somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোটবেলায় একটা কেক খাইসিলাম, বাজি লাগাইলাম এরম কেক জীবনে কেউ খায় নাই

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৯০ কি ৯১ সালের দিকের কথা,বয়স তখন কত হইব কইতে গেলে কওন যায় যেই বয়সে নিজে নিজে কমোডে গিয়া বসতে পারি কিন্তু উইঠা আইতে পারিনা, সেই বয়সের কথা কইতাছি। একদিন দুপুরে ঘুম থেইকা উইঠা দেখি বাসায় আম্মা নাই(আমার ভাই বোনরে স্কুল থেইকা আনতে গেসিলো), আমার পাশে আব্বা ঘুমায় ছিলো। আব্বা অফিসের কাজে সিলেট গেসিলো, তিনদিন পরে ঢাকায় আসছে। ভোরবেলা বাসায় আইসা ঘুমাইছে....হঠাৎ ফিল করলাম আমার লাগছে খিদা, তখন দুইটাকা দামের স্লাইস করা কেক পাওয়া যাইতো সব দোকানে..অই জিনিস প্রত্যেক দিন সকাল বেলা আমার একটা লাগতই....ঘুম থেকা উইঠা আম্মারে না পাইয়া মিজাজ গেলো বিলা হইয়া..পুরা বাসা তিনটা চক্কর দিলাম না আছে আম্মা না আছে আমার কেক....আম্মা নাই তাতে কি আমার কেক খাওয়া বন্ধ থাকবো? বেসম্ভব একটা বেপার..ঠিক করলাম নিজ উদ্দ্যোগে আজকে কেক খাওয়া হবে..পোলাপাইন ঐতে পারি কিন্তু কোন জায়গায় টাকা পয়সা থাকে অইটা ভালো মতনই জানা আছে...একটা টুল যোগাড় করলাম....তারপর হ্যাঙ্গারে টানানো আব্বার কোটের পকেট থেকা টাকর বান্ডিল বাইর করলাম..তখন আমি টাকা চিনতাম কিন্তু কোনটা কত টাকার নোট অইটা বুঝতাম না, মানে যাহা দুই টাকা তাহাই পাচশত টাকা....আমার প্যান্ট বা গেঞ্জিতে কোনো পকেট আছিলো না তাই কোচরে কইরা টাকার বান্ডিল নিয়া শাহেনশার মতন বাসার সন্নিকটের একটা কনফেকশনারীর ক্যাশ টেবিলে ছুইড়্যা মাইরা কইলাম এ আঙ্কেল চালু কইরা একটা কেক দ্যান.....আঙ্কেল দেখি হা কইরা একবার আমার দিকে দেখে একবার টাকার দিকে তাকায় আরেকবার চারদিকে দেখে আর কাহিনিটা বুঝার চেষ্টা করতেছে...আরেকবার কইলাম অই আঙ্কেল কেক দিবি কিনা বল(ভালবাসা দিবি কিনা বল এর থেকে অনুপ্রানিত)....দোকানদার বেডায় দুইটা ঢোক গিল্লা তাড়াতাড়ি টাকাগুলি ক্যাশে চালান কইর‌্যা দিয়া হাতে একটা কেক ধরাইয়া দিলো........বাসায় আইস্যা দেখি আম্মা এখনও আসে নাই......বীরদর্পে কেকে কামড়ের পর কামড় বসাইয়া গেলাম..কেক খাওয়া শেষ হইলে আবার আব্বার পাশে গিয়া আব্বার কোমড় জড়াইয়া দিলাম ঘুম



ধুৎ চিল্লাচিল্লির চোটে ঘুমানোই গেলো না.....ঘুম থেইক্যা উইঠা দেখি আলমারী খোলা আলমারীর কাপড় চোপর সব ফ্লোরে পইরা রইসে...বিছানার তোষক জাজিম সব উল্টাইন্যা পাল্টাইন্যা....আব্বার মন খারাপ... আম্মার মুখ ভার..চারিদিকে কেমন জানি একটা হাহাকার...আমার আর কি, এত কিছু কি আর তখন বুঝি? আম্মারে গিয়া কই আম্মা তুমি কই গেসিলা... আজকে কেক কিনা রাখো নাই কেন......আজকে আমি নিজে গিয়া কেক কিন্না খাইছি হুমমমম....আমার কথা শুইন্যা আম্মার দুনিয়া থাইম্যা গেলো...আমার দিকে হা কইরা তাকাইয়া কইলো তুই টাকা পাইলি কই...আমি তেরা একটা হাসি দিয়া কইলাম কেন টুল দিয়া আব্বার কোটের পকেট থেকা পাড়ছি.......আম্মা দৌড়াইয়া আইস্যা বলে তুই টেকা কি করছস যদি কস তাইলে তোরে সাইকেল কিন্না দিমু.....আমি তো খুশ...একে তো ঘন্টা দুয়েক আগে পেটে কেক এক্সপোর্ট করছি আর এখন আবার সাইকেল!!!বাহ বাহ!!
আম্মারে পুরা কাহিনির লাইভ টিউটোরিয়াল দেখাইলাম......সবাই গিয়া দোকানদাররে ধরল..শালায় তো নগদ পোলটি.....জীবনে প্রথম আয়না পড়া কেমনে দেয় দেখলাম। আয়নাতে নাকি অই বেডারে দেখা গেসিলো(সবাই তাই কইসিলো)যাই হোক নাই হোক আমি অই বেডারেই টাকা দিসিলাম এইডা পুরাই শিউর...বেডারে মসজিদে নিয়া গেলো এলাকার সবাই....শালায় তখনও পোলটি খাইলো....যাই হোক টাকাটা আর উদ্ধার করা যায় নাই.....ফাকে দিয়া এলাকায় আমি ফেমাস খাইয়া গেলাম.....সবাই একনামে চিনতো... পুরা কেরিকেচারির জন্য আমারে কেউ একটা ফুলের টোক্কাও দেয় না...আব্বা যখনই জানতে পাড়ছে ঘটনার মুল নায়ক আমি তখনই ঘোষনা কইরা দিসে যে আমার ছেলের গায়ে কেউ যেন টাচ না করে.....

সারাদিনের ধকলের পরে রাইতএর বেলায় আমি আস্তে আস্তে গিয়া আম্মারে আল্হাদ মেশানো গলায় গিয়া জিগাই যে আম্মা তুমিনা কইসিলা আমারে সাইকেল কিন্না দিবা অইটা কবে কিন্না দিবা এর পরের ঘটনা কি হইতে পারে বুইঝা লন


........আব্বা আমি জানিনা আমি তোমার মতন হইতে পারুম কিনা, তুমি যখন আমার উপরে নির্ভর হইয়া পরবা তখন আমি হয়ত তোমারে দিয়া বাজার করতে পাঠামু আর তুমি ভুলে ১০০০ টাকা দিয়া একটা পচা মাছ কিন্না নিয়া আইসা পড়বা..আমি হয়ত সেই ১০০০ টাকার জন্য তোমার সাথে চিল্লাচিল্লি করতে ছারুম না, আমি ভুইলা যামু যে এই আমি তোমার একমাশের পুরা বেতন ১০০০০টাকা দিয়া একবেলায় দুই টাকা দামের কেক খাইয়া উরাইয়া দিসিলাম, তুমি একটা টু শব্দ ও কর নাই.....

সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১২ সকাল ১১:৫৫
৪১টি মন্তব্য ৪১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×