতের
আবছায়া স্মৃতিকাতরতায়
অস্থির আঙ্গুলে রেডিওতে ক্রমাগত স্ক্যান করে
খুঁজে পাওয়া চ্যানেল নাইন্টি সেভেন পয়েন্ট থ্রি'র সাথে
গুণগুণ করে যখন সুর ভেঁজেছিলে,
"Stop! In the Name of Love,"
মিহিসুরে গেয়ে চলা
সেই একাকী গায়কের সাথে,
ভালবেসে যে নিজেই থেমে থাকেনি;
অথবা ফ্রাইডে নাইটে
প্রেয়সীর উচ্ছলতা থেকে
একটি একটি করে বুদবুদ কুড়িয়ে
যখন নীল বেগুনি সবুজের পটচিত্র আঁকো -
আমি ভেসে আসি ।
চন্দ্রালোকে ধীরপায়ে এগিয়ে আসা রমণীর সাথে,
কখনো দীর্ঘশ্বাসের সেতু থেকে
টুপটাপ
ঝরে পড়া
কান্নার বেনোজল
পাক খেয়ে
যখন অকপট সমুদ্রে ঠাই খুঁজে নেয়,
তাতে আমার উজ্জীবন ।
তারপর একদিন,
যেন হঠাৎ সূর্য এলো-
শহরের বুকজুড়ে কোলাহল, চলন্ত ট্র্যাফিক,
ভেঁপুর একটানা শব্দ, মুখর শিশুদের ছোটাছুটি,
রান্নাঘরের টুং টাং আটপৌরে অভ্যস্ততা আর
প্রান্তিক ঝাউবনে একঝাঁক প্রাজ্ঞ মুনিয়ার দমফোট আড্ডায়
মেঘের একটি দীর্ঘ সুতনুরেখার সাথে
আমি প্রসারিত হই,
বজ্রধ্বনি আর আর্তনাদে
একটি দরজা খুলে যায়;
অস্পষ্ট শ্রুতিতে আমি হুড়মুড় করে আসন নিই-
আজ তুমি আর আমি
মুখোমুখি হতে প্রস্তুত ।
আমরা জড়িয়েছিলাম, ছুঁয়ে ছিলাম-পরস্পর
চিরকাল, অথবা অনাদিকাল থেকে
তোমাকে জানার আগে কোন এক
প্রাক ভৈঁরোরাগে,
চাঁদের মৌনতা ছুঁয়ে,
তোমার অকৈতব চারপাশ জুড়ে
একটি বিন্দু হয়ে,
তোমার স্বপ্ন হয়ে,
সবসময় ।