somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেম -২৩

১৫ ই জানুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম দিকে, আমাদেরই এক বান্ধবী কোন ফ্যাকাল্টিতে পড়তো এখন ভুলে গেছি, আমাদের এক বন্ধুর পুতুলের সাথে পুতুল বিয়ে দিবে। যথারীতি তার আয়োজন শুরু হলো এবং তারা মহাধুম ধাম করে পুতুল বিয়ে দিল। আমি বেশ পুলকিত, আমি তাকে বললাম চলো আমরাও পুতুল বিয়ে দেই, বর পুতুল বরযাত্রী সেজে আসবে ছেলেদের হল থেকে রিক্সা করে মেয়েদের হলে। সেখান থেকে যাবে টিএসসি তে সেখানে বিয়ে পড়ানো হবে । সে কোন ভাবেই রাজী হয় না। শেষে ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়ে দিলাম। পড়ে অবশ্য শুনেছিলাম তার সাথে আমার পুতুল বিয়ে দিয়ে আমাদের সম্পর্ক বেয়াই-বেয়াইন হবে এই জন্য রাজী হয় নি।

দুজন একসাথে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলাম। সব জুটি যে স্বপ্ন দেখে আমরাও তার ব্যতিক্রম নই। আমরাও ঘর বাঁধার স্বপ্নদেখি। মাঝে মাঝে আমাদের মধ্যে আলোচনাও হয়। তার খুব পুতুলের শখ ছিলো। আমি জানতাম অবশ্য সেই সখটি । একদিন কথা প্রসঙ্গে কি নিয়ে যেন পুতুলের প্রসঙ্গ উঠলো এবং যথারীতি আবদার, তার আসছে জন্মদিনে তাকে পুতুল দিতে হবে। আমি একটু ঘুরিয়ে বললাম বিয়ে হোক তাহলে তোমাকে একটি জলজ্যন্ত পুতুল দেওয়া হবে। চেয়ে দেখলাম তার চেহারা লজ্জায় রক্তবর্ণ হয়ে গেল, আর কিছু বলল না।আমিও ভুলে গেলাম।

দিনের রুটিন আজও একই আছে। তার সঙ্গ ছাড়া নিজেকে অপূর্ণ মনে হয়। ভালবাসার মানুষ পাশে না থাকলে মনে হয় এমনই মনে হয়। আমাদের লাইব্রেরী একটি অংশ ছিলো অনেকটা গুদাম ঘরের মতো যে জায়গায় ইস্যু করার বইগুলি থাকতো। ঐ জায়গাটি ছিল আমাদের খুব প্রিয় চারিদিকে রাশি রাশি বই, পুরানো গন্ধ মাখা । নির্জন এই জায়গাটা আমরা খুব পছন্দ করতাম। চাইলেই তার স্পর্শ পাওয়া যেত, বইগুলি দেখতে দেখতে নিজেদের মধ্যে টুক টুক কথা বলা হত । সেই অনুভুতি গুলি আজও স্পষ্ট মনে আছে। সচরাচর কাউকে লাইব্রেরীর লোকজন যেতে দিতো না। আমরা কেমন করে জানি অহরহই ঐখানে যেতে পারতাম। আর একটা জায়গা ছিল লাইব্রেরীর অডিও ভিজ্যুয়েল রুম। ঐ খানে কাজ করতো আমার সম্পর্কের মামা। সব ধরনের অডিও ভিজ্যুয়েল সরঞ্জামাদি ছিল । আমার আর তার হিন্দি ছবি দেখার জন্য এক সুন্দর জায়গা ছিল ঐটা । আমরা বাইরের ভিডিও লাইব্রেরী থেকে হিন্দি ক্যাসেট এনে ঐ জায়গায় দেখতাম। অবশ্য খুব একটা বেশী দেখা হয় নাই। দুজনের টুক টুক আলাপ করাই আমাদের বেশী ভাল লাগতো।

আমাদের টিএসসি টা তখন ও কমপ্লিট হয় নি । টিএসসি এর পিছনে বসে বসে বিকালে চা খাওয়াটা ছিল প্রতিদিনকার কাজ।

ধীরে ধীরে সবাই এখন আমাদের জুটি হিসেবেই চিনে। সবার তীর্যক দৃষ্টি এখন কিছুটা নমনীয়। সবার চোখে দেখতেপাই কিছুটা প্রশ্রয়। আর সেই সুবাদে আমরাও হই ভালবাসায় পরিপূর্ণ এক সার্থক জুটি। দিন যায়...

দুজনে মধ্যে ভালবাসার কমতি নেই। সমঝোতা তা ১০০% । একজন আরেকজনকে বুঝতে পারি । তার চোখের দিকে তাকালেই তার মনের ভিতর পর্যন্ত দেখতে পাই ।

একদিন বিকেল বেলায় তার হলে তাকে ডাকতে গিয়ে দেখি সে হলে নেই । বান্ধবীদের জিজ্ঞাসায় জানতে পারি তার বোন এসেছিল এবং তাকে সহ তারা মধুপুর গেছে। আমাকে না জানিয়ে সে চলে গেল এই ভেবে বড় কষ্ট পাই । তখন তো আর মোবাইল এর যুগ ছিল না যে যখন তখন খবর জানতে পারবো। হতাশ হই । হলে ফিরে যাই।

-কৃষক

এই পর্বে কিষাণীর বক্তব্য:

পুতুল বিয়ের কথাটা ভুলে গেছিলাম এখন মনে পড়লো।

একটি পুতুল পছন্দ করে রেখেছিলাম, তাকে দেখিয়ে বলেছিলাম সেটা আমার চাই, পুতুলটির অনেক দাম ছিল। ও আমাকে পুতুলটা কিনে দেয়নি, সেটার কষ্ট কিন্তু আজো আমার রয়ে গেছে।

লাইব্রেরীর লেন্ডিং সেকশনে ঢুকার সময় ও খুব সিরিয়ার মুখ করে বই খুঁজতে ঢুকতো, একটু পর যেতাম আমি। কিসের বই খোঁজা, আমাদের অন্য ধান্দা ছিল:)

মধুপুর চলে যাওয়াতে সে যে কষ্ট পেয়েছিল এটা আমাকে আগে বলে নাই। এখন জানলাম:)। তবে মধুপুর এর ভ্রমনটা অনেক দারুন হয়েছিল, ওখানে বনে আমরা দু'দিন ছিলাম, রাতটি ছিল ভরা পূর্ণিমা এবং প্রতিটি পর্যায়ে তাকে আমি মিস করেছিলাম।
-কিষাণী
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:২৬
২৯টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×