এই সম্পর্ক ভাঙ্গার পিছনে আমি আমার সমস্ত দায় স্বীকার করে নিচ্ছি। এ রকম একটি দোষই সম্পর্ক ভাঙ্গার জন্য যথেষ্ট।
আমি কিষাণীর অভিযোগ গুলিকে অস্বীকার করতে পারবো না, কারণ এই ঘটনা গুলি ঘটেছে আজ খেকে ১৫-১৬ বছর আগে। এই অভিযোগ অনেকগুলিকে সে তার নিজের পক্ষে দাড় করিয়েছিল সে সময় বা বলা যায় নিজেকে ডিফেন্ড করেছে সেই সময়।
তার অনড় সিদ্ধান্তে আমার সমস্ত চেষ্টগুলি ফিরে এসেছিল বিফল হয়ে। আমি তার চরিত্রের এই দিকটা খুব ভালভাবে জানতাম যে, একবার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সে আর কথনও পিছন ফিরে তাকায় না। বুঝতে পেরেছিলাম সে আর ফিরে আসবে না। এখনও মনে হয় তেমনই আছে ( একরোখা)
আমার দিক থেকে সব চেষ্টাই করেছি সেই সময়। শুধু যা করিনি তাহলো ভালো হয়ে তার সামনে উপস্থিত হওয়া। আর সেটাই বা করবো কি ভাবে? আমার সেই জগত থেকে বেরিয়ে আসতে লেগে যায় ২ বছর। দুই বছর অনেক সময়। তাকে বুঝাতে পারিনি আমি ২-৩ বছর জীবনের তুলনায় বড় অল্প সময়।
সম্পর্ক ভেঙ্গে যাওয়ার পর । তাকে মাঝে মাঝে দেখতাম। সবসময় সাজগোজ করা অবস্থায়, বন্ধু বান্ধব পরিবেষ্টিত, যে কেউ দেখে বলবে আগের চেয়ে বেশী উচ্ছল, সুখী। আমার কেন জানি মনে হতো এ সবই অভিনয় অথবা বুঝতে পারতাম। মাঝে মাঝে মনে হতো জোড় করে তার হাত ধরে বলি অনেক অভিমান হয়েছে আর না। এসো আবার আগের মতো হয়ে যাই, এই আমি সব ছেড়ে দিচ্ছি তুমি একটু সাহায্য করো, কিন্তু বলতে পারি নি কারণ একবার তো সে আমার পাশে ছিলো তারপরও ছাড়তে পারি নি। বরাবরই আমি নেশা ছেড়ে দিতে চেয়েছি। শেষ দিকে শুধু শরীরের টানেই নেশা করতাম।
আমার কিষাণী বিহীন ক্যাম্পাস বড় বেশী অসহ্য মনে হতে লাগলো। একদিন তাকে লাইব্রেরীতে যাওয়ার পথে পথ আগলে বলতে চেয়েছিলাম কথাগুলি। কিন্তু সেদিন তার চোখে আমি ঘৃনা ছাড়া আর কিছুই দেখিনি। আমি নিশ্চিত আমি ভুল দেখিনি। কিষাণীকে জিজ্ঞেস করে দেখুন? বুঝতে পারি, আমার আর কোন জায়গা নেই তার হৃদয়ে।
বাবা মা আর চাইলেন না এখানে পড়াতে । আমি আর অমত করলাম না। ফিরে গেলাম, কয়েকদিন এভাবেই কাটলো তার পর ভর্তি করা হলাম কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে। ডিটক্সিফিকেশন শেষে ফিরলাম বাড়ীতে। তত দিনে কিষানীর সামনে দাড়ানো মতো মানসিক শক্তি আর আমার মধ্যে অবশিষ্ট নেই।
তারা বললো আবার পড়ালেখা শুরু কর অন্য কোন প্রাইভেট ইউনিতে(ততদিনে বাংলাদেশ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় গুলি চালু হয়েছে)আমার আর পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ রইলো না। একদিন বাসায় ঘোষনা দিলাম আমি আর এই দেশে থাকবো না। বিদেশে চলে যাবো। এরপর থেকে প্রবাসী। প্রবাসে নতুন পরিবেশে নতুন নিয়মে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেই। আস্তে আস্তে স্মৃতি গুলি ধুসর হয়ে যায়। এর মাঝে আর কোন খোজ নেওয়ার চেষ্ট করিনি। কি লাভ হতো এই ভেবে।
গত বছর কি করে যেন হঠাত করে ****** এর সাইটে ঢুকে পড়ি এবং পরিচিত কে কে আছে খুজতে খুজতে কিষানীর নাম পেয়ে যাই। তার পর ইযাহুতে তার নাম দিয়ে সার্চ দেওয়া পর ফেইসবুকের লিংক পেয়ে যাই।