দূর পাহাড়ের আমন্ত্রণে !!! বান্দরবান, কেওক্রাডং, জাদিপাই ঝর্ণা । পর্ব- ৩
ঝর্ণায় যাবার পথটা এত্ত বেশি খাড়া নিচুতে চলে গেছে যে সবাই রীতিমত ভয় পেয়ে যাচ্ছিল । একটু সহজ করেই বলি এটা প্রায় ৬০ ডিগ্রী এঙ্গেলে খাড়া নিচের দিকে চলে গেছে । প্রায় ঘণ্টা দেরেক নিচুতে নামতে নামতে অবশেষে ঝর্ণা । আমি পাগলের মত জুতো, ঘড়ি, মোবাইল ফোন, ছুড়তে ছুড়তে সবার আগে পা ডুবিয়ে পাথরের উপর বসে পড়লাম । কেন উন্মাদ হলাম না আমি !!!!! ঝর্ণার নিচের দিকে রংধনু, এত্ত রঙ, এত সৌন্দর্য কেন এতদিন আমাকে গ্রাস করেনি । উপরের দিকে তাকিয়ে ঝর্ণার শুরুটা খুঁজতে চাইলাম কিন্তু সেটা আদৌ সম্ভব নয় জেনেই কাজটা করছিলাম । দেখে মনে হচ্ছে চিকন শ্যামলা শরীরটা কেউ স্বচ্ছ সাদা শাড়ি দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করছে, এটা সেই সুন্দরী ঝর্ণা । এমন চিকন খাড়া রাস্তা দিয়ে ঘণ্টা দেড়েক গড়াতে গড়াতে আর হাঁটতে হাঁটতে শেষমেশ পৌঁছে যাবার পরে সব কথা ভুলেই গিয়েছিলাম প্রায় । এটাও ভুলে গিয়েছিলাম যে কিছুক্ষনের মাথায় আবার ফেরার পথে হাঁটতে হবে ! ঝর্ণার পানি এত বেশি বিশুদ্ধ যে সাবান শ্যাম্পু কিছুর প্রয়োজন ই পড়ছিল না । একটুও বাড়িয়ে বলছিনা, এটা সত্যিই !
এবার ফেরার পালা । নামতে একটুও কষ্ট হয়নি আমার কিন্তু কতটা নিচে নেমেছি এটা টের পেলাম ওঠার সময় । আমার দলের সবাই আমাকে নিয়েই বেশি চিন্তিত ছিল । কিন্তু তাদের দুর্ভাগ্যের বিষয় যে প্রায় পুরো ভ্রমণটায় আমার মত সুস্থ, স্বাভাবিক আর প্রাণবন্ত আর কেউই ছিলনা । বেলা প্রায় তিনটে, ক্ষুধার তাণ্ডবে সবাই বারবার নেতিয়ে পড়ছিল তবু চারটের ভেতর কেওক্রাডং পৌঁছাতে হবেই, নাহলে আজ রাতে এখানেই থাকতে হবে । এটা চিন্তা করে উঠতে শুরু করলাম । লাঞ্চ করে ৫ টায় আবার লেকপাড়ের সেই কটেজে ফেরার তাড়া । ততক্ষণে সূর্যটা আমাদের মতই তাড়াহুড়ো করে ঘরে ফিরবার আয়োজনে মত্ত । কমলা রঙের থালার মত রঙ ধরেছে ওটা । আমরা কেবলই হাঁটছি, এবার আর কোন রেস্ট নয় । এমন সূর্যাস্ত দেখার সৌভাগ্য জীবনে হবে কিনা জানিনা তবে এতগুলো রঙ দিয়ে সূর্যাস্ত হতে আমি কখনো দেখিনি । প্রথমবারের মত জীবনে এতকিছু করলাম যে বারবার ভেবে দেখতে ইচ্ছে করছিল আরও কতকিছু দেখার বাকি আছে প্রথমবারের মত । আসার সময় পথ যতই সংক্ষিপ্ত মনে হোক না কেন পথ ফুরনোর নাম ছিলনা । এর মধ্যে একজন তো কিছুক্ষন পর পর আছাড় খেয়ে আতঙ্কিত করে তুলছিল আমাদের, আরেকজনের সুগার ফল করল । তবে বাঁচলাম, জোছনার বদৌলতে । বেচারা সেদিন দিগন্ত জোড়া ধুয়ে মুছে দিচ্ছিল আলো দিয়ে । মশাল জ্বালালেও কিছুক্ষন পর পর নিভে যাওয়াতে মূমূর্ষ মোবাইল ফোনের বেঁচে থাকা চার্জে টর্চ জ্বালিয়ে তবে বাঁচোয়া । আগেই শুনেছিলাম সন্ধ্যেরাতে নাকি মাঝেমাঝেই স্থানীয়দের উৎপাতে বড়সড় ঝামেলায় পড়তে হয় । গাইডের তখন নিশ্বাস ফেলার ফুরসত মিলছিল না, একের পর এক সবাইকে হাত ধরে ধরে সংকীর্ণ রাস্তাগুলো পার করে দিচ্ছিল বেচারা । আমি তখন পুরদস্তুর একশনে একজনকে তো বলেই ফেললাম, ভাই- আমার কিন্তু সেই এডভেঞ্চার ফিল হচ্ছে । কেন যে প্রতিমাসে একবার করে এমন কিছু হয়ে ওঠেনা । বেচারা তখন আমার মুখের উপর কিছু না বললেও বুঝতে পারছিলাম আমাকে খাদ থেকে ফেলে দিতে যতটুকু রাগ একজন মানুষের লাগে তার একটুও কমতি নেই । ওই একটিবার আমাকে সবাই মেয়ে হিসেবে ট্রিট করল, সামনে পেছনে ৩ জন করে করে ভিআইপি প্রটোকল ! আমি আর কথা বাড়ালাম না । লাউয়াছড়া, সুন্দরীছড়া আর চিংড়ি ঝর্না পার করেই গাইড পরবর্তী পথকে বিপদমুক্ত ঘোষণা করলেন । এরপর প্রায় ঘণ্টা খানেক বাদে আমরা লেকপাড়ায় পৌঁছে গেলাম । একটা বড় দল তখন আগুন জ্বালিয়ে চারপাশে গোল হয়ে বসে গান করছিল । আহ !!!!! কি একটা দৃশ্য, কি একটা সময়, কি একটা জায়গা !!!! যার প্রত্যেকটা পরতে পরতে, মুহূর্তে, মুহূর্তে ভাললাগাগুলো ঠাসাঠাসি করে জাপটে আছে ।
পরেরদিন ছিল আমাদের ফিরে আসা, রুমা বাজার হয়ে বান্দরবান । সেদিন ছিল রুমা বাজারে হাটবারের দিন । বাঁশের, বেতের ঝুড়িতে করে সবাই যার যার পণ্য নিয়ে পশরা সাজিয়ে বসেছে । আর ছিল এক সমুদ্র শুঁটকি !!!!! মানুষগুলো দেখে, তাদের জীবনধারা দেখে অনুভব করছিলাম এটাকেই মিশে যাওয়া বলে, প্রকৃতির সঙ্গে । আমাদের আগের সভ্যতা গুলো সহস্র বছর আগে হয়ত এমন করেই মিশে মিশে ছিল আর আমরা যেভাবে মিশে মিশে আছি কংক্রিটের সঙ্গে !
***********************************
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মপোলব্ধি......
আত্মপোলব্ধি......
একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন
জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !
হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।
আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।
আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন