দেশের বিভিন্ন স্হানে নির্মাণাধীন স্থাপনাগুলোর (ফ্লাইওভার, উড়াল সেতু, বিআরটি ইত্যাদি) অব্যবস্থাপনার কারণে যত্রতত্র দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। সেখানে জবাবদিহির বালাই নেই। একে অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে দেয়ার একটি অপচেষ্টা লক্ষ্য করা যায় সবসময়ই। সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ কিংবা পুনরায় এ ধরনের দুর্ঘটনা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে কারোর কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। একে অন্যকে দোষারোপ করার ক্ষেত্রে আমাদের জুড়িমেলা ভার। কিন্তু সম্মিলিতভাবে কার্যাদেশ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যে বা যারাই সংশ্লিষ্ট তাদের প্রত্যেকের দায় রয়েছে দুর্ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে। আরও একটি বিষয় হচ্ছে, এ ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া সাধারণ মানুষ সহজে ক্ষতিপূরণ পায় না। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে ভিক্টিমের স্বার্থে দেশব্যাপী সহমর্মিতা, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটলেও দু’তিনদিন পরেই সব কেমন ঠান্ডা হয়ে যায় অর্থাৎ স্থবির হয়ে পড়ে। সে কারণেই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে দায়ী পক্ষদের বাধ্য করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। দোষীরাও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
সম্প্রতি উত্তরার জসীমউদ্দিন এলাকার প্যারাডাইস টাওয়ারের কাছে বিআরটি প্রকল্পের গার্ডার ভেঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে যায় একটি গাড়ি। গার্ডারটি ক্রেন দিয়ে ওঠানোর চেষ্টার সময় প্রাইভেট গাড়িটির ওপর সেটি পড়ে যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির ভেতর থাকা শিশুসহ পাঁচযাত্রীর মৃত্যু হয়। চট্টগ্রামে ফ্লাইওভার ধসে মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও আমাদের অজানা নয়। এদিকে চকবাজারে পলিথিন কারখানায় অগ্নিকা-ের ঘটনায় ৬ শ্রমিক মারা যায়। এ ধরনের অসংখ্য মৃত্যুর ঘটনা পত্রিকার পাতায় নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। আবার অনেক ঘটনা ঘটনার আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। যেগুলো সামনে আসছে, সেগুলোর সুষ্ঠু বিচার ও ভুক্তভোগীদের সুবিধা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গাফিলতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। যেগুলো অপ্রকাশিত ঘটনা, লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে যাচ্ছে সেসবের হিসাব কষতে গেলে হতাহতের সংখ্যা এবং এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের দীর্ঘ লাইন হয়ে যাবে।
নগর পুড়লে দেবলায় রক্ষা পায় না, এ প্রবাদ এবার সত্যি হতে চলেছে রাজধানী ঢাকার ক্ষেত্রে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সরকার বা প্রশাসন দেবালয় পোড়ার অপেক্ষায় রয়েছে। এর আগে কারও ঘুম ভাঙবে বলে কোনো লক্ষণ চোখে পড়ছে না বলেই মনে করছেন অনেকে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:০৩