'' যখন সময় থমকে দাঁড়ায়,নিরাশার পাখি দু’হাত বাড়ায় '' এটা সংগীত শিল্পী নচিকেতার একটি গানের চরণ ! আচ্ছা সত্যিই কি বাস্তবে সময় থমকে যায় ! সময়কে একসময় পরম হিসেবে ধরা হত যার মানে এই মহাজগতের সব জায়গায় সময় এক এবং অভিন্ন। আইনস্টাইন স্পেশিয়াল থিওরি অব রিলেটিভিটিতে স্থান-কাল নিয়ে তার বিখ্যাত সূত্র দিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে সময় এই বিশ্ব-ব্রক্ষান্ডের সব জায়গায়ই একই নহে।
আইনস্টাইনের এই তত্ত্বটি অনেকগুলো হাইপোথেসিসের জন্ম দেয়! যেমন আমাদের এই গ্রহে সময় অনেকটা লিনিয়ারলি বিহ্যাব করছে, মানে একমুখী বয়ে চলছে! আইনস্টাইনের তত্ত্ব অনুসারে আমাদের এই মহাজগতে এমনো গ্রহ থাকতে পারে যেখানে হয়ত সময় নন-লিনিয়ার বিহ্যাব করে, সেখানে হয়ত গেলে আপনি ইচ্ছে করলেই অতীত বা ভবিষ্যতে অনায়াসেই যেতে পারবেন, আবার এমনো হতে পারে সময় সেখানে উল্টো দিকে বয়ে চলছে ! কেমন হবে একবার ভাবুনতো আপনার বয়স না বেড়ে উল্টো কমছে!
এর আগে আমি আপেক্ষিক তত্ত্ব নিয়ে এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম।কেউ চাইলে আমার আগের এই পোষ্টটি দেখতে পারেন।
যাইহোক , এখানে পুনরায় আপেক্ষিক তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করার কোন খায়েস আমার নাই। এই পোষ্টে মূলত কিভাবে সময়কে নিয়ন্ত্রণ করা যায় সেই ব্যাপারে কয়েকটি তরিকার নিয়ে আলোচনা করব , মানে ঘরে বসেই আপনি বানিয়ে ফেলতে পারেন আস্ত একটা টাইম মেশিন এবং ব্লাক হোল যা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন নিজের তকদীর!! এইটুকু পড়েই যারা আঁতকে উঠেছেন তাদের বলব একটু অপেক্ষা করুন আমি মসকারা করছি না। এই পোষ্টে মাধ্যম্যে ব্লগারদের বিজ্ঞানী বানানোই আমার একমাত্র লক্ষ্য !!
তার আগে একটা ব্যাপারে আলোচনা করতে চাই এখানে।হাল্কা বস্তুর তুলনায় ভারি বস্তুর বেলায় সময় কিছুটা ধীরে চলে ! অর্থাৎ যেই বস্তুর ভর বেশী তার অভিকর্ষ বল বা গ্রাভিটিও বেশী হবে। এখানে বুঝা গেল গ্রাভিটির সাথে সময়ের একটা সম্পর্ক আছে। আপনি যদি আয়তনে ক্ষুদ্রাকার হস্তির সমান হোন আর একজন যদি চিকুন আলী হয় তাহলে আপনার সময় চিকুন আলীর থেকে ধীরে চলবে!এই সময়ের পার্থক্যটা এক সেকেন্ডের কয়েক হাজার ভাগের এক ভাগ তাই হয়ত এটা চোখে পরবেনা!তবে আপনি যদি উচ্চমাত্রার গ্রাভিটি সম্পূর্ণ কোন বস্তু তৈরি করতে পারেন তাহলে আপনি নিজেও সময় পরিভ্রমণ করতে পারবেন।
আমরা জানি উচ্চমাত্রার গ্রাভিটি সম্পূর্ণ বস্তু হল ব্ল্যাক-হোল যার ভিতর আলো প্রবেশ করলেও বেরিয়ে আসতে পারে না! সাধারণত নক্ষত্রের হাইড্রোজেন গ্যাস পুরে হিলিয়ামে পরিণত হয় তখন এক ধরনের শূন্যতার সৃষ্টি হয়। এই হিলিয়াম পুরে আবার তৈরি হয় ভারি কণা অক্সিজেন এবং কার্বন। এক সময় মৃত প্রায় এই নক্ষত্র নিজেদের ভিতর প্রচণ্ড চাপে এবং উচ্চ মাত্রার গ্রাভিটির ফলে নিজেরা নিজেদের ভিতর সমাহিত হতে হতে অসীম ঘনত্বের বস্তুতে পরিণত হয় যা ব্ল্যাক-হোল সৃষ্টি হয়। আপনি যদি কোন স্পেইসশীপে করে এই ব্ল্যাক-হোল পরিভ্রমণ করতে থাকেন এবং পৃথিবী থেকে কেউ যদি আপনাকে অবলোকন করে তবে তারা দেখবেন আপনি অনেক ধীরে প্রদক্ষিণ করছেন আবার আপনি যখন ব্ল্যাক হোলের থেকে পৃথিবীকে দেখবেন তখন দেখবেন সব কিছু কেমন দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। তার মানে আপনি সপ্তাহ খানেক ব্ল্যাক-হোল প্রদক্ষিণ করে যদি পৃথিবীতে ফিরে আসেন তখন হয়ত দেখবেন পৃথিবীতে কয়েকশত বছর পেরিয়ে গেছে!
আপনি যদি আর্টিফিশিয়াল বা কৃত্রিম ব্ল্যাক-হোল তৈরি করতে পারেন তাহলে আপনি নিজেও সময় পরিভ্রমণ করতে পারবেন!! এখানে আমি কিভাবে আর্টিফিশিয়াল ব্ল্যাক-হোল তৈরি করা যায় তার কয়েক তরিকা নিয়ে আলোচনা করব। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম ব্ল্যাক-হোল বানাতে এখনও সমর্থ হয় নাই । সাবধানে ঘরে বসে ব্ল্যাক-হোল বানাবেন কারণ ব্ল্যাক-হোলের প্রচণ্ড গ্রাভিটির ফলে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে, নিজ দায়িত্বে তৈরি করে ফেলুন ,কোন সমস্যা হলে পরে আমাকে কোন দোষ দিতে পারবেন না!!
ব্ল্যাক-হোল তৈরির জন্য এমন কোন এক বস্তু নির্বাচন করুন যার প্রচণ্ড রকমের ভর রয়েছে। আপনার উদ্দেশ্য হবে এই বস্তুটিকে ছোট করা তবে লক্ষ্য রাখতে হবে এর ভর যেন একই থাকে। বড় একটা বস্তুকে এমনভাবে ছোট করবেন যাতে অসীম ঘনত্বের বস্তুতে পরিবর্তিত হয়ে যায় যে কিনা আলোকে পর্যন্ত ভক্ষণ করতে সক্ষম।উদাহারনসরূপ বলা যায় আমাদের এই পৃথিবীকে যদি আপনি ব্ল্যাক-হোলে পরিবর্তন করতে চান তাহলে এর ভর পরিবর্তন না করে এমন ভাবে ছোট করুন যাতে ছোটখাটো একটা ফুটবল আকৃতিতে পরিবর্তিত হয়ে যায়।
আরেকটা তরিকা আছে সময়কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য।আইনস্টাইনের সূত্রমতে কেউ যদি আলোর গতির প্রায় সমান গতিতে যেতে পারে তাহলে সে ভবিষ্যতে যেতে পারবে আর যদি আলোর গতির বেশীর গতিতে যেতে পারে তাহলে সে অতীতে যেতে পারবে। তাহলে শুভ কর্মে আর দেরি কেন তৈরি করে ফেলুন এমন যান যা কিনা আলোর গতির কাছাকাছি বা বেশী গতিতে যেতে পারে।
টাইম মেশিন বানানো হয়ে গেলে আমাকে জানিয়েন !!
(চলতেও পারে নাও পারে !)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৩