somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেবায় বন্ধুত্বের সহায়তা

২৩ শে আগস্ট, ২০১২ সকাল ৯:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেক মানুষই চুপচাপ থাকেন, নীরবতা পছন্দ করেন এমন। নিজের একান্ত কথা অন্যকে বললে অনেক সময়ই তা' হিতে বিপরীত রূপে ফিরেও আসে। তখন শীতল কষ্টের মাত্রা আরো বেড়ে যায়। প্রযুক্তির এই যুগে অনেকে অনলাইনে নানাভাবে ঘুরে বেড়ান। কেউ কেউ কোথাও বাইরে একা সময় কাটান।এমন অনেকে আছেন যারা নিজেদের একান্ত কথা কখনো কাউকে বলেননি, কাউকে না, কখনো না।
আজকাল অনেক ক্ষেত্রে বাবা-মা খুব কাছের বন্ধু হবার চেষ্টা করছেন। ভাই-বোনও। অনেকে ভাল, শুভাকাংখী বন্ধু হচ্ছেন, পাচ্ছেন। ভার্চুয়াল বন্ধুও। সত্যিকারের বন্ধুই হতে পারে আরেক বন্ধুর সুখ-দুঃখের সাথী হতে। ভালো বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। তারও অনেক কিছু জানা থাকতে হয়, দূরদর্শী হতে হয়। পরিবেশ কেমন কি তাও বুঝতে পারতে হয়। মনে মুখে এক না হলে তখন যেমন সমস্যা, আন্তরিকতা থাকলেও কিছু করতে না পারা, অনুধাবন করতে না পারার সীমাবদ্ধতাও থাকে যেটি আরেক সমস্যা।

অনেকে দেখি আলাপচারিতার জন্য প্রসংগ খোঁজেন বা বলে থাকেন। যাকে নিয়ে মন্তব্য করা হয় তার কেমন লাগবে বা কথাটা তার কানে পৌঁছলে কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে- ভাবেন না। আজকালকার মোবাইলের জমানায় কোন কথা বলতে গেলে, গোপন থাকে না। আপনাকে নিয়ে বলা, আরেকজনের কথা, আজ হোক, কাল হোক ঘুরে আপনার কাছে আসবেই। আর আপনজনরাই তো আপন ভেবে আপনাকে নিয়ে আলাপ করবে!

আপনার সমস্যা, প্রয়োজন, কাছে পাবার আকাংখা কাকে বলবেন? আপনি যা ভাবেন সে প্রসংগ যে কতমুখী হতে পারে তা' ধারনাও করতে পারবেন না। হাল্কাচালের ভালো লাগার, একটুখানি শান্তি নয়, স্বস্তিতে থাকার প্রয়াস নিয়ে যাবে অস্বস্তির আরেক অপ্রত্যাশিত ভুবনে। ক্ষণিকের প্রশান্তির প্রলেপের প্রত্যাশা রূপ নেয় দীর্ঘ অন্তর্জালার। কখনো সৃষ্টি করে নতুন ক্ষতের। মনে হয়- এর চেয়ে না বলাই ভালো ছিল। আমাদের চলতেই হয় যে 'এ্যাকসেপ্ট এন্ড এ্যাডজাস্ট' নীতি নিয়ে। যতটা পারো মেনে নাও, সহজ হও, ছাড় দাও। মাফ করো। যে মাফ করতে পারে সেই তো বড় মনের।

মনে করি, অনেক কিছুই দেখলেও- দেখতে নেই আর অনেক কিছুই দেখলেও বলতে নেই। নেতিবাচক হলে তো আরো নয়। গ্লাসে অর্ধেক পানি আছে যার তুলনা দুই দিকেই দেয়া যায় ও হয়। এটি একটি প্রচলিত উদাহরন। বাস্তবে নিজে তার কোনটির প্রয়োগ করছি? একটু ধ্যান দিয়ে ভেবে দেখি কি? আরো ভালোভাবে এর ব্যবহার করা যায়, যেত, ভাববো কি? সব কিছু বলতেই হবে এমন কোন কথা আছে নেই। যেটি উপেক্ষা করা যায়, এড়ানো যায় তা' করলে কি হয়! ভালো চিন্তা করে এড়াতে পারলে তা' অনেক ভালো। সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড় বাঁচাতে পারে।

কেউ কিছু করলে তার হিসাব রাখে, উল্লেখ করে। তখন মনে হয় হায়, এমন কিছু তো আমি করেছি কিনা মনে নেই। হয়তো করিনি। কারন মনে রাখার দরকারই বোধ করিনি, উল্লেখ করা তো দূরের কথা। কথা দিয়ে অনেকে কথা রাখে না। টাকা ধার নিয়ে ফেরত দেয় না। দিতে না পারার অক্ষমতা থাকলে তা জানাবার, যোগাযোগের প্রয়োজনও মনে করে না। এতে বিশ্বাস হারায় দাতা, অন্য কারো খুব দরকারের সময় ইচ্ছা থাকলেও আর দেয় না।

দিনের বেলা হয়তো দৌড়ঝাঁপ করে আপনার প্রয়োজন সারতে পারেন; মনে হয় নিশিরাতে কোন হঠাৎ বিপদে কাকে ডাকবো? কাকে বলবো আমার সমস্যা! কে পাশে এসে দাঁড়াবে? আমার তো সব কিছু জানা নেই, চেনা নেই, বাহন নেই। আলোচনা, সমালোচনা অনেক করা যায় কিন্তু বিপদে প্রকৃত বন্ধুর পরিচয়- ভালুকবন্ধুদের ঈসপের গল্প দিয়ে ছোটবেলাই আমরা তা জেনেছিলাম।

এ বিষয়ে আমাদের আপনজনরা, কাছের মানুষেরা যদি বুঝতে পারে, সহযোগিতার, সহমর্মিতার আরো একটু বেশী আস্হার আন্তরিক হাত বাড়ায় তবে তো খুবই ভালো। সবাই মিলে চেষ্টা করলে তার ফল অবশ্যই ভালো হবে। আজ নাহয় আগামীতে। ভালোর চর্চা করি, চর্চা আরো ছড়িয়ে দেই।
নাহয়, আপনি আমি হবো আরো নিঃসংগ, একাকী, নীরব। একান্ত প্রয়োজনে কাকে ডাকবো, কার কাছে বন্ধুত্বের গভীর দাবী নিয়ে হাত বাড়াবো? নীরব, একাকিত্ব, দূরত্ব আর কতো? সবাই আরেকটু সহজ হই, ছাড় দেই, মেনে নেই।

ভার্চুয়াল জগতে অনেক কিছুর গ্রুপ আছে, প্রয়োজনের আহবানে অনেকে সাড়া দেন, রক্ত দেন, বিপদে দৌড়ে যান, সময়ে, অসময়ে সাহায্যের হাত বাড়ান। আর কিছু না পারলেও দোয়া করেন, ভালো কথা, উদ্ধৃতি, প্রাসংগিক আয়াত জানিয়ে আসছেন। যারা একাজ করে আসছেন এবং নীরবে করেই যাচ্ছেন তাদের জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা, সালাম, কৃতজ্ঞতা।
সুখে-দুখে, সেবায় বন্ধুত্বের সহায়তার হাত আরো প্রসারিত হোক।
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×