আগের কাহিনীর পর.........।
কিছুদিন পর আমি দালাল মামাগোরে কল দিয়া জিগাইলাম যে মামারা কি খবর? দালাল মামারা আমারে কয় যে কাগজপত্রগুলা দিয়া আসার পনের দিন পর ওরা নাকি আমার চিঠি সরাসরি আম্রিকা পাঠাই দিছে। আমার কিন্তু আর বিশ্বাস হয় না যে ব্যাটারা কাগজপত্র আসলেই পাঠাইছে কিনা। এর মধ্যে একদিন আমি আবার ওই মেইল আইডিতে মেইল পাঠাইলাম কি খবর জানার জন্য। আমি একচুয়ালি সিউর ছিলাম না যে কি জানমু। আবার সেইম ইস্টাইলে কয় কেইস নম্বর সহ মেইল কর নাইলে কিচ্ছু করতে পারতাম না! সো কেইস নম্বর সুদ্ধ মেইল পাঠাইলে তারপর ওইখান থেইকা রিপ্লাই পাইলাম যে তাঁরা নাকি আমার চিঠি পাইছে “উই হ্যাভ রিসিভড ইয়োর প্যাকেট এন্ড ইট ইজ ওয়েইটিং টু বি প্রসেসসড”! এরপর প্রায় একমাস পরে সিমিলার মেইলের রিপ্লাইয়ে বলে যে , “ইট ঈজ বিয়িং প্রসেসসড”।
এই কয়েকমাস সময় লাইফটা বেশ অনিশ্চিত হইয়া গেছিল। সো সামহাউ, আমি ব্যাপারটারে গুপন রাকতে পারি নাই। ফ্লাশ হইয়া গেছিল। কাহিনীটা নিজেই ফাঁস কইরা দিছিলাম। আমার ক্লাসমেট থেইকা শুরু কইরা সিনিয়র রুমমেট ভাইয়েরা সবাই আমারে ম্যারিকা বিপ্লব বইলা খেপাইতেছিল। কেউ ধারনা করে নাই যে আমি সত্য সত্যই আম্রিকা চইলা আসব। কাউরে কিছু কইতেও পারতেছিলাম, কারন ভিসা হওয়ার আগে পর্যন্ত আমি সিউর ছিলাম না যে আসলে আমার আম্রিকা যাওয়া হবে কি না! পড়াশুনাও লাটে উঠছিল আমার! শালার পরীক্ষা গুলায় আবার ভাইভাও ছিল! রিটেন এক্সামগুলা যেমন তেমন কইরা পার হওয়া গেলেও ভাইভাতে স্যারগুলা ঠিকই ক্যাঁক কইরা ধইরা ফালাইত। আর মরার উপর খাড়ার ঘা হিসাবে আমার দুইজন ভাইভামেটের একজন ছিল এক্স-ভিকি (ভিকারুন্নেসা)। এই সুন্দরি প্রশ্নের সিরিয়ালে পড়ত তিনজনের মধ্যে সবার শেষে। এই মাইয়া খুব চুপচাপ স্বভাবের ছিল। কিন্তু বিপদের কথা হইল, হ্যারে ভাইভাতে স্যারেরা যা জিগাইত, সবকিছুরই উত্তর পটাপট বইলা দিত। আমি আর ২য় জন যেইগুলা পারতাম না হ্যায় সেইগুলা যেন বেশি পারত। ফলাফলঃ আমি সাকা চৌধুরীর মত োদনা হইয়া যাইতাম। (বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারছি ইদানীং তাঁরে নাকি আড়ালে আবডালে সাবানা নামে ডাকা হইতেছে আর জসীমও হইল আমাদের ব্যাচেরই আরেকজন)। এই সুন্দরি আমার লাইফটা এক বছরের জন্য কঠিন কইরা দিছিল।
ক্যাম্পাসগুলার একা অলিখিত নিয়ম হইল, নতুন ভর্তি হওয়া সুন্দরিগুলার উপর সিনিয়র ভাইগুলা বাজপাখির মত চাইয়া থাকে। সেরকমই ফোরথ ব্যাচের এক বড় ভাই আমাদের সাথের এক লাল বোরকাওয়ালির পিরিতে হাবুডুবু খাইতেছিল। সামহাউ এই লোকেরে কেউ বলছে যে আমি নাকি অরে শাদি কইরা লগে কইরা আম্রিকা লইয়া চইলা আসমু। এই লোকের তো পুরাই ঘুম ছুইট্টা গেছিল। এই ভদ্রলোক আমারে রীতিমত পাহারা করতেছিল। চক্ষে চক্ষে রাখত। মাগার কিচ্ছু ডাইরেক্টলি কইতেও পারত না। তিন ব্যাচ সিনিয়র বইলা কথা! তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আমার অনুপস্থিতি সত্ত্বেও উনার সকল চেষ্টা ব্যারথতায় পর্যবসিত হইছে। আর এই সুন্দরি ডিভিএম কমপ্লিট কইরা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এম এস করা অবস্থায় এক ছাওয়ালের সাথে হলে পিরিতে মত্ত! সেই ভাইয়ের জইন্ন আপচুচ!!
এরকম অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রায় ছয় মাস কাটানোর পর একটা মেইলের রিপ্লাই পাইলাম যে আমার এপয়েন্মেন্টের পেপার নাকি মেইলে পাঠাই দিছে। এবং সাপ্লিমেন্ট হিসেবে আমারে চিঠির কপিটা ই-মেইলে এটাচ কইরা পাঠাই দিছে। মজার ব্যাপার হইল দালাল মামাগোর সাথে তখন আমার মিনিমাল কন্ট্যাক্ট ছিল। এইটা পাওয়ার পর অগোরে তাড়া দিলাম। তখন ওরা কয় তাইলে পাসপোর্ট করেন। এপ্লাই করলাম পাসপোর্টের!
কিছুদিন পর থানা থেইকা পুলিশ গেল ভেরিফিকেশ্নের জন্য। আমি লাকিলি তখন গ্রামের বাজারের পাশেই ছিলাম। পুলিশ মামারা আমারে ডাইকা নামধাম জিগাইয়া ছাইড়া দিল আরকি। আর লোকজনরে হয়তো জিগাইছে দুই এক কথা। এলাকায় স্পটলেস রেপুটেশনের অধিকারী হওয়ায় পুলিশ মামারা মনে হয় কোনরূপ টাকা পয়সার ভ্যাজালে না যাইয়া সেইবারের মত চুপচাপ চইলা গেছিল!
(চলতে থাকপে......।)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩১