somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রবীন্দ্রনাথ বলেছেন: কন্ট্রাসেপটিভ আবিষ্কৃত হওয়ায় এখন বাচ্চাকাচ্চা হওয়ার ভয় ছাড়াই আকাম করা যায়!

০৯ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯২৮ সালের ১লা ফেব্র“য়ারি তাঁর সেড়বহধন্য দিলীপ কুমার রায়কে কবি এক দীর্ঘ চিঠি লেখেন। বিষয়- নারীর ব্যভিচার। রবীন্দ্রনাথ স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেন, “সমাজে যদি অশান্তি না ঘটে তাহলে ব্যভিচার-ব্যভিচারই হয় না। ব্যভিচারের ফলে যদি সন্তান সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে আজকাল সেটাও সমস্যা নয়। কেননা কন্ট্রাসেপটিভ বেরিয়ে গেছে। নিবারণের উপায়গুলোও সহজ। সুতরাং গর্ভধারণ করতে হয় বলে দেহকে সাবধান রাখার দায় আর তেমন নেই।... সমাজ নিজের প্রয়োজনবশত: স্বভাবকে ঠেকিয়ে রাখে। ঠেকিয়ে রাখতে তার অনেক ছলবল- কৗশল অনেক কড়াকড়ি, অনেক পাহারার দরকার হয়। কিন্তু প্রয়োজনগুলোই যখন আলগা হতে থাকে, তখন স্বভাবকে ঠেকিয়ে রাখা আর সহজ হয় না। ব্যক্তিগত সম্পত্তি ভোগের দৃষ্টান্ত দেখ না। আমার যখনই ক্ষিদে পায়, তখন আমার গাছে যদি ফল না থাকে, তবে তোমার গাছ থেকে ফল পেড়ে খেতে আমার স্বভাবতই ইচ্ছা হয়। কিন্তু যেহেতু ব্যক্তি সম্পত্তির সীমা রক্ষা করা সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষার পক্ষে অত্যাবশ্যক, এজন্যই ফল পেড়ে খাওয়াটা চুরি। এই চুরি সম্পর্কে সমাজ আমাদের মনে যে সংস্কার দৃঢ় বদ্ধমূল করে দিয়েছে সেটা নিজের ব্যবস্থা রক্ষা করবার উদ্দেশ্যে।... বস্তুত: চুরি না করার নীতি শাশ্বত নীতি নয়। এটা মানুষের মনগড়া নীতি। এ নীতিকে পালন না করলে সমাজে যদি অশাস্তি না ঘটে, তবে পরের দ্রব্য নেওয়া চুরিই নয়। এই কারণে তুমি দিলীপ কুমার রায় যদি আমি রবীন্দ্রনাথের লিচু বাগানে আমার অনুপস্থিতিতে লিচু খেয়ে যাও, তুমিও সেটাকে চুরি বলে অনুশোচনা কর না। আমিও সেটাকে চুরি বলে খড়গহস্ত হই না। ব্যভিচার সম্বন্ধে এই কথাটাই খাটে। এর মধ্যে যে অপরাধ সেটা সামাজিক। অর্থাৎ সমাজে যদি অশান্তি ঘটে, তবে সমাজের মানুষকে সাবধান হতে হয়। যদি না ঘটে, তাহলে ব্যভিচার-ব্যভিচারই হয় না। (দ্র: অমিতাভ চৌধুরী, ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ)।

এত কথার শেষ কথা হলো-চুরিবিদ্যা মহাবিদ্যা যদি না পড়ে ধরা! আপনি রবীন্দ্রনাথের বউয়ের সাথে আকাম করবেন, কিন্তু তা করতে হবে তার চোখকে ফাঁকি দিয়ে। ধরা পড়লেই সর্বনাশ! ধরা পড়লেই ব্যভিচার ব্যভিচার হবে, নচেৎ তা ব্যভিচার হিসেবে গোনায় ধরা হবে না। আপনি যত বেশি গোপনে আকাম করতে পারবেন আপনি তত বড় মহাপুরুষ!


প্রিয় পাঠকবৃন্দ! উপরোক্ত উদ্ধৃতিসমূহ পড়ে নিশ্চয়ই পুলকিত হয়েছেন এবং অনুভব করতে সক্ষম হয়েছেন কেন আমাদের দেশে রবীন্দ্রভক্ত এত বেশি এবং বিখ্যাত লেখিকা তসলিমা নাসরীন রবীন্দ্র ভক্ত বুদ্ধিজীবীদের নামে ‘ক’ ‘খ’ লিখতে বাধ্য হয়েছেন। রবীন্দ্র ভক্তরা কি ঋষি কবিকে ভক্তি করেন, নাকি রক্ত মাংসে গড়া ষড়রিপুর দাস বাউল কবি রবীন্দ্রনাথকে বেশি ভালবাসেন?

১. “কবির সঙ্গে তার (বৌদি) কাদম্বরীর অবৈধ প্রেমকে কেন্দ্র করে নাকি জ্যোতিরিন্দ্রনাথের সংঘর্ষ হয়েছিল। সেটাকে কেন্দ্র করে ডক্টর নরেশ চন্দ্র সেনগুপ্ত ‘পাপের ছাপে’ লেখায় কবি বিরুদ্ধ মতামত ব্যক্ত করেছেন। ঠাকুরবাড়ির সুভোঠাকুর সম্পাদিত ‘ভবিষ্যত’ পত্রিকায় কবির বিরুদ্ধে লেখা বের হয়-

পয়েট টেগোর কে হন তোমার জোড়াসাঁকোতেই থাকো
বাবার খুড়ো যে হন শুনিয়াছি, মোর কেহ হয় নাকো।”

(অধ্যাপক দীপন চট্টোপাধ্যায়, পূর্বোক্ত, পৃ. ২৩)।

২. “রবীন্দ্রনাথ নিজেকেও বাউল বলে পরিচয় দিয়েছেন। ড. সুধীর বাবু এ প্রসঙ্গে লিখেছেন, “তাঁর কোন কোন রচনাকে তিনি ‘রবীন্দ্র বাউলের রচনা’ বলে মেনে নিয়েছেন।” (দ্র: ‘দেশ’, পৃ. ৩৬, ডিসেম্বর ১৯৯১)।

৩. “বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর শ্রী ক্ষিতি মোহন সেন শাস্ত্রী বাউলদের সম্পর্কে লিখেছেন, “দেহের মধ্যেই তাহাদের বিশ্ব। জাতি ও সমাজের বন্ধন উভয়ের কাছেই অর্থহীন।” (বাংলার বাউল, শ্রী ক্ষিতি মোহন সেন শাস্ত্রী, পৃ. ২)।

৪. “মিথুনাত্মক যোগসাধনা আধ্যাত্ম্যবাদী বাউল সম্প্রদায়ের সাধনার মূল পদ্ধতি। বাউলের সাধনা দেহকেন্দ্রিক। ‘দেহমন্দিরে প্রাণের ঠাকুর’ অন্বেষণই বাউলের সাধনার সার।” (দ্র: বসন্ত কুমার পাল, মহাত্মা লালন ফকির, পৃ. অবতরণিকা-১০)।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ১১:২৭
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×