প্রবাসী বাংলাদেশীর সন্তান। জন্মেছেন বিদেশে, পড়ালেখাও বিদেশে। মাঝে মাঝে দেশে এসেছেন। দেশকে কিছুটা জানেন, চেনেনও কিছুটা। কিন্তু বেশী চেনেন বই। ভালবাসেন বই। পড়েনও অনেক বেশী। বই তার বন্ধু, আনন্দ, প্রেরনার, সময় কাটানোর উৎস। পারিবারিকভাবে কোথাও নিয়ে গেলে খানিক পরেই হয়ে যেতেন 'বোর'। কিছু করার নেই। পড়ারও নেই। শিক্ষিকা মাকে আস্তে করে বলতেন- মা, বাসায় চলো।
এতদিনে তিনি বড় হয়েছেন। আরো দেশ ঘুরেছেন, থেকেছেন, পড়ালেখা করেছেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত, বাংলাদেশেই থাকবেন। তাই চলে এসেছেন এখানে। একি, এত কিছু নিয়মছাড়া চলে! রাস্তায় এত জ্যাম! তাই ভোরেই বের হয়ে যান। রাতে ফেরেন বাসায়। চলছে একভাবে।
ঈদের পর দেখা। চুপচাপ, স্বল্পভাষী। তারপরও কথা হোল। বর্তমান পেশা শিক্ষকতা। ইংরেজী ভাষা পড়ান। নাম করা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে। বললেন, কি করি বলো- সবাই এ পেতে চায়। সারা বছর তেমন করে পড়ে না, কাজ করে না। কিন্তু রেজাল্ট বের হলে তা' কেন 'এ' হোল না এই প্রশ্ন তোলে। আমি কি করবো? তার উত্তরের খাতায় কিসে নম্বর দেব! তেমন কিছু থাকতে হবে তো। আমি তো দিতেই চাই। সব মার্কস, নম্বর সব স্টুডেন্টদের জন্যই তো।শুধু মনোযোগ দিয়ে, টাইমমতো পড়লে বি এমনি পাওয়া যায়। চেষ্টা করে খাটলে এ পাওয়া খুবই সহজ। কারন আমি এ দিতে চাই। 'এ' পেলে কতো আনন্দ হয় আমি জানি।এত টাকা খরচ হ্য় পড়ায়- আরো একটু সময় খরচ করলে কতো ভাল হয়! আমি কি উত্তর দেব ওকে!
আমিও খাতা দেখি। শিক্ষার্থী অবস্হায় আরো ভাল করে পড়লে অনেকেরই জীবনের অবস্হান অন্যরকম হতো- এতো আমারও উপলব্বি। অনেকেই তা' আজ বোঝেন। খুব ভাল করে পড়ছেন। অভিভাবকও যত্ন নিচ্ছেন। কিন্তু কেউ কেউ এখনো বুঝতে পারছেন না যে। ধ্যান চলে যায় অন্যদিকে, মন ছুটে বেড়ায় অহেতুক নানাদিকে। চাই আরো মনোযোগ, সময়ের সদ্ব্যবহার।