পড়ছিলাম শেরে বাংলার কীর্তি। এক নিমিষেই সকাল থেকে দুইবার টানা পড়ে শেষ করলাম। ভবেশ রায়-এর লেখা। দাঁড়ান, উনার সুকীর্তির একটু লিস্ট তৈরী করি,
১। বৃটিশ আমলে বঙ্গদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে স্থাপন করেছেন ঋণ সালিশী বোর্ড,
২। পাস করেছেন প্রজাস্বত্ব আইন,
৩।পাস করেছেন মহাজনি আইন,
৪। প্রথমবারের মতো করেছেন পঞ্চম শ্রেণী জন্য অবৈতনিক শিক্ষা কার্যক্রম,
৫। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতাদের একজন
৬। প্রথমবারের মতো স্কুলগুলোতে মৌলবী নিয়োগ দিয়েছেন মুসলিম ছাত্রদের জন্য, তার আগে তাদেরকে সংস্কৃতিই পড়তে হতো শিক্ষকের অভাবে
৭।জমিদারী প্রথা উচ্ছেদের জন্য ভীষণভাবে তোড়জোড় করাতে মুসলিম লীগের সাথে দূরত্ব শুরু হলো, একসময়ে সেটা দলত্যাগ পর্যন্ত গিয়ে গড়ায়, কারণ মুসলিম লীগ ছিল জমিদারদের দল
৮। করলেন ইসলামিয়া কলেজ, প্রথম মহিলা লেডি ব্রাবোন কলেজ, হরগঙ্গা কলেজ, রোকেয়া মেমোরিয়াল স্কুলকে নতুন করে গড়লেন
৯। করলেন ফজলুল হক হল, শেরে বাংলা কৃষি ইন্সটিটিউট
১০। গড়লেন বাংলা একাডেমী
১১। ২১শে ফেব্রুয়ারীকে শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা এবং সেদিন সরকারী ছুটির দাবী নিয়ে (একুশ দফা) গড়লেন যুক্তফ্রন্ট,
১২। বাংগালীর প্রাণের দিন পহেলা বৈশাখকে করলেন ছুটির দিন
উনার দলই ছিল কৃষক-প্রজা দল, পরবর্তীতে কৃষক-শ্রমিক দল, এককালে মুসলিম লীগ ও কংগ্রেসের সাথে থাকলেও ধীরে ধীরে ঐ দুটি দল তিনি ছেড়েছেন।
এতো এতো কৃষক,প্রজা, শ্রমিক দরদী (দক্ষ অর্থনীতি ম্যানেজমেন্ট)এবং শিক্ষানুরাগী, নারী ও শিশু শিক্ষার প্রতি যত্নবান, মুসলিম অধিকার সচেতন (পাকিস্তান) এবং সর্বোপরি বাঙ্গালী চেতনাধারী (সুযোগ থাকা স্বত্তেও, নিখিল ভারত মুসলীগ লীগের সভাপতি আসনে থেকেও সর্বভারতীয় নেতা না হয়ে বঙ্গদেশেই কেবল রাজনীতি করলেন) -- এরকম একজন খাঁটি বাঙ্গালী নেতা থাকতে কেন বামদলদের মার্ক্স-লেনিনবাদের প্রয়োজন হয়? কেন শেরে বাংলা কেবল ইতিহাসের পাতাতেই সোনার অক্ষরে থাকেন? যেখানে আরজ আলী মাতুব্বর বাম জ্ঞানীদের ঘরে ঘরে, আড্ডায় পাঠ্য হয়, সেখানে শেরে বাংলা কেন চর্চিত হয় না? কেন তাকে নিয়ে মাতামাতি হয় না? আমরা কেন কেবল ৭১ এ আটকে গেছি? মুজিব-জিয়া ছাড়া আর কিছুই যেন নেই আমাদের!