“সংখ্যালঘু” আর “সংখ্যাগরিষ্ট” কি সুন্দর শব্দ। সংখ্যাগরিষ্ঠরা সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালাবে অত্যাচার নির্যাতন করবে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিবে। দশম জাতীয় নির্বচনে ভোট দেয়ার অপরাধে হিন্দুদের ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে “দুবৃত্তরা”। ২০১৪ সালেও বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী দের উপর মৌলবাদী আক্রমণ। তাও ভোট দেয়ার অপরাধে? কেন ভাই? আর এটা নিয়ে ফেসবুকে জ্বালাময়ী স্ট্যাটাস দিলে শত খানেক লাইক পড়বে। অতএব তৃপ্ত মনে টেলিভিশনের সামনে বসা যায়!
ভোট দেয়ার অপরাধে “দুবৃত্তরা” এভাবে হিন্দুদের ঘর বাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে। দেশের যে কোন রাজনৈতিক বিষয়ের বলি হিন্দুরা। কিছু হলেই “মালাউন ধর, পুড়িয়ে দে”। পার্শবর্তী দেশে মুসলমানদের উপর হামলা চালিয়েছে? দে এ দেশের হিন্দুদের পুড়িয়ে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প সবখানেই আছে। তাই বলে সেটা এভাবে প্রোমট পেতে পারে না!
পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রে মুসলমানদের উপর সাম্প্রদায়িক হামলা বা মৌলবাদী হিন্দুদের হামলা করা হলে আমরা ক্ষোভে ফেটে পড়ি। বিভিন্ন দেশে মুসলিমদের উপর হামলা হলে আমরা কেদে বুক ভাসাই।
অথচ কিছুদিন আগে যশোর, পঞ্চগড়, দিনাজপুর ইত্যাদি যায়গায় হিন্দুদের উপর সাম্প্রদায়িক আক্রমণের পর কি করছি আমরা?
অথচ নিজ দেশে আমরা অন্য ধর্মাবলম্বীদের রক্ষার্থে কি করি? এখন বলবেন সরকারের দায়। সব দোষ এবং দায় সরকারের উপর চাপিয়ে দিয়ে আসেন স্ট্যাটাস মারি। রোহিঙ্গাদের জন্যে মানবতা দেখাতে গিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছেন আসেন এবার আমাদের দেশের হিন্দু ভাইবোনদের পাশে দাড়াই। কি দাড়াবেন না? মানবতা কেন একপাক্ষিক হবে কেবল? অনেকে তো কোরবানির ঈদের সময় “গরুবতা”ও দেখান। এটলিস্ট নিজের কাছে ক্লিয়ার হন একটা ব্যাপারে যে বিভিন্ন দেশে মুসলিমদের উপর হামলা নির্যতনে আপনি যতটুকু মর্মাহত ঠিক ততটুকুই মর্মাহত নিজ দেশের হিন্দু ভাই বোনদের উপর অত্যাচারে। কেন পূর্ণিমার মাকে বলতে হয়েছিলো যে “ বাবারা আমার মেয়েটা ছোট তোমরা একজন করে আসো?” আসুন অনলাইনে না এবার অফলাইনে প্রতিবাদ হোক। হিন্দু ভাই বোনেরা জানুক তারা একা নয়। হিন্দুদের কি দোষ? কেন তাদের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার করা হবে?
সমকালের খবর “ভোট দিতে যাওয়ায় দিনাজপুরে একটি গ্রামাঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের অর্ধশতাধিক বাড়িঘর, দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা।” যেই “দুষ্কৃতকারীরা” সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ নিয়ে হামলা নির্যতন চালাচ্ছে তারা কি আসলেই সংখ্যাগরিষ্ঠ? দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ তাদের সমর্থন করে না এটা তারাও ভালো ভাবেই জানে। কিন্তু এরপরো কেন হিন্দুদের ঘরবাড়ি পুড়বে? কারণ আপনি আমি প্রতিবাদ করার সাহস করি না। আসুন এক্টু প্রতিবাদ করি। পত্রিকায় অন্তত “সংখ্যালুঘু নির্যতনের” নিউজের পাশে এটাও নিউজ আসুক যে দেশের জনগণ এটার প্রতিবাদ করে।
শনিবার দিন ১১ জানুয়ারী দুপুর বারোয় আসুন প্রেসক্লাবের সামনে। একটা প্ল্যাকার্ডে লিখুন "জামাত-শিবিরের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সম্প্রদায়কে ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং দোষীদের গ্রেফতার করা হোক” প্ল্যাকার্ড নেই? তাহলে ২০১৩ সালের ক্যালেন্ডারের পাতার পিছনে বড় করে লিখুন। এবং এসে পড়ুন। কিভাবে কি করবেন জানেন না? এই ইভেন্টে জয়েন দিন উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলে নিন।
হিন্দুদের উপর হামলার প্রতিবাদ নিয়ে স্ট্যাটাস দিলে লাইক বেশী পাওয়া যায় আহা উহু করার লোক পাওয়া যায় কিন্তু অফলাইনে প্রতিবাদ জানানোর লোক নাই। একটি প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাড়াবেন? দয়া করে এটিকে রাজনৈতিক ইস্যু মনে করবেন না! এটি সম্পূর্ণ মানবিক ইস্যু!
প্রতিবাদ করুন এবং জানিয়ে দিন যে সংখ্যালঘু হিন্দুরা নয়। সংখ্যালঘু জামাত শিবির।
হিন্দুদের উপর হামলার প্রতিবাদে সামুতে অন্যান্য পোস্ট গুলো:
হিন্দু+মুসলিম+অল=বাংলাদেশ
প্রসঙ্গঃ সংখ্যালঘু নির্যাতন
ওরা মুসলমান নামে ইসলামের শত্রু!!!!!!
পয়সা উসুল
সংখ্যালঘু , মালাউন, মালু এ জাতীয় উস্কানি মূলক শব্দ নিষিদ্ধ হোক
সাম্প্রদায়িকতা একটা মানসিক ব্যাধী আর অসাম্প্রদায়িকতা হলো মানবিক গুন; দুঃখজনক হলেও সত্য যে উপরোক্ত দুটি গুণাবলি মানুষ অর্জন করে তার পরিবার ও পরিবেশ থেকে।